somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

জুল ভার্ন
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস...খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে...কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়।আমার অদক্ষ কলমে...যদি পারো ভালোবেসো তাকে...ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে,যে অকারণে লিখেছিল মানবশ্রাবণের ধারা....অঝোর

অন্ধ ভিখারি এবং রাজার গল্প....

১৪ ই মে, ২০২৫ রাত ১০:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অন্ধ ভিখারি এবং রাজার গল্প....

এক অন্ধ ভিখারি ভিক্ষা করতে করতে একদিন রাজপ্রাসাদে ঢুকে পড়লো। অন্ধ ভিখারিকে দেখে রাজার মনে দয়া হলো। রাজা মন্ত্রী-কে ডেকে বললেন-
"'এই ভিক্ষুক জন্মান্ধ নন, একে চিকিৎসা করানো হোক।
আমার বিশ্বাস, চিকিৎসা করানো হলে, ওর দৃষ্টিশক্তি ফিরে আসবে। রাজ-বৈদ্য কে ডাকা হোক।"

রাজ-বৈদ্য এসে অন্ধের চোখ পরীক্ষা করে বললেন-
'মহারাজ, আপনার অনুমান সত্যি, চিকিৎসায় ইনি দৃষ্টি শক্তি ফিরে পাবেন। কিন্তু চিকিৎসা সময় সাপেক্ষ আর ব্যায়বহুল।'

রাজা বললেন- "কোনো সমস্যা হবে নাই বৈদ্য-রাজ, আপনি চিকিৎসা শুরু করুন।"

আগামী কাল থেকেই চিকিৎসা শুরু করা
হবে বলে বৈদ্য-রাজ চলে গেলেন।
অন্ধকে রাজপ্রাসাদের পাশেই একটা ছোট্ট কুটিরে থাকার ব্যাবস্থা করে দেওয়া হলো।

রাতের খাবার খেতে খেতে মন্ত্রী বললেন-
"মহারাজ, একটা কথা বলার ছিলো।"
-"নির্ভয়ে বলুন, মন্ত্রীমশাই।"

মন্ত্রী বললেন--
"রাজামশাই, ভিক্ষুকের চেহারাটা যেমন দশাসই তেমনই কথাবার্তাও সাহসী মনে হচ্ছে। যদি দৃষ্টি-শক্তি ফিরে পায়, তাহলে- আপনার দূর্নীতি, স্বজনপোষণ, আপনার আয়েশ-আরাম, এসব দেখে প্রতিবাদ করবে।
অতএব, শুধুশুধু শত্রু বাড়াতে যাবেন কেন?
বরং একে অন্ধ করেই রেখে দিন। দুবেলা দুমুঠো খেতে দিন,
সারাদিন ওকে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে ঘুরে আপনার মহত্ত্ব প্রচার করতে দিন। আপনার গুনগান গাইতে থাকুক।
দেশে যতো অন্ধ আছে, সবাইকে এক জায়গায় করা হোক।
একটা বড়ো হলঘরে সকলের থাকার ব্যাবস্থা করুন।সকালবেলা ভরপেট খেয়ে বেরিয়ে যাবে, সারাদিন আপনার গুনকীর্তন করে সন্ধাবেলা ফিরে এসে ভরপেট খেয়ে
ঘুমিয়ে পড়বে। আবার সকালবেলা......

রাজামশাই মাথা নেড়ে, বললেন-
"আইডিয়াটা মন্দ নয়।"

মন্ত্রী হেসে বললেন-
"মহারাজ, আমি যোগ্য রাজার উপযুক্ত মন্ত্রী, সবই আপনার
করুনা।"

যথারীতি সকল অন্ধ প্রতিদিন এক এক এলাকায় গিয়ে, রাজার মহিমা গরিমা প্রচারের কাজে লেগে গেলো। বিনিময়ে- দুবেলা দুমুঠো অন্ন।

প্রজাদের ক্ষোভ-বিক্ষোভ, মান-অভিমান, জ্বালা-যন্ত্রণা, সবকিছু অন্ধদের গুনকীর্তন -এ চাপা পড়ে গেলো। অন্ধ-গুলো বুঝতেই পারলো না, রাজার ছল-কপট, ধূর্ত রাজারকৌশল। দুবেলা দুমুঠো খেতে পেয়েই তারা সন্তূষ্ট।

অথচ, দৃষ্টি শক্তি ফিরে পেলে তারা নিজের শারীরিক সক্ষমতায় রোজগার করতে পারতো, সুন্দর পৃথিবীর অপরুপ সৌন্দর্য চাক্ষুষ দেখতে পেতো।
কিন্তু , নির্বোধ তারা, সামান্য দান-খয়রাত, ভিক্ষাশ্রী-ভোজনশ্রী নিয়েই মেতে রইলো। আর সমানে চলতে থাকলো- রাজ-বন্দনা, রাজার গুনকীর্তন।

বর্তমানে,
এটাই করে চলেছে সব রাজারা।
ফোকটে কিছু পাইয়ে দিচ্ছে, অথবা ভবিষ্যতে কিছু পাওয়ার লোভ দেখিয়ে চলেছে।
কিন্তু, চোখের জ্যোতি, শিক্ষা এবং আত্মনির্ভর রোজগারের দিশা দেখাচ্ছে না। সবাই সঠিক শিক্ষা পেলে এবং
সবার হাতে কাজ থাকলে, রাজার সমালোচক উত্তরোত্তর
বৃদ্ধি পাবে- সেটা রাজার জন্য বিশেষ সুখকর হবে না।

(একটি অরাজনৈতিক গল্প। গল্পটা শুনেছিলাম এক অন্ধ বাউল শিল্পীর কাছে- যা ৭/৮ বছর আগে ফেসবুকে শেয়ার করেছিলাম)
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই মে, ২০২৫ রাত ১০:২৬
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

এমন রাজনীতি কে কবে দেখেছে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:২০


জেনজিরা আওয়ামী লীগের ১৬ বছরের শাসনামল দেখেছে। মোটামুটি বীতশ্রদ্ধ তারা। হওয়াটাও স্বাভাবিক। এক দল আর কত? টানা ১৬ বছর এক জিনিস দেখতে কার ভালো লাগে? ভালো জিনিসও একসময় বিরক্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযুদ্ধের কবিতাঃ আমি বীরাঙ্গনা বলছি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১৫


এখনো রক্তের দাগ লেগে আছে আমার অত্যাচারিত সারা শরীরে।
এখনো চামড়া পোড়া কটু গন্ধের ক্ষতে মাছিরা বসে মাঝে মাঝে।

এখনো চামড়ার বেল্টের বিভৎস কারুকাজ খচিত দাগ
আমার তীব্র কষ্টের দিনগুলোর কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রবাসীর মৃত্যু ও গ্রাম্য মানুষের বুদ্ধি!

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৩০



একজন গ্রামের মানুষের মাথায় ১০০ জন সায়েন্টিস্ট, ৫০ জন ফিলোসফার, ১০ জন রাজনীতিবিদ এবং ৫ জন ব্লগারের সমপরিমাণ জ্ঞানবুদ্ধি থাকে, তীক্ষ্ণ বুদ্ধিসম্পন্ন এসব লোকজন বাংলাদেশের এক একটি সম্পদ।

বিস্তারিত:... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন নারী শিক্ষিকা কীভাবে কন্যা শিশুর সবচেয়ে অসহায় মুহূর্তের ভিডিও ধারণ করতে পারেন?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:২৩


বাংলাদেশে মাঝে মাঝে এমন সব মানুষ রূপী শয়তানের সন্ধান মেলে যাদের দেখে আসল শয়তানেরও নিজের উপর হতাশ হওয়ার কথা। এমন সব প্রজাতির মানুষ বাংলাদেশে বসবাস করেন যাদের মস্তিষ্ক খুলে দেখার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=মানুষ মানুষকে কীভাবে এত অপদস্ত করে এই ব্লগে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৪

আমি তো কারও সাতেও নাই পাঁচেও নাই। এত সময়ও নাই মানুষকে ঘাঁটার। ব্লগের ব্লগারদের সম্পর্কেও তেমন কিছু জানি না। তবে পোস্ট পড়ে কিছুটা আন্দাজ করা যায় -কে কী রকম। আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×