somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের জনগণ

২২ শে ডিসেম্বর, ২০১১ রাত ৯:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঘন কুয়াশা এবং কনকনে শৈত্যপ্রবাহের প্রাদুর্ভাবে জনজীবন বিপর্যন্ত হয়ে পড়ছে। খেটে খাওয়া লোকগুলো প্রচন্ড শীতের কারণে এক বেলা ভাতের জন্য বাইরে বের হতে পারছে না। বসে থাকলে তো চলবে না তাই যতই হাড়ভাঙ্গা শীতপ্রাবহ বয়ে যাক তবুও কাজের জন্য বাইরে যেতে হবে। নইলে না খেয়ে থাকতে হবে অবুঝ সন্তানদের নিয়ে। অন্যদিকে, এই শীতে গায়ে দেবার মত এক টুকরা গরম কাপড় যাদের নেই, তাদের অবস্থা তো বর্ণনাতীত। গায়ে কাপড় দেবার পরিবর্তে এক বেলা খাবারের চিন্তায় মানুষের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরছে। পাইলে খায়, নইলে ধৈর্য্যশীলদের মত ধৈর্য্য ধরে বসে।

প্রবাহমান এই শীতে বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে কত মানুষ মারা যাচ্ছে এর কোন ইয়ত্তা নেই। অনুসন্ধান মতে, বেশীর ভাগ বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের নিরীহ এবং গরীব-দুঃখীরাই মারা যাচ্ছে। এদের দেখার তো কেউ নেই। নেয় না ওদের খবর কেউ। আছি শুধু নিজেকে নিয়ে এবং নিজের কর্মব্যস্তা নিয়ে। মানুষ মানুষের জন্য এ কথা আমরা বেমালূম ভূলেই গেছি। এই প্রচন্ড শীতে বাংলাদেশও বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে চলেছে। আর তার বুকে থাকা বসবাসকারী অসহায়-নিরীহ মানুষদের কথা তো বলাই-বাহুল্য। আমাদের সবুজ ঘেরা লাল পতাকা বাংলাদেশের বিজয়ের কথা স্বরণ করিয়ে দেয়। কিন্তু সেই লাল এখনো বাংলাদেশের জমিনে মানুষের লাল রক্তে রাঙ্গিয়ে দিচ্ছে। প্রতিনিয়ত মানুষ খুন, হত্যা, গুপ্তহত্যা-গুম প্রবৃদ্ধির সাথে সাথে বাংলাদেশ দুর্নীতির কালোগ্রাসে ধুমায়িত হতে চলেছে। এক সময় আমাদের বিজিত সোনার বাংলাদেশ ধুম্রজালে আটকা পড়ে আমাদের কাছ থেকে অন্যের হাতে চলে যাবে। তখন আমাদের কিছুই করার থাকবে না। তাই তো বাংলাদেশ নিরব হয়ে শুধু অদৃশ্য অশ্রুসিক্ত চোখ থেকে নোনাপানি ঝরাচ্ছে। তার পিঠে থাকা তার সোনার বাংলার ছেলেরা অসহায় দৃষ্টিতে শুধু চেয়ে আছে।

আমরা জানি জনসাধরণদের একটা মূল্যবান ভোটে নির্বাচিত রাজনীতিবিদরা রাজনীতির মিষ্টি মধু পান করে থাকে। কিন্তু এর ফলে আমরা জনগণ কি পাই? কিছুই পাই না। যাদের পরতে পরতে কষ্ট ছাড়া আর কিছু উপলব্দি করা যায় না। আমরা সাধারণ মানুষ যারা আছি মোটামোটি একজন অন্যজনের চিন্তা করছি। কিন্তু রাজনৈতিক কর্তাব্যক্তিরা কি ভাবছে! শুধু একে অপরের উপর কটাক্ক কথার তীর নিক্ষেপ ছাড়া দেশ শাসকদের আর কিছুই করার নেই। বেঃসরকারী সংস্থাগুলো দেশের এবং দেশের মানুষের জন্য অনেক কিছু করতে চাচ্ছে। সম্প্রতি দেখেন, ঐ প্রচন্ড শীতে ধরুন, ব্লগগুলোই বিশেষ করে মুক্তব্লগ কর্তৃক দারিদ্রতা বিমোচন না হলেও মানবতার গান গেয়ে মানবেতর জীবন যাপনকারীদের গায়ে একটি কম্বল বা কিছু দেয়ার চেষ্টা করছে। এছাড়া হাজারো উদাহরণ মিলবে যা আমরা সাধারণ মানুষ মানুষের জন্য করতে আছি।

কিন্তু রাজনীতিবিদরা (আমি ক্ষমতাসীন এবং বিরোধীদলেরসহ সব রাজনীতিদলগুলোর কথা বলছি) মানুষ মারা ছাড়া কি করছে বলতে পারবেন? আজ এখানে, কাল সেখানে মানুষ মরে পড়ে আছে, সেই চিন্তা-ফিকির কি আমাদের কেউর আছে। কেন নাই? একথাও কারো জানা নাই।

শুধু দেশের শাসক হলেই চলবে না বরং সত্যিকারের দেশপ্রেমিক হতে হবে। সেবক হতে হবে। শুধু দুই ঠোটের মাঝখান দিয়ে অহেতুক বয়ান দেয়ার কোন ফায়দা নেই। দুনিয়ার সব দেশের মানুষদের কিন্তু একজন না একজন মানুষ দেশ শাসন করে এসেছে আদিকাল থেকেই। তাদের অবস্থা সবাই অবগত। যাদের দেশ পরিচালনায় অদক্ষতা, অযোগ্যতা এবং অপরিকল্পিত হয়ে থাকে, তারা কিন্তু বেশীদিন ক্ষমতায় ঠিকে পারে না। ক্ষণিকের ফুটন্ত ফুলের মত ৫ বছরের ক্ষমতাও ঝরে পড়ে যাবে গোধুলী বেলায়। তখন সেই ফুলের কোন দাম থাকে না। যদি কোন সুঘ্রাণ দিয়ে থাকে কাউকে, তাহলে তার সুনাম সুখ্যাতি লাভ করে। ঠিক তেমনি রাজনীতি। রাজনীতিবিদরা শুধু তাদের রাজনীতি টিকিয়ে রাখার জন্য কাজ করে যাচ্ছে, প্রয়োজনে মানুষ মারছে নির্ধিদ্বায়। কোন পরোয়া করছে না তারা। আমি এফএম রেডিওতে সংবাদ শুনতে গিয়ে সংবাদ শেষে একটা আলোচনা টেবিলে বসেন ওরা। এতে প্রথমে জনমত সংগ্রহ করে উপস্থিতরা এর উপর পর্যালোচনা করেন। এখানে যেটা বলতে চাই তা হল, একজন ভদ্র মহিলাকে বর্তমান সাম্প্রতিক ঢাকায় এবং সিলেটে এক কথায় সারা বাংলাদেশে বোমা বিস্ফোরণের কথা বললে তিনি শুধু বললেন, এই বর্বরোচিত কর্মকান্ড অন্যদেশ দেখলে আমাদের দেশের ইমেজটা কোথায় দাঁড়াবে এনিয়ে কি কোন রাজনীতিবিদরা ভেবেছেন? অন্যদেশে আমাদের দেশের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হোক এটা আমাদের সাধারণ জনও চায় না। যা ভদ্র মহিলার কণ্ঠ থেকে জানা গেল। আজ যদি আমরা রাজনীতিবিদরা ঐ ভদ্র মহিলার চিন্তা-ফিকির নিয়ে দেশের জন্য কাজ করতাম, তাহলে আমাদের বাংলাদেশ কোথায় থেকে কোথায় যেত তা ভেবে কুল পেতাম না।

রাজনীতি মতপার্থক্য থাকতে পারে, কিন্তু মানুষদের রক্ত নিয়ে হোলি খেলা তো রাজনীতিবীদরে শুভা পায় না। যদি আমরা আজ হিংসা-প্রতিহিংসার রাজনীতি ত্যাগ করে সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশের এবং দশের জন্য কিছু করে যেতে পারতাম, তাহলে ভবিষ্যত প্রজন্মরা আমাদের গালি দিবে না বলে আশা করি। তা না হলে এমন একটা সময় আসবে যারা আজ দেশ নিয়ে লটু খেলা খেলছি সেই জানোয়ারদের ধিক্কার দেয়া ছাড়া আর ইতিহাসে কিছুই লেখা থাকবে না। তাই এখনই সচেতন হওয়ার জন্য বাংলার সকল মানুষদের আহ্বান জানাচ্ছি এক হয়ে কাজ করা জন্য। তাহলে আমাদের দেশের সকল সুকীর্তি ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে সুনামে। বয়ে যাবে সবার উপর সুখ সমৃদ্ধি।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=স্মৃতির মায়ায় জড়িয়ে আছে মন=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:০৯


ঘাস লতা পাতা আমার গাঁয়ের মেঠো পথ, ধানের ক্ষেত
জংলী গাছ জড়ানো লতাবতী - আহা নিউরণে পাই স্মৃতির সংকেত,
রান্নাবাটির খেলাঘরে ফুলের পাপড়িতে তরকারী রান্না
এখন স্মৃতিগুলো পড়লে মনে, বুক ফুঁড়ে বেরোয় কান্না।

ফিরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

'জুলাই যোদ্ধারা' কার বিপক্ষে যুদ্ধ করলো, হ্তাহতের পরিমাণ কত?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৫১



সর্বশেষ আমেরিকান ক্যু'কে অনেক ব্লগার "জুলাই বিপ্লব" ও তাতে যারা যুদ্ধ করেছে, তাদেরকে "জুলাই যোদ্ধা" ডাকছে; জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ ছিলো পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, ছাত্রলীগ; জুলাই বিপ্লবে টোটেল হতাহতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×