অনেকদিন আগেই ফয়সালা হয়ে যাওয়া বিষয়টা কেন যে আবার নতুন করে মাথার ভেতর সুড়সুড়ি দিচ্ছে বুঝতে পারছি না। ব্লগ কী নারীদের স্বাধীনতা দিতে পারছে? সময়-সুযোগ পেলে মাঝেমধ্যে বাংলা ভাষার উড়োরাজ্যগুলোতে ঢু মারার লোভ সামলাতে পারি না। বড় ভাল লাগে। টেবিলে রাখা মনিটরের পর্দায় বাংলা অরগুলো যথন আমাকে আমন্ত্রণ জানায় কী যে ভাল লাগে তা বলে বুঝানোর মত না। পয়াসাকড়ি খরচ করে সে কাজটা করার সময়-সুযোগ ইদানিং পাচ্ছিনা। সামনে কোনো সুখবর আছে কিনা তাও জানি না। তারপরও পেশা ও পড়াশোনা ফাঁকি দিয়ে খানিকটা সময় ব্লগের আঙিনাটা চোখের পরশে অনুভব করার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষার নতুন নতুন ত্রে আমাকে ডাকছে আর আমি কান পেতে শুনব না, চোখ বুলিয়ে দেখব না- কী করে হয়! পরিচিত কারো লেখা চোখে পড়লে পড়া হয়ে যায়। অপরিচিতদের লেখা চোখ বুলিয়ে পছন্দ হলে পড়ার লোভ সামলাতে পারি না। চেনা-অচেনাদের মাঝখানে ভয়ংকর ঝান্ডা হাতে নিয়ে যারা মুখটা আড়াল করে রাখে তাদের লেখাও পড়ি। নিকনেম আমি পছন্দ করতে পারি না কোনোভাবেই। তারপরও পড়ি। কারো কারো লেখা ও মন্তব্য উপভোগ্য। অনেকে বিখ্যাত হয়ে ওঠেছে ছদ্মনামেই। খুবই ইতিবাচক। হয়ত এই সুযোগটা কাজে লাগানোর মেধা ও রুচিবোধ সব নিকনেমধারী ব্লগার ধারণ করেন না। কদাকার সব লেখা ও মন্তব্যে ভরে উঠে বাংলা ব্লগের আঙিনা।
ব্লগে নিজের ভাষ্যটা অন্যের সাথে ভাগাভাগি করার সুযোগ ও সম্ভাবনা বিবেচনা করলে নারী ব্লগাররা স্ট্রাটেজিকালি কয়েকধাপ এগিয়ে থাকে, বছরখানেকের ব্লগিং অভিজ্ঞতায় আমি নি:সন্দেহ। তবু নারীতে নারীতে ব্লগরাজ্য সয়লাব হয় না কেন? কীসের টানাপোড়ন? আমার ধারণা প্রযুক্তির সহজলভ্যতার প্রশ্ন এর পেছনে দায়ী নয়। যে ক’জন নারী ব্লগারদের সাথে জানাশোন আছে তাদের লেখার সাথে পরিচিত হবার সুযোগটা কাজে লাগাতে পারলেও, মাঝেমধ্যে চোখে পড়া বাদবাকি নারীব্লগারদের লেখার চেয়ে নিচের ক্রমশ প্রসারমান বিশাল সাইজের লেজটাতেই অনেক সময় আগে চোখ আটকে যায়। সময়-সুযোগ বুঝে কিছু সময়ও খরচ করে ফেলি। এত এত শুভাকাঙ্খী! কী বলতে চায় মন্তব্যবাদীরা, তা জানার ও বুঝার মানসেই মূলত মন্তব্যগুলো পড়ার চেষ্টা থাকে। নাহ্। খুব বেশিকিছু বুঝে ওঠার আগেই কান্ত হয়ে পড়ি। কেন পুরুষরা এতটা হামলে পড়ে? যা তারা জানায় তারও অধিক কিছু কি বলার থাকে? কী জানাতে চায়! যৌনমনস্তত্ব কী বার্তা দিতে চায়? আমি নিশ্চিত নই এধরণের প্রশ্ন আর কারো মনে জাগে কিনা। তারপরও জানতে ইচ্ছা করে আর কারো মাথার ভেতর বিষয়টা সুড়সুড়ি দেয় কিনা!
আচ্ছা মেয়ে ব্লগাররা কী খুবই পুলকিত হয় ঘোড়দৌড় মাঠে নিজেদের এগিয়ে থাকতে দেখে!
অবদমনজনিত সমস্যার দিকে থেকে এদেশের পুরুষমাত্রই কমপ্লেক্স। মানুষের উপর নারী-পুরুষ সম্পর্কজনিত সামাজিক লক্ষণরেখার বেড়ি সম্ভবত কোনো সুফল দেয়ার ক্ষমতা রাখে না। সে কারণেই বোধকরি এই বেড়ি টপকাতে হবে।
সম্ভবত খুব অচিরেই এমন সময় আসবে যখন নারী ও পুরুষ উভয়ই পরষ্পরের ব্লগে হামলে পড়বে। হয়ত আমাদের মত সাধারণ ও অবদমিত ব্লগারদের হাত ধরে তাদের আগমন হবে। আমরা না হয় শহীদই হলাম!
পুনশ্চ: পোস্টখানা কাহারো পক্ষে বা বিপক্ষে লেখা হয়নাই! মন্তব্যের উপর ভিত্তি করে লেখাটা নিয়মিত আপডেট করা হচ্ছে। প্রত্যেকটা কমেন্টই আমাকে খানিকটা শিক্ষিত করছে!
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জুলাই, ২০০৯ রাত ১০:১৯