somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষে ধর্ম।গুরুজী।। যারা বলে- আমরা দিনে দিনে বাস্তবতা শিখছি ও শোভ্য হয়েছি, এই চপেটাঘাৎটি আমি তাদের মুখে মারলাম।

০২ রা মে, ২০১৪ রাত ১:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমরা মনে করি রাসুলের যামানা টি ছিল যাহেলিয়াত যুগ, মিথ্যা ও অনাচারময় একটি যুগ। সে যুগের সেই অন্যায় অনাচার ও মিথ্যার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে রাসুল সত্য প্রচার করেছিলেন, এবং মিথ্যাকে ধংশ করেছিলেন। সেই রাসুলের যামানার ১৪০০ বছর পরে আজ আমরা অনেক উন্নত। আমাদের থেকে অনাচার, মিথ্যা সে যুগ অপেক্ষা অনেক কম। এবং আমরা অনেক শোভ্য বলে নিজেদের কে দাবি করি। কিন্তু আমারা একটি বারও ভাবি না যে- আমরা সেই ১৪০০ বছর পূর্ব অপেক্ষা বর্তমানে অনেক বেশি অত্যাচারী, মিথ্যা ও হিংস্র হয়েছি, হয়েছি সেই ১৪০০ বছর অপেক্ষা অনেক বেশি অ-শোভ্য। কি কারণে আমি এই কথাগুলি বলছি, ও এই কথার বাস্তবতা কতটুকু সত্য, তা আমার নিচের আলোচনা থেকেই পরিস্কার হবেন বলে আমি মনে করি। এবার আসুন উক্ত কথাগুলি আমি কি কারণে বললাম, তার ব্যখ্যা করি।

আজ থেকে ১৪০০ বছর পূর্বে রাসুল অন্ধবিশ্বাস, গোঁড়ামী ও কু-সংস্কারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে, একটা বাস্তব ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেন। সে সময়কার অন্ধবিশ্বাসী, গোঁড়া ও কু-সংস্কারাচ্ছন্নদের দ্বারা নির্যাতীত হতে থাকা সাধারণ মানুষ, ধিরে ধিরে রাসুলের পক্ষ অবলম্বণ করতে থাকে অন্ধবিশ্বাসী, গোঁড়া ও কু-সংস্কারাচ্ছন্নদের অত্যাচারের হাত থেকে পরিত্রাণের জন্য। আর সে লক্ষেই রাসুল অন্ধবিশ্বাসী, গোঁড়া ও কু-সংস্কারাচ্ছন্নদের বিরুদ্ধে ও বাস্তবতার পক্ষে একটি দলিল রচনা করেন, যে দলিলটির নাম রাসুলের হাদিস। আর রাসুলের এই হাদিসের আইনই পারে কু-সংস্কার, অন্ধবিশ্বাস ও গোঁড়ামীকে বিদায় করে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠা করতে।

কিন্তু রাসুল মারা যাওয়ার পর দিনই ক্ষমতার লোভে, ইসলামের চির শত্রু উমাইয়া পরিবারের সাথে হাতে হাত মিলিয়ে, রাসুলের সেই হাদিসকে বিকৃতি করার অঙ্গিকার করে ক্ষমতা গ্রহন করে এক শেণীর সাহাবারা, তারা রাসুলের অসিয়ত কৃত খলিফাকে বাদ দিয়ে অন্যায় ভাবে ক্ষমতা দখল করে। আর সেদিন থেকেই শুরু হয় রাসুলের হাদিসের বিকৃতী। এর পরে শুরু হয় রাসুলের চরিত্র হণণ করতে নানা পদের গ্রন্থ রচনা। তবে তা ছিলো গোপনে গোপনে, লুকিয়ে লুকিয়ে। সে সকল গ্রন্থ জন সম্মুখে প্রচারের সাহস তারা রাসুল মারা যাওয়ার ১০০ বছরের মধ্যেও দেখাতে পারে নাই।

রাসুল মারা যাওয়ার আনুমানিক ৩০০ বছর পরে, সেই গোঁড়া, অন্ধবিশ্বাসী, কু-সংস্কারাচ্ছন্নরা তাদের সেই পূর্ব থেকে চলে আসা কু-সংস্কারকে টিকিযে রাখার জন্য, নিজেরা বেশ কিছু গ্রন্থ রচনা করে, এবং সে গ্রন্থ গুলিকে রাসুলের হাদিস নাম দিয়ে পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠা লাভ করায়, এবং রাসুলের রচিত হাদিসটিকে কোরআন নামকরণ করে। এর পর থেকেই তারা ইসলামের দলিল হিসাবে রাসুলের হাদিস বা তাদের বলা কোরআনকে বাদ দিযে, তাদের রচিত সেই হাদিসগুলিকেই ব্যবহার করে আসছে, ও অন্ধবিশ্বাস, গোঁড়া, ও কুসংস্কারকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। এখানে মূল কথা হলো- রাসুলের সে যুগকে আমরা বর্তমান যুগ অপেক্ষা অ-শোভ্য যুগ বললেও, তারা কিন্তু রাসুল মারা যাওয়ার ৩০০ বছর পরেই, ইতিহাস বিকৃতির জন্য গ্রন্থ রচনা ও প্রচার করার ঔদ্ধত্য দেখিয়েছিল।

আর আমরা নিজেদেরকে শোভ্য যুগের মানুষ দাবি করলেও, আমরা কিন্তু সেই রাসুল মৃত্যু পরবর্তি ৩০০ বছরের মধ্য সময় অপেক্ষা অনেক বেশি, অত্যাচারী, মিথ্যা, গোঁড়া, কু-সংস্কারাচ্ছন্ন ও অ-শোভ্য। তা- না হলে- যেই বঙ্গবন্ধু ৭ই মার্চ এক রকম স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েই দিয়েছিলেন। সারা পৃথিবীর লোক দেখেছে বাংলাদেশ স্বাধীন হতে বঙ্গবন্ধুর কত বড় অবদান। সেই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করতে, একশ্রেণীর মুক্তিযোদ্ধারা স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তির সাথে হাত মিলিযে ফেলে। যেরুপ- সেই ১৪০০ বছর আগে রাসুল মারা যাওয়ার পরে একশেণীর সাহাবারা ক্ষমতার লোভে ইসলামের শত্রুদের সাথে হাতে হাত মিলিয়ে ছিল। আপনারা বলুন। আমরা কি সেই ১৪০০ বছর অপেক্ষা একটুও ভালো হতে পেরেছি?

আবার দেখুন- বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাত্র তিন যুগ পরে এক শ্রেণীর মুক্তি যোদ্ধারা কিভাবে বঙ্গবন্ধুর নামে কালিমা ছড়াচ্ছে যে-তিনি এই স্বাধীনতা চান নি। আর এখানেও কিন্তু সেই এক শ্রেণীর মুক্তিযোদ্ধারা এই ইতিহাস বিকৃতি করতে, হাতে হাত মিলিযেছে সেই স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি দেশের শত্রুদের সাথে। যেখানে রাসুল মারা যাওয়ার পরে ইতিহাস বিকৃত করতে ৩০০ বছর সময় নিয়েছিল এক শ্রেণীর সাহাবারা। তারাও কিন্তু ইসলামের ইতিহাস বিকৃত করতে হাতে হাত মিলিয়ে ছিল ইসলামের শত্রুদের সাথে। তবে পার্থক্য এই যে- সেই ১৪০০ বছর পূর্বের মানুষ বর্তমান মানুষ অপেক্ষা শোভ্য ছিলো বলেই- তারা ইসলামের ইতিহাস বিকৃতি করতে ৩০০ বছর সময় নিয়ে ছিল। আর আমরা তাদের থেকে অনেক বেশি অ-শোভ্য, তাই- মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করতে মাত্র তিন যুগ সময় নিলাম।

যারা বলে- আমরা দিনে দিনে বাস্তবতা শিখছি ও শোভ্য হচ্ছি, এই চপেটাঘাৎটি আমি তাদের মুখে মারলাম। কারণ আমরা সেই ১৪০০ বছর পূর্ব অপেক্ষা একটুও শোভ্য হতে পারি নি। বরং আমরা সে সময় অপেক্ষা আরও বেশি আন্ধবিশ্বাস, গোঁড়া, অ-শোভ্য ও কু-সংস্কারাচ্ছন্ন হয়েছি।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অধুনা পাল্টে যাওয়া গ্রাম বা মফঃস্বল আর ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়া শহুরে মানুষ!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০০


দেশের দ্রব্যমুল্যের বাজারে আগুন। মধ্যবিত্তরা তো বটেই উচ্চবিত্তরা পর্যন্ত বাজারে গিয়ে আয়ের সাথে ব্যায়ের তাল মেলাতে হিমসিম খাচ্ছে- - একদিকে বাইরে সুর্য আগুনে উত্তাপ ছড়াচ্ছে অন্যদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমুল্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাম্প্রতিক দুইটা বিষয় ভাইরাল হতে দেখলাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪১

সাম্প্রতিক দুইটা বিষয় ভাইরাল হতে দেখলাম।
১. এফডিসিতে মারামারি
২. ঘরোয়া ক্রিকেটে নারী আম্পায়ারের আম্পায়ারিং নিয়ে বিতর্ক

১. বাংলা সিনেমাকে আমরা সাধারণ দর্শকরা এখন কার্টুনের মতন ট্রিট করি। মাহিয়া মাহির... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) পক্ষ নিলে আল্লাহ হেদায়াত প্রদান করেন

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:৪২



সূরা: ৩৯ যুমার, ২৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৩। আল্লাহ নাযিল করেছেন উত্তম হাদিস, যা সুসমঞ্জস্য, পুন: পুন: আবৃত। এতে যারা তাদের রবকে ভয় করে তাদের শরির রোমাঞ্চিত হয়।অত:পর তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

লুঙ্গিসুট

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



ছোটবেলায় হরেক রঙের খেলা খেলেছি। লাটিম,চেঙ্গু পান্টি, ঘুড়ি,মার্বেল,আরো কত কি। আমার মতো আপনারাও খেলেছেন এগুলো।রোদ ঝড় বৃষ্টি কোনো বাধাই মানতাম না। আগে খেলা তারপর সব কিছু।
ছোটবেলায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:২৫

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

ছবি কৃতজ্ঞতা: অন্তর্জাল।

একবার শাইখুল হাদিস মুফতি তাকি উসমানী দামাত বারাকাতুহুম সাহেবকে জিজ্ঞেস করা হল, জীবনের সারকথা কী? উত্তরে তিনি এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×