somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দয়া করে এই লেখা পরে সময় নষ্ট করবেন না...:D

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১০ ভোর ৪:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সুতপা বসেই ছিল...বিছানার উপরে। দুই হাতে গাল ভর করে...ঘুম থেকে উঠার পরের এই আধা ঘন্টা ঘোরের মধ্যেই থাকে...শত ব্যস্ততার মাঝেও এই অভ্যাস ছাড়তে পারে নি.।খুব যে আন্তরিক ইচ্ছা ছিল, তাও না। চুপচাপ বসে থেকে ভাবতে ভালই লাগে ,মনে মনে ভেবে নেয়া আজকে কি কি করার আছে। কাজে আসে। আজকের কথা আলাদা, স্ব-ঘোষিত ছুটির দিন। মেরীল্যাণ্ডের ব্যস্ত জীবনে অবাস্তব আনন্দ। আজকে তাদের বিয়ের এক বছর।দেশ থেকে আসার আগেই জানতো সময়ের অভাব থাকবে,কিন্তু এত তা আসলেই ভাবে নি। চুপ করে বসে ভাবছিল সে কথাই।এক বছর??সত্যিই??কবে?রাসেল অফিসে।কখনই সকালে বিরক্ত করে না ,ইনটেলের চাকরিতে সুতপার মজা।atleast ভোর ৬টায় ঘুম থেকে উঠতে হয় না।সুতপা মিটিমিটি হাসলো,রাসেল কখনোই ইমোশনকে পাত্তা দেয় নাই,man of rules.আর সুতপা??emotional fool!!রাসেলের মনে অবশ্যই আছে,রাতের বেলায় ঠিক মতই পেয়ে যাবে ফুলের বোকে,ডায়মণ্ড অথবা দামি সুগন্ধী অথবা একটা চেক।ভুল ভাবছেন..রাসেল কিন্তু আসলেই ভালো হাসব্যাণ্ড।সুতপা আবার শুয়ে পরলো,রাসেল কখনোই ভাববে না,সুতপাকে আজকে আবার বিয়ের শাড়িতে দেখি,যদিও পরলে খুশিই হবে,কিন্তু ও কখনোই নিজে চাবে না।জোরেই হেসে ফেললো.,কেউ জানতে পারলে ভাববে কি অসুখি আমরা।আসলে রাসেল অমনই,সবসময়ই..loving,caring and responsible husband.ভালোবাসার বিয়ে ওদের।বিয়ের আগেও এমনই ছিল।সুতপা ‍উঠে পড়লো,আজকে অনেক রান্না-বান্না।বিশাল মেনু।কেক বেক করাও বাকি।হঠাৎ করেই মনে পড়লো,তারিক ভাই চলে যাবেন দেশে আর দুইদিন পরে ,বলেছিলেন দেশে কিছু পাঠাতে চাইলে যেন দেই,উনার ব্যাগ খালি।তড়িঘড়ি করে দৌড়ালো আউটলেট মলে।



সুন্দর লাগছে,রাসেল বলে উঠলো, আমি ভাগ্যবান,বউকে মিথ্যা বলতে হয় না।সুতপা হাসতে হাসতে বললো,রাসেল ভালোবাসি তোমাকে অনেক।বলা শেষ হবার আগেই রাসেলের বুকে আশ্রয় পেল।আহ্!!সুতপা ভাবলো,এই এক মিনিটের বিনিময়ে ওর সারাজীবন দিয়ে দিতে পারে,অনেক ভালোবাসি তোমাকে।খাবে চলো।ওয়াও!!কখন রাধলে এতকিছু?জানতে হবে না এত কথা,খাও তো আগে!


কেক বের করতে করতে সুতপা বললো,তারিক ভাইয়ের অফিস তোমার দুই ব্লক পরেই,SO,তুমি কালকে মনে করে উনাকে প্যাকেট টা ড্রপ করবে।OK?কিসের প্যাকেট?দেশে পাঠাচ্ছি। ননদিনীর জন্মদিন গেল না?আর আমার ভাইয়ের ছেলের জন্য একটা ট্রাক।সুতপা খেয়ালও করলো না,রাসেলের চোখ-মুখ শক্ত হয়ে যাচ্ছে।তোমার ভাইয়ের ছেলে মানে?এই বাসা থেকে তোমার ভাইয়ের ছেলের জন্য এক পয়সার জিনিসও যাবে না।হিন্দি সিরিয়ালের মত মনে হলেও,এটা যে বাস্তবে ঘঠছে,তা নিয়ে সুতপার কোন সন্দেহ হল না।খালি একটাই সমস্যা,কেন?উত্তর আসলো,ওরা secondary.আজকে ১০ডলারের খেলনা,আগামীকাল১০০০ ডলারের চেক।trust me,আমি খুব ভালো করে জানি।শোন,কাউকেই কিছু পাঠানোর দরকার নেই।ব্যাস.end of discussion.





চোখের উপরে হাত রেখে শুয়ে রাসেল ভাবছিল নিজের জীবনের কথা,ছোটবেলার কথা।আব্বু-আম্মু বাসায় নেই,ছোট্‌ট রাসেল খেলছে,বড় ফুপি এসে কান ধরে নিয়ে গেল বাসায়,ফুপির টেবিলে ছোট দুই পায়ের ছাপ।টেবিলের উপরের তাকেই ছোট চাচুর কমিক্সের সব বই কিনা!দুই ঘন্টার প্রথম এক ঘন্টা রাসেল বের হওয়ার চেষ্টা করেছিল,মাকড়শাওয়ালা বাথরুমটা ও বরাবরই ভয় পেত।আব্বু যে কেন ওকেই আরো বকা দিল,সেটা আজো রাসেল জানেনা।কিন্তু এটুকু জানে,ওরা ভাই-বোন আর মা,আব্বুর কাছে secondary...আজো।আজ যেন আব্বুর জন্মই দেখলো সুতপার মধ্যে।ওর নিজের ভালোবাসাকে ও নষ্ট হতে দিবে না....কিছুতেই না।ব্যাগে পড়ে রইল ব্রডওয়ের টিকেট আর সুতপার নাম লেখা ব্রেসলেট।

দেয়ালের দিকে মুখ করে শুয়ে সুতপা ভাবছিল,একটা খেলনা ওর ভালোবাসাকে মরণাপন্ন করে দিল?এত সহজ?হাতের উপর দু ফোটা পানি পড়ভেই মনে হলো কারোরই এই দুনিয়াই কাঁদা উচিত না,যখন চোখের পানি মুছে দেওয়ার কেউ থাকে না।tonight,it's gonna be a long night....









৩১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×