করোনা ভাইরাস এর আক্রমন থেকে পরিত্রান পাওয়ার জন্য পুরো পৃথিবী অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে ইফেক্টিভ ভ্যাকসিন এর জন্য। এখন পর্যন্ত্য জানামতে প্রায় ১১৫ টা ভ্যাকসিন পাইপ লাইনে আছে- প্রাথমিক পর্যায় থেকে (বাংলাদেশের ও ১টা) হিউম্যান ট্রায়াল পর্যন্ত্য। না জানার সংখ্যা আরো বেশী হতে পারে।কিন্তু একটা ইফেক্টিভ ভ্যাকসিন নানা পরীক্ষার পর বাজারে আসতে অনেক সময় লাগে এটা আমরা সবাই জানি।
এর বিপরীতে তিনটা কোম্পানী নীরবে কিন্তু খুবই দ্রুত তার সাথে ভ্যাকসিন এর অলটারনেটিভ হিসাবে সরাসরি এন্টিবডিকে ই ড্রাগ হিসাবে বাজারে নিয়ে আসার জন্য কাজ করছেন এবং অনেকদুর এগিয়েও গেছেন তারা...। ইবোলা, এনর্থাক্স ভাইরাস দমন এর জন্য এই পদ্ধতি সাফল্যজনক ভাবে কাজ করেছে। এখন সেইম কোম্পানী একই পদ্ধতি দিয়ে এই টেকনোলজি কে করোনা ভাইরাস এর বিরূদ্ধে কাজ করানোর জন্য এন্টিবডি ড্রাগ বের করেছে। তারা যেভাবে প্রাথমিক পর্যায়ে সাফল্য পেয়েছে (যেহেতু এটা সরাসরি টার্গেটেড পদ্ধতি), খুব দ্রুতই তারা শেষ পর্যায়ে এর ট্রায়াল এ পৌছে গেছে যা কোন ভ্যাকসিন এখনও এই পর্যায়ে আসে নাই। আমেরিকার সরকার বিপুল ভাবে এর পিছনে আছে ....তিনটা কোম্পানী এটা বাজারে আনার কাজে ভ্যাকসিন এর চেয়ে অনেক এগিয়ে আছে। সবার চেয়ে এগিয়ে আছে Regeneron কোম্পানী যারা শেষ পর্যায়ে এর ট্রায়াল আরম্ভ করেছে গতকাল থেকে। যেভাবে এটা ভ্যাকসিন এর মত কাজ করছে, সেই হিসাবে পরে ভ্যাকসিন আসলেও তেমন কাজে লাগবে না বলেই প্রতীয়মান।
ভ্যাকসিন কিভাবে তৈরী হয় সেটা এই কভিড এর কল্যানে এখন মোটামুটি সবাই জানে... ভাইরাস/ব্যাক্টিরিয়ার অংশ অথবা মৃতপ্রায় জীবানু কে শরীরে ইনজেক্ট করার পর, শরীর এন্টিবডি তৈরী করে....সেই এন্টিবডি পরে সেইম ভাইরাস/ব্যাক্টিরিয়া ইনফেক্ট করলে, প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে। কিন্তু শরীর কিভাবে এই স্পেসিফিক এন্টিবডি তৈরী করে সেটা জানা খুবই ইন্টারেস্টিং...মিলিয়ন/বিলিয়ন এর উপরেও জীবানূ শরীর কে ইনফেক্ট করতে পারে...সবার জন্য 'ডিফারেন্ট' এন্টিবডি লাগবে যাতে একটা এন্টিবডি শুধুই একটা জীবানু কে ই প্রতিরোধ করবে। শরীরে বিলিয়ন এর উপরে এন্টিবডি আগে থেকেই থাকে, যখন নতুন কোন জীবানু শরীরে ঢুকে, বি কোষে যুক্ত থাকা নানা রকমের/shape এর এন্টিবডি এর সাথে লক এন্ড কি এর মত মিল হলেই বাইন্ড করে। এই বান্ডিং হওয়ার পর, সেইম বি সেল আরো বিলিয়নস বি সেল উইথ সেইম এন্টিবডি তৈরী করে।
এন্টিবডি হল একটা প্রোটিন। বায়োলজির যেকোন ছাত্র/ছাত্রী ই জানে ডিএনএ (জিন) কে 'ইউজ' করে প্রোটিন তৈরী হয়। আর একটা জিন 'একটাই' প্রোটিন বানানোর কোড বহন করে। তাহলে বিলিয়ন ডিফারেন্ট এন্টিবডি বানাতে তো বিলিয়ন (১,০০০,০০০,০০০) ডিফারেন্ট জিন লাগবে কিন্তু মানুষের শরীরে সর্ব সাকুল্যে ২৫,০০০ জিন আছে আর তার মাঝে মাত্র শ দুয়েক এন্টিবডি বানানোর জন্য জিন আছে। এই শ দুয়েক জিন এর প্রত্যেক টার মাঝে আবার ৫ থেকে ৬৫ টা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সেকশান আছে..।এক সেকশান গুলি একটা আরেক টার সাথে অদল বদল করে বিলিয়ন ডিফারেন্ট টাইপ এর এন্টিবডি বানাতে পারে।
Antibodies are produced that can react with almost any chemical structure in nature, including our own proteins.
ভ্যাকসিন বানানোর সময় শরীরে এন্টিবডি তৈরি হলেই ধরে নেওয়া হয় এটা কাজ করবে..।কিন্তু বিলিয়ন এন্টিবডির মাঝে কোন এন্টিবডির সাথে বাইন্ড করল, এটা দেখতে কেমন, কোন বি সেল এটা বানালো, কিভাবে বানালো (মানে কোন জিন কম্বিনেশনে) তা জানার তেমন দরকার পড়ে না। সরাসরি এন্টিজেন (ভাইরাস এর অংশ) ইনজেক্ট করা হয় এবং শরীরে আগে থেকেই থাকা এন্টিবডি কপি হতে থাকে (বংশবৃদ্ধি)।
কিন্তু যদি কোন ভাবে বিলিয়ন এন্টিবডির মাঝে অনলি যেটা করোনা ভাইরাস এর সাথে বাইন্ড করে, সেটা কে আইডেন্টিফাই করা যায়, তাহলে তার জিন কম্বিনেশন ও জানা যাবে। তখন ল্যাবেই সেই এন্টিবডি তৈরী করে, সরাসরি এন্টিবডি কে বড়ি/ক্যাপসুল আকারে খেয়ে নিলেই করোনা আর আক্রমন করতে পারবে না। আর এই কাজ টাই করেছেন Regeneron কোম্পানী।
Regeneron কোম্পানীকরোনাতে আক্রান্ত ইদুর ও কভিড আক্রান্ত রোগী থেকে প্লাজমা নিয়ে এন্টিবডি বানানোর বিলিয়নস অফ বি সেল কে আলাদা করে বের করেন। তারপর একটা একটা করে বি সেল এর সাথে করোনার স্পাইক প্রোটিন কে বাইন্ড করান....বিলিয়ন সেলের মাঝে, উনারা ২০০ টা বি সেল পান যেগুলি করোনার স্পাইক প্রোটিন এর সাথে বাইন্ড করে..। যেহেতু একটা বি সেল একটা এন্টিবডি, সেই হিসাবে উনারা সেই ২০০ টা এন্টিবডি কে আইডেন্টিফাই করে আইসোলেট করেন।
এই দুশ টার মাঝে, কোন এন্টিবডি ভাইরাস কে নিস্ক্রিয় করতে পারে সেই টেস্টে উনারা শেষ পর্যন্ত্য ৯ টা এন্টিবডি পান যেগুলি ভাইরাস কে সম্পুর্ন নিস্ক্রিয় করতে পারে। তারা ঐ এন্টিবডি গুলি কেই ঔষুধ হিসাবে প্রয়োগর জন্য সিলেক্ট করেন।
পাবলিশড পেপার এখানে
Antibody drug cocktail
এই ৯টা থেকে দুইটা এখন শেষ পর্যায়ের টেস্টে আছে (ফেইজ থ্রি). ইন্টারেস্টিং হল যে তারা দুইটা এন্টিবডি কে ককটেল হিসাবে একটা পিল বানিয়েছে। পরীক্ষায় দেখা গেছে যে একটা এন্টিবডি ইউজ করলে কিছু কিছু ভাইরাস মিউটেটেড হয়ে এন্টিবডি রেজিসটেন্ট হয়ে যায় কিন্তু দুইটা ভিন্ন ভিন্ন এন্টিবডি একসাথে ইউজ করলে কোন ভাবেই ভাইরাস দুইটা এন্টবডির বিরূদ্ধে একসাথে রেজিসটেন্ট হতে পারে না.।
যেটা ভ্যাকসিন এর দ্বারা সম্ভব নয়, কেন না একটা ভ্যাকসিন একটা ই এন্টিবডি।
বিস্তারিত Antibody Drugs
তাই ভ্যাকসিন এর আগে, ভ্যাকসিন এর চেয়ে ভাল কাজ করে এন্টিবডি ড্রাগ বাজারে আসার সম্ভাবনাই বেশী..আর ভ্যাকসিন এর আগে বাজারে আসলে, the world wide efforts to generate corona vaccine will become moot.
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জুলাই, ২০২০ রাত ৩:৩০