somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঈশ্বরদীতে মাটির নিচে গুপ্ত সুড়ঙ্গ! :-*

২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পাবনা প্রতিনিধি : পুকুর খনন করতে গিয়ে দেখা মিলল প্রায় ৩শ’ বছর আগের গুপ্ত সুড়ঙ্গ। ঈশ্বরদীর লক্ষ্মীকুণ্ডা ইউনিয়নের নূরুল্লাহপুর গ্রামে এটি আবিষ্কার করেন মাটিকাটা শ্রমিকরা।

গুপ্ত সুড়ঙ্গ খনন করলে মূল্যবান সম্পদ, নরকঙ্কালসহ অসংখ্য পুরাকীর্তির সন্ধান পাওয়া যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আর এ খবর ছড়িয়ে পড়লে প্রতিদিন হাজারো নারী পুরুষ তা দেখার জন্য ভিড় করছেন।

বর্তমানে ঘটনাস্থলটি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

উত্তরাধিকার সূত্রে মৃত খন্দকার আব্দুল হামিদের ছেলে খন্দকার খায়রুল ইসলাম হান্নান নীল কুঠিরে পরিবারসহ বাস করছেন। সম্প্রতি তার পরিবারের পক্ষ থেকে নীল কুঠিরের পাশের ডোবাটি গভীর করে খনন করার জন্য স্থানীয় ইটভাটার মালিক আতিয়ার রহমানের কাছে মাটি বিক্রি করেন।

গত শনিবার তিনি মাটি খনন কাজ শুরু করেন। ১০ থেকে ১৫ ফুট খনন করার পরই কুঠিরের গুপ্ত সুড়ঙ্গটি বের হয়ে আসে। মূল্যবান কিছু সম্পদও পাওয়া যায় বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা। তবে, সেগুলো মাটিকাটা শ্রমিকরা নিয়ে গেছেন।

সম্পদ পাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে ইটভাটার মালিক আতিয়ার রহমান বলেন, ‘মাটি খননের সময় আমি সেখানে ছিলাম না।’

১৭৬৮ সালের দিকে ভারতে ব্রিটিশ রাজত্বের প্রাণকেন্দ্র কলকাতার সঙ্গে যোগসূত্র স্থাপনের একমাত্র মাধ্যম ছিল নদীপথ। তখনও রেলপথ হয়নি। সম্ভবত ১৮৮১ সালের দিকে পাকুড়িয়ার নূরুল্লাহপুর গ্রামে এ নীলকুঠিটি স্থাপিত হয়। পুর্ব-পশ্চিম দিকে ৮টি ছোট বড় প্রকোষ্ঠ ছিল। ৫০-৬০ ফুট চওড়া দেয়াল এবং ১২ ইঞ্চি লম্বা চুন সুরকির গাঁথুনি ছিল। কিন্তু ১৮১৮ থেকে ১৮৭০ সালে নীলকুঠি এলাকায় ঘন ঘন নীলবিদ্রোহ এবং জার্মানিতে রাসায়নিক নীলের আবিষ্কারের ফলে এদেশে নীল চাষ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। তখন নীলকর ইংরেজরা নীলচাষ গুটিয়ে স্বদেশে ফিরে যাওয়ার সময় পাকুড়িয়া এলাকার বাবু মথুর মজুমদার বসবাসের জন্য কুঠিটি কিনে নেন।

১৯৪৭ সালের দিকে ভারত-পাকিস্তান ভাগ হলে বাবু উনতি মজুমদারের কাছ থেকে কুঠিটি খন্দকার মাওলানা আব্দুল হামিদের অধিকারে আসে। বর্তমানে তার পরিবারের সদস্যরা কুঠিটি নিশ্চিহ্ন করে নতুন করে বাড়ি নির্মাণ করে বাস করছেন।

সে সময়ে নীলকররাই এদেশের অবাধ্য নীলচাষীদের দমন করার জন্য গুপ্ত কুঠির নির্মাণ করেছিল। এখানে ইংরেজরা বাস করতো। আর এলাকার যেসব কৃষক নীলচাষ করতে অস্বীকার করতো তাদের ধরে এনে হত্যা করা হতো। আর নর্তকীদের দিয়ে নাচ গান করানো হতো। বায়েজি খানার সুরে সেই সময় নীলকুঠিটি মুখিয়ে থাকতো।

বাড়ির মালিক জানান, ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত বিশেষ বিশেষ দিনে নূপূরের বাজনা আর নারী পুরুষের আর্তনাদের আওয়াজ শোনা যেতো। ওই সময় মনে হতো- যেন পাশেই এসব হচ্ছে। তবে, এসব এখন আর নেই।

এদিকে, সম্প্রতি পুকুর খনন করতে গিয়ে বের হওয়া গুপ্ত সুড়ঙ্গকে কেন্দ্র করে এলাকায় নানা আলোচনা শুরু হয়েছে। নীলকুঠির বর্তমান মালিক খন্দকার খায়রুল ইসলাম হান্নানের ছেলে খ ম নজরুল ইসলাম বাবু জানান, গুপ্ত সুড়ঙ্গের ভেতরে বেশ কয়েকজন এলাকার উৎসক যুবক প্রবেশ করেছিল। তবে, তারা সুড়ঙ্গের ভেতরে মাত্র ১৫ থেকে ২০ ফুট পর্যন্ত যেতে পেরেছে। সামনে কাদা থাকায় তারা আর যেতে পারেনি।

সুড়ঙ্গের ভেতরে যাওয়া আলাল, বকুল, খায়রুল, সুমনসহ বেশ কয়েকজন জানান, পুরো সুড়ঙ্গটি গভীর অন্ধকার। আর প্রচণ্ড গরম। সুড়ঙ্গের ভেতরে ১০ থেকে ১২ ফুট হামাগুড়ি দিয়ে যাওয়ার পরই দাঁড়িয়ে যাওয়া যাচ্ছে। তবে, সামনে আরও ৮ থেকে ১০ ফুট গিয়ে বাঁক পাওয়া যায়। সেখানে কাদামাটি রয়েছে এবং মাটি চেপে সুড়ঙ্গটি বন্ধ হয়ে গেছে। এ সুড়ঙ্গের ভেতরে অনেক মূল্যবান সম্পদ ও কঙ্কালের অস্তিত্ব অনুমান করেছেন তারা।

বেসরকারিভাবে কিংবা সরকারি প্রত্নতত্ত্ববিদদের মাধ্যমে এটি খনন করা হলে প্রায় ৩শ’ বছরের ঐতিহ্যের সন্ধান মিলবে বলে আশা করা হচ্ছে।

লক্ষ্মীকুণ্ডা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনিসুল হক মোল্লা জানান, সুড়ঙ্গের বিষয়টি তিনি শুনে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। বিষয়টি প্রশাসনকে জানিয়েছেন।

ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মাদ সানোয়ার হোসেন জানান, সুড়ঙ্গটিতে জনসাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে পুলিশ প্রহরায় রাখা হয়েছে। প্রত্নতাত্ত্বিকদের জানানো হবে। তারা বিষয়টি দেখার পর যে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বলবেন তা করা হবে।
Click This Link

১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগ লিখেছি: কথাটার পরে ভাসছে ১১ বছর ১১ মাস... কথাটা

লিখেছেন আবু ছােলহ, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৮

ব্লগ লিখেছি: কথাটার পরে ভাসছে ১১ বছর ১১ মাস... কথাটা

গুগল থেকে নেয়া ছবি।

সামুতে মাল্টি নিক নিয়ে অনেকেই কথা বলেন। অনেকের কাছে মাল্টি যন্ত্রণারও কারণ। শুধু যন্ত্রণা নয়, নরক যন্ত্রণাও... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×