somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রস্থান-পথ কঠিন হয়ে গেছে মুহাম্মদ ইউনূসের

৩১ শে মে, ২০২৫ রাত ২:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের (৮ই আগস্ট ২০২৪ থেকে চলমান...) প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের ক্ষমতা ছাড়ার পথ কঠিন হয়ে গেছে।

এমনিতেই তার পদ ছাড়ার প্রবল অনাগ্রহ, তার ওপর আছে ক্ষমতা গ্রহণের পরের মাত্র এক সপ্তাহে আরও অন্তত সাড়ে সাতশ লোকের মৃত্যুর দায় ভার। এর পরে আরও মৃত্যু তো আছেই।

সাড়ে সাতশ লোকের কথা কেন বললাম? এটা জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের (ওএইচসিএইচআর) সেই রিপোর্ট, যে রিপোর্টে আনন্দে আটখানা তারা। ওএইচসিএইচআর আগে সারসংক্ষেপ দিয়েছিল, তাতে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ৪০০ লোকের এবং এরপরের দুইদিনে মারা গেছেন আরও ২৫০ জন। অর্থাৎ প্রাথমিক সংক্ষেপিত প্রতিবেদনে তারা সাড়ে ছয়শ জনের প্রাণহানির যে তথ্যের প্রকাশ করেছিল, তারচেয়ে মূল প্রতিবেদনে নিহতের সংখ্যা অনেক বেশি। এবং সেটা ১৪০০ জন।

ফলকার তুর্কের কমিশনের যে রিপোর্ট সেখানে যখন ১৪০০ লোকের প্রাণহানির কথা, তখন সেই সময়ে দুইটা সরকার ছিল বাংলাদেশে। ৫ আগস্ট পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকার; ৫-৭ পর্যন্ত সরকারহীন দেশ; এবং এরপর মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। ৮ই আগস্ট পর্যন্ত যদি সাড়ে সাতশ লোকের প্রাণহানি হয়, বাকি যে সময় এবং যে সংখ্যা সেটার দায় গিয়ে পড়ে অন্তবর্তীকালীন সরকারের ওপর, এবং এই সংখ্যাটা সাড়ে সাতশ।

মৃতের এবং দিনের সংখ্যাটা খেয়াল করুন; মাত্র ৭ দিনে সাড়ে সাতশ; অর্থাৎ দৈনিক শতাধিক। এই সংখ্যা আওয়ামী লীগ সরকার এবং সরকারহীন দেশের সংখ্যা চাইতেও বেশি।

যদি তিনি এবং তার সরকার সরাসরি নির্দেশ দেয়নি কাউকে হত্যা করার, কিন্তু তারা যে অনুশীলনে সেটাতে এই দায় আপনা থেকেই তাদের ওপরে চলে যায়।

আরেকটু খোলাখুলি করে বললে বলা যায়, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকায় তারা জুলাই-আগস্টের সব মৃত্যুর দায় তাঁর ওপর চাপিয়ে যখন বিচার শুরু করে দিয়েছে, তখন তাঁর শাসনামলের মৃত্যুগুলোর দায়ও তাঁর দিকে চলে যায়।

এরবাইরে আছে আন্দোলনের সময়ে তিন হাজারের বেশি পুলিশ হত্যা। সংখ্যাটা যদিও অনানুষ্ঠানিক, তবু এই সংখ্যা ধর্তব্যের মধ্যেই চলে আসতে পারে। বলা হচ্ছে ৪৪ যদিও, তবু সবাই জানে ৪৪ কেবল চুয়াল্লিশই কেবল নয়।

সরকার এসব হত্যাকাণ্ডের একটা দায়মুক্তি দিয়ে বিচারের পথ বন্ধ করে দিয়েছে সত্য, কিন্তু এইধরনের দায়মুক্তি আদতে টেকে না। ইতিহাস তো তাই বলে। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পর ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ দিয়ে কি বিচার বন্ধ করা গেছে? যায়নি। আত্মস্বীকৃত খুনিদের ঠিকই দণ্ড পেতে হয়েছে।

আবার বলি ওএইচসিএইচআর-এর কথা; ফাক্টস ফাইন্ডিংস টিম অনেকের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিল, কিন্তু সরকার সহায়তা করেনি। তারা আক্রান্তদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে সরকার নিরাপত্তার অজুহাতে তাদেরকে সে সুযোগ দেয়নি। প্রশাসনের অনেকের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিল, যারা জুলাই-আগস্টে দায়িত্বে ছিল; কিন্তু সরকার কেবলই কথা বলতে দিয়েছে যাদেরকে ক্ষমতা দখলের পর তারা নিয়োগ দিয়েছিল। এতে সরকারি বয়ান এসেছে, বাস্তবতা ওঠে আসেনি, এবং এটাও বলেছে ফ্যাক্টস ফাইন্ডিংস টিম।

মুহাম্মদ ইউনূস সরকারকে অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়ে রেখেছে এনসিপি ও জামায়াত, কিন্তু দল হিসেবে একদিকে যেমন তাদের প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি নেই, অন্যদিকে নেই ব্যাপকভিত্তিক জনভিত্তি। ফলে এই সমর্থন দিয়ে কিছুদিন টিকে থাকা যাবে, কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে সম্ভব না।

এরবাইরে আছে গ্রামীণের নামে অগণন সুযোগসুবিধা।

এমন অবস্থায় তিনি কীভাবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব ছাড়েন?

বিএনপি যতই ডিসেম্বর-ডিসেম্বর উচ্চারণ করুক না কেন, বিষয়টা এত সহজ না!

অনুসরণ করতে পারেন এই ওয়েবসাইট


সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে মে, ২০২৫ রাত ২:৩২
১০টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×