somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জামায়াতের আমির সত্য বলতে শুরু করেছেন, এবং তিনি আরো যা যা বলবেন:D

২৭ শে মার্চ, ২০১০ বিকাল ৫:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভুতের মুখে রাম নাম, এটা একটা প্রচলিত কথা। কিন্তু সেই ভুত যদি বিশেষ কেউ হন তবে চমকে না উঠে আর পারি না। যাক বিষয়টা খোলাসা করাই ভাল। গতকাল ২৬শে মার্চ আমাদের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের আলোচনা সভায় জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রশংসা করে ভাষণ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক আন্দোলনের মূল বিষয় ছিলো বহুদলীয় গণতন্ত্র, বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগারে থাকা কালেও বাংলাদেশের একক ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন, দেশে ফিরে তিনি দৃষ্টান্তমূলক সিদ্ধান্ত নিয়ে রাষ্ট্রপতির পদ ছেড়ে প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু ওআইসির সদস্য হয়েও ইসলামের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন বলেও নিজামী মন্তব্য করেন।
যাক এবার তার এই প্রশংসার পোস্টমর্টেম করা যাক।
তিনি কোন সময় এসে এই কথা বললেন, পাঠকরা একবার ভাবলেই বুঝতে পারবেন। যখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রক্রিয়া সরকার শুরু করে দিয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যখন বলে দিয়েছেন পুলিশ চাইলে তাদের গ্রেফতারও করতে পারে এবং তাদের বিদেশে যাওয়া নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ঠিক এমন একটা পরিস্থিতিতে নিজামী এইভাবে আমাদের জাতির জনকের প্রশংসা করে নিজেকে কোন কাতারে ফেলার চেষ্টা করছেন কে জানে। সাংবাদিক হিসেবে এর আগে আমি একাধিকবার জামায়াতের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গিয়েছি এবং নিজামী বক্তব্য এক কান দিয়ে শুনে অন্যকান দিনে আউট করে দিয়েছি। তারপর আমার ক্ষুদ্র স্মৃতিভাণ্ডারে যেসব কথা জমে আছে তাতে কোথায় এমন শব্দ নাই- স্বাধীনতার স্থপতি শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি (নিজামী) তো কখন মুক্তিযুদ্ধকেই স্বীকার করেন নি এর আগে। তিনি এবং তার দল বলতো এটা ছিলো গৃহযুদ্ধ বিদ্রোহ র্আও কত কত ফালতু কথা। কিন্তু এবার তার মুখে কি শুনলাম। যাক আল্লাহপাক নিজামীর বোধোদয় ঘটিয়েছেন ৩৯বছর পর হলেও।
আমাদের প্রত্যাশা আসলে কি হতে পারে। হতে পারে যে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আগে এমন আরও কথা আমরা শুনবো যা বাঙালি কোনদিন্ও কল্পণা করেনি। নিজামীর মুখে এমন কথাও শুনতে পারি-
:D আমরা ৭১ এবং ৭৫সালে অন্যায় করেছি, আমরা না বুঝে বা বুঝে এদেশের সাধারণ মানুষ, বুদ্ধিজীবী, রাজনীতিক হত্যা করেছি।
B-) আমাদের এই ঘৃণ্য অপরাধের কোন মাফ নাই।
:D আপনারা সবাই আমাদের ৪০বছর ধরে ঘৃণা করেছেন,
B-)আরও ঘৃণা করুণ, আমাদের মুখে সবাই হিসু করুন,
B-) আমাদের দেখামাত্র জুতা মারুন,
:D আমাদের গাড়িতে আর যাতে পতাকা না ওড়ে সেই ব্যবস্থা করুন।
:D আমাদের আর ভোট দেবেন না। আমরাও আর নির্বাচনের প্রার্থী হবো না। তারা এসব কথা কেবল নিজেদের জনসভায়ই বলবে না। যেখানে ১০জন লোক জমে থাকবে- পথে ঘাটে, ময়দানে যেখানেই সুযোগ পাবেন তারা এসব বলবেন। শুধু বললেই হবে না কেঁদে কেঁদে বলবেন। তাদের চোখের পানিতে রাস্তার ধুলো উড়ে যাবে। তারা সব সময় দুই হাত জড়ো করে ক্ষমা চাওয়ার ভঙ্গীতে চলাচল করেবন।
তিনি এবং তার নেতা কর্মীরা চেতন অবচেতনে যাই বলুক আমরা কেবল তা শুনে হাসবো কিন্তু ক্ষমা করবো না। তাদের বিচার হবেই সরকার করবেই। পরশুরামের সেই গল্পটি বোধ হয় অনেকেরই জানা। ওই যে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য বিশ্বের সকল দেশের নেতারা উপস্থিত হয়েছেন। কিন্তু কেউ কোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না আসলে কি করা যায় পরে যখন বিশ্বের সবচে ক্ষমতাশীল দুষ্টু রাষ্ট্রপধানের গায়ে সেই বিশেষ ইনজেকশন পুশ করে দেয়া হলো, যখন তারা গড়গড়গড়গড় করে সব সত্য স্বীকার করতে শুরু করলো কেন তারা বিশ্বকে ধোকা দিয়ে গরীবকে আরও গরীব করেছে কেন তারা খুন হত্যা এবং যুদ্ধ বাধিয়ে রেখে লুটপাট করেছে। তেমনিভাবে যুদ্ধাপরাধীদের শরীরে বোধ হয় এখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ইনজেকশন অলরেডি পুশ হয়ে গেছে। যার ফলে তারা বলতে শুরু করেছেন, সেই সব সত্য কথা। শুরুটা কিন্তু ভালই হয়েছে দলে প্রধানই প্রথমে সত্য স্বীকার করলেন। আর স্বীকার করলেন বাংলার স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এভাবেই বোধ হয় তারা আরও এমন সব সত্য প্রকাশ করবেন যা শুনে সবাই ঘৃণায় তাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। শুধু নেবে না যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে গঠিত বিচারক, তদন্তকারীরা। কারণ তারা বিচার করবেনই। সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা এমনই।
জামায়াতের বড়-মাঝারী সব নেতাদের মুখে সরল সত্য তবে ঘৃণ্য কথা শুনে শুনে আর কেউ নতুন করে যুদ্ধাপরাধ করার সাহস দেখাবে না। সেই সাথে বাংলার আর কোন সন্তান জামায়াত এবং তাদের খুনি সংগঠন শিবিরে যোগ দেবার কথা মনেও আনবে না এমনও প্রত্যাশা আমাদের।
জামায়াতকে এভাবে দিনের পর দিন সেই সব ঘৃণ্যকাজের কথা স্বীকার করতেই হবে। এবং শেষাবধি তারা বিচারের কাঠগড়ায় দাড়িয়েও সত্য স্বীকার করে ক্ষমা চাইবে না- তারা বলবে আমরা অপরাধ করেছি আমাদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মারুন। যেভাবে আমরা দেশপ্রেমি বাঙালিকে হত্যা করেছি, নারীদের ধর্ষণে সাহায্য করেছি, যেভাবে অন্যের সম্পদ লুট করেছি। ঠিক সেভাবেই আপনারা আমাদের শাস্তি দিন। পৃথিবী জানুক যুদ্ধাপরাধীদের কোন ক্ষমা নেই।
আমার এই লেখার সাথে আশা করি পাঠক ব্লগার বন্ধুরাও একমত।:P
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মার্চ, ২০১০ বিকাল ৫:২৪
১৬টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×