somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যেই সমাজে বিয়ে কঠিন হয়, সেই সমাজে ব্যাভিচার সস্তা হয়ে যায়।

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ২:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিকিয়েছে সংস্কৃতি। প্রতিটি ঘরেই স্যাটেলাইন কানেকশন। হিন্দি নায়িকারা বিকিনি, টপস পড়ে নিজেদের শরীরের বিভঙ্গকে পুরোপুরি তুলে দেয় ক্যামেরার কাছে। সারাদিন সিরিয়ালে দেখা যায় সুন্দরী প্রদর্শনক্ষম মেয়েদের মূল্য, আকর্ষন। 'সিক্সপ্যাক' শব্দটা আগে শোনা যেতনা -- এখন ছেলেরা প্যাক অর্জনের যন্ত্রণায় অস্থির থাকে। যতই জ্ঞানীগুণী আর হুজুরের পরিবার হোক, এখনকার কিশোর-কিশোরীরা এগুলো অবশ্যই অবশ্যই জানে --এগুলোই তাদের চারপাশ। তাদের এফএম রেডিও সারাদিনই প্রেমের গানে, প্রেমের আলাপে, লাভগুরুতে ভরপুর থাকে। ফ্রেন্ডসদের আড্ডাবাজির এসএমএস পড়ে শোনায়। যাদের কোন মেয়ে/ছেলে নাই "আড্ডা" মারার, "গল্প" করার, "পিকনিক" করার, "ফোনে কথা" বলার -- তারা নিজেদের অসহায় ভাবতে বাধ্য হয়। পারিবারিক জ্ঞান বাবা-মা দিয়ে রাখলে সেক্ষেত্রেও তাদের যুদ্ধ হয় কঠিন যুদ্ধ। প্রতিদিন, অনেকবার। বয়ষ্করা এসব জানেনা, বুঝতেও পারবে না ভিতরে এসব কালচার কীভাবে কাজ করে, আমরাই পারিনা ঠিকমতন! মাত্র ১০বছর আগে অমন ছিলাম তাই অনেক ব্যাকডেটেড আছি!!

পূর্বের প্রজন্মের পাপ, অলসতা, বুদ্ধিবৃত্তিক অসারতার খেসারত আমাদের নোংরা সংস্কৃতি। সেই অভিভাবকরা আবার সংস্কৃতির উত্তাপের কড়াইতে পরের প্রজন্মকে ভেজে ভেজে লবণ ছিটিয়ে দেন তাদের কথার বুলিতে। অভিভাবকরা তো তাদের উপযুক্ত শিক্ষা পাবেই -- তারা কোনদিনই শান্তি পাবেন না অন্তরে -- এইটা আমি হলফ করে বলতে পারি। বেকুবদের শান্তি পাবার অধিকার নেই।

একটা ছেলে ভার্সিটি লাইফে ক্লাস করে ফিরে পরের দিন ল্যাব/কুইজ না থাকলে কি করে বাসায়/হলে? তার আশেপাশের সবই তার পশুত্বকে জাগিয়ে তোলার জিনিসপত্র। টিভি চ্যানেল, মুভি, নাটক, গান, পত্রিকা, টেলিভিশনের অ্যাড -- সে যদি শুধুই যুদ্ধ করে। ঘরে শিক্ষা না থাকলে ফোনে মেয়েদের কাছে পৌছাতে চায়। রোমান্স আজকাল পথে ঘাটেই থাকে। ভ্যাসলিনের কোমলতা বুঝাইতে টপস পরা মেয়েদের বিলবোর্ডে দেখা যায়। নারীর উন্মুক্ত বগল প্রদর্শনী থাকে ডিওডোরেন্টের অ্যাডে -- ধানমন্ডীর মূল রাস্তায়। বছরের পর বছর 'ভালোবাসার টানে, পাশে আনে' -- বিলবোর্ডে ছেলের বুকে একটা মেয়ে মাথা রেখে হেলান দিয়ে থাকে বিশাল মাঠের ঘাসে। আর এসব থেকে বছরের পর পছর একটা ছেলে যুদ্ধ করতে থাকবে -- তাকে অভিভাবকরা সন্নাসী মনে করে, নাকি নপুংসক মনে করে -- কে জানে? নীতিকথায় শরীর ভিজে? ক'দিন থিওরি বুঝিয়ে সামলাবেন এইসব?
কটা ছেলে পাশ করে চাকরি করলেও হয়না। তাকে অনেএএএক টাকা ইনকাম করতে হবে। এই ছেলের সম্ভাব্য বউ ততদিনে কলেজ ভার্সিটিতে ডজনখানেক রোমিওর প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে বসে থাকে। এরপর ৩০বছর, ৩২ বছরে সবাই ছেলেটিকে বিয়ে দিতে অস্থির হবে -- তখন তার চরিত্র কেমন আছে কে জানে, মেয়েটারটাও কে জানে। বিয়ের পবিত্র আবেগ বহু আগেই তাদের হারিয়ে ক্ষয়ে যায় -- তা যে কেউ বুঝে। শারীরিক-মানসিক এই চাওয়া পূরণে তারা যে আগেই কোথাও সাময়িক ঢুঁ মারেনি তাইবা কে জানে?

মুর্খ অভিভাবকদের চোখে পড়েনা এখনকার ডিভোর্স রেট? চোখে পড়েনা সবখানে অশ্লীলতা দেখে? তার সন্তানটি কী ভাবছে মনে করেন তারা? বিয়ের বয়সটা ছাত্র জীবনে রাখলে কী সমস্যা হবে? দায়িত্ববোধ যার কখনই ছিলনা, তার কখনই হবেনা। ছেলের ও মেয়ের বাবা মা আরো কিছুদিন (বিয়ের পরেও) ভরণপোষনের দায়িত্ব নিলে কি সমস্যা? তাদের কি সন্তানের চরিত্রের চাইতে লোকে কি বলবে --সেটাই বড় বিষয়? এই প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা অনেক অল্পতেই শারীরিক ব্যাপারগুলো ভালো করে বুঝে ফেলে। দায়িত্ববোধের শিক্ষা দিয়ে সপাত্রে/সপাত্রীতে হস্তান্তর করে দিতে না পারলে ভুক্তভোগী পরিবারের হর্তাকর্তারাই হবে -- হচ্ছে হরদম।

অথচ এসব ভাবার কেউ যেন নাই। একদিন পারিবারিক বন্ধনগুলো সব ধ্বংস হবে -- তখন হয়ত টের পাবে। প্রতিটি পরিবারের অবস্থা সঙ্গীন। প্রতিটি ছেলেমেয়েরই নৈতিক অবস্থা ভয়াবহ। এখানে এগিয়ে আসার কেউ নাই। আফসোস। সজ্ঞানে বিগত ৫-৭ বছর ধরে এসব দেখতে দেখতে আজকে প্রথম লেখলাম। না লিখে পারলামনা। এই চিন্তাগুলা প্রতিদিনই আমাকে আতঙ্কগ্রস্ত করে।

যারা সবকিছুকে এড়িয়ে চলতে পারে -- তারা এই লেখাকেও এড়াবে। আমি এই চিন্তাগুলোর বাস্তবতা খুব ভালো করে দেখছি। শত শত সমসাময়িক ছেলেমেয়েকে উদাহরণ হিসেবে জানি। হাজারখানেক ছেলেমেয়ের সার্কেলের ও কালচারাল ট্রেণ্ড জানি। অভিভাবকরা পদক্ষেপ না নিলে একটা ধ্বংস অবধারিত। যেহেতু সাংস্কৃতিক আগ্রাসনকে ঠেকানোর উপায় নেই -- পরিবারকে ঠেক দেয়াই এখনকার প্রথম কর্তব্য হওয়া উচিত। তাই বলছি, বিপদে যাবার আগে, সমাজকে ধ্বংস হতে দেবার আগে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে, নৈতিক শিক্ষা বলীয়ান করে সন্তানদের বিয়েকে এগিয়ে নিয়ে আসুন। ৩০-৩২ বয়েসে ছেলেদের, ২৫-৩০ বয়সে মেয়েদের বিয়ে না নিয়ে তাকে যথাক্রমে ২২-২৫ এবং ১৮-২২ বছরে নামিয়ে আনলে সামগ্রিক ক্ষতি নেই। অন্যথা? সাধু সাবধান!!

সংগৃহীত ও সংক্ষেপিত।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ২:০৫
৪৩টি মন্তব্য ৪০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডেল্টা ফ্লাইট - নিউ ইয়র্ক টু ডেট্রয়ট

লিখেছেন ঢাকার লোক, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:২৬

আজই শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান ভাইয়ের "নিউ ইয়র্কের পথে" পড়তে পড়তে তেমনি এক বিমান যাত্রার কথা মনে পড়লো। সে প্রায় বছর দশ বার আগের ঘটনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রিয়ট যাবো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×