somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ওমিক্রন করোনা ভাইরাস

২৯ শে নভেম্বর, ২০২১ সকাল ৭:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ওমিক্রন যেভাবে সারা পৃথিবীতে প্যানিক সৃস্টি করছে, তাতেই বুঝা যাচ্ছে যে বিভিন্ন সরকার/জনগন কিরকম ভাবে এই প্যানডেমিকে বদলিয়ে গিয়েছে। অবশ্য প্যানিক সৃস্টি করার মতই এই ভ্যারিয়েন্ট এর নতুন মিউটেশন দিয়ে তৈরী গঠন। এটা কি বেশী ইনফেক্টিভ হবে, নাকি ইমিউন সিস্টেম কে এভোয়েড করবে, নাকি সিভিয়ার ডিজিজ তৈরী করবে, নাকি কারেন্ট ঔষুধ এর কার্যকারীতা আর থাকবে না, নাকি সব ইফেক্ট একসাথে থাকবে, ইত্যাদি নানা ইমপোর্টেন্ট কোস্চেন তৈরী করছে। যেহেতু এখনই সাইন্টেফিক্যালি এসমস্ত প্রশ্ন এর উত্তর জানা যাচ্ছে না, তাই ব্যাপক অনিশ্চয়তার মাঝেই প্যানিক তৈরী হচ্ছে। কিন্তু করোনার পিছনের ইতিহাস বিজ্ঞান এর চোখে দেখলে, এরকম প্যানিক হওয়ার কোন দরকার আছে বলে মনে হয় না।

ভাইরাস এর কাজ ই হচ্ছে নতুন নতুন মিউটেশন তৈরী করে নিজেকে আরো ভালভাবে বিস্তার করা..বিশেষ করে আরএনএ ভাইরাস (করোনা) যারা যত বেশী মানুষের ভিতর সংক্রমন করতে পারবে তত বেশী মিউটেশন করার সুযোগ পায় (আরএনএ মিউটেশনকে কারেকশান করা হয় না)..তবে এটাও মাথায় রাখতে হবে যে ভাইরাসে এমন কোন মিউটেশন দিয়ে তৈরী হবে না যেটা তার হোস্টকে একেবারেই মেরে ফেলে...হোস্ট মারা গেলে তো ভাইরাস এর বংশবিস্তার আর কোন সুযোগ থাকবে না...সেই রকম এক্সট্রিম মিউটেশন হলেও নেচার সেই মিউটেশনকে সিলেক্ট করবে না, তাই আপনাতেই এর অবসান হবে। এখন যারা মারা যাচ্ছে, তারা সরাসরি ভাইরাস এর জন্য মারা যাচ্ছে না, তারা অন্যান্য ইফেক্টে মারা যাচ্ছে ভাইরাস দেহ থেকে ক্লিয়ার হয়ে যাওয়ার পরেই।
ভাইরাস ইভোলভড হচ্ছে নিজের বেচে থাকার জন্যই, তাই সে হয়ত এমন মিউটেশন তৈরী করবে যাতে ঔষুধ তাকে মারতে পারে না অথবা ভ্যাকসিন যাতে তাকে ইনফেক্ট করতে বাধা না দিতে পারে। ওমিক্রন এর মিউটেশন হয়ত তাকে বেশি বেশি ইনফেক্ট করার ক্ষমতা দিবে। তাই আমার মনে হচ্ছে ওমিক্রন হয়ত অনেক বেশী সহজেই মানুষকে ইনফেক্ট করতে পারবে কিন্তু অন্য ভ্যারিয়েন্ট থেকে সিভিয়ার ডিজিজ তৈরী করতে পারবে না। হয়ত সে এই একটা trait acquire করল (সহজেই ইনফেক্ট করা) কিন্তু অন্যদিকে হয়ত সিভিয়ার ডিজিজ করার ক্ষমতা কমে যাবে। তাই আমি বেশী চিন্তা করছি না...মনে হচ্ছে এটা হলেই ভাল হয়..। আমাকে যদি হাসপাতালে ভর্তি হতে না হয়, তাহলে কভিড হলেও চিন্তা নাই। ফ্লু এর মতই ওভারকাম করা যাবে। তবে সব কিছুর উত্তর ২-৩ সপ্তাহের মাঝেই জানা যাবে (বেশী ইনফেক্ট করার ক্ষমতা কিন্তু ক্ষতি করার ক্ষমতা কমে গিয়েছে কিনা এই ভ্যারিয়েন্ট এর অথবা নতুন কোন সিম্পটম হচ্ছে কিনা এই ভ্যারিয়েন্ট থেকে)

Vaccines that let the hosts survive but do not prevent the spread of the pathogen, allow the evolution of hotter pathogens to occur. This type of vaccine is often called a leaky vaccine. When vaccines prevent transmission, as is the case for nearly all vaccines used in humans, this type of evolution towards increased virulence is blocked. আমাদের দরকার এমন ভ্যাকসিন যেটা ইনফেক্ট করাই বন্ধ করবে কিন্তু বর্তমান এর কোন করোনা ভ্যাকসিন ই পুরাপুরি ভাবে ইনফেকশান বন্ধ করতে পারে না, তাই এমন নতুন নতুন ভ্যারিয়েন্ট বের হওয়ার ও সম্ভাবনা বেড়ে যাচ্ছে।এরকম নতুন নতুন মিউটেশান বানিয়ে ভাইরাস আসতেই থাকবে আর ভ্যাকসিন আর ঔষুধ এর আপডেট ও চলতে থাকবে। । তবে অরাল পিল আসলে এর প্রকোপ কিছুটা কমে আসবে।

উপরের ছবিতে দেখুন ভাইরাস এর স্পাইক প্রোটিন আর লাল অংশগুলিই হল ওমিক্রন এর নতুন মিউটেশন। আর সবুজ পেচানো ফিতার অংশ টা হল মানুষের ACE2 প্রোটিন যেটার সাথে ভাইরাস এর স্পাইক প্রোটিন বাইন্ড করে মানুষের শরীরের কোষে প্রবেশ করে। লক্ষ্য করে দেখবেন যে বেশ কয়েকটি লাল অংশ (মিউটেশান) দেখা যাচ্ছে স্পাইক প্রোটিন এর এমন যায়গায় যে অংশটি দিয়ে সে ACE2 প্রোটিন (সবুজ পেচানো ফিতা) এর সাথে বাইন্ড করে। তার মানে দাড়াচ্ছে যে, এমন ঔষুধ যেটা ভাইরাস এর এই অংশ টাকে 'ঢেকে' রাখতো যাতে ভাইরাস ACE2 এর সাথে বাইন্ড করতে না পারে, সেই ঔষুধ এর প্রভাবেই এই ভ্যারিয়েন্ট বের হয়েছে বলেই মনে হচ্ছে। আর এমন ঔষুধ ই হল Regeneron এবং Eli Lilly এন্টিবডি দিয়ে তৈরী ঔষুধ (যেটা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিয়েছিলেন)। হয়ত এই ঔষুধ এর প্রভাবেই এমন মিউটেশান হয়েছে যাতে এই ঔষুধ এর কার্যকারীতা আর না থাকে।
সময় ই বলে দিবে (২-৩ সপ্তাহ) এই ঔষুধ কি তার কার্যকারীতা হারিয়েছে ওমিক্রন এর বিরূদ্ধে। তবে কোম্পানীগুলি খুব সহজেই এবং খুব তাড়াতাড়িই ওমিক্রন স্পেসিফিক এন্টিবডি ঔষুধ তৈরী করতে পারবে।

ভ্যাকসিন কে এভোয়েড করার মত মিউটেশান ওমিক্রন এ এখনও নাই বলেই মনে হচ্ছে। আমার মনে হচ্ছে ভ্যাকসিন এর কার্যকারীতা কিছুটা কমলেও, ওমিক্রন বর্তমান ভ্যাকসিন গুলিকে একেবারেই নন ইফেক্টিভ বানাতে পারবে না। বানালেই এক মাসের মাঝেই ওমিক্রন স্পেসিফিক ভ্যাকসিন বাজfরে আসার জন্য তৈরী হয়ে যাবে কেননা এটাকে নতুন ভ্যাকসিন হিসাবে ধরা হবে না। মাত্র ১৪-১৫ জন মানুষের ভিতর পরীক্ষা করেই এর অনুমোদন পাওয়া যাবে। এর জন্য ফেজ ১, ২, ৩ (৫০-৬০ হাজার মানুষের উপর পরীক্ষা) করার দরকার হবে না। যেমন প্রতি বছর ফ্লু ভ্যাকসিন আপডেট হয়।

তিনটা বিষয় লক্ষ্যযোগ্য (প্লাস সাইড)
- অন্যান্য ভ্যারিয়েন্ট কে খুব সহজেই ল্যাবে ডিটেক্ট করা যায় না (কভিড ডিটেক্ট করা যায় কিন্তু কোন ভ্যারিয়েন্ট সেটা জানার জন্য পুরা জিনোম কে সিকোয়েন্স করতে হয় যেটা এক্সপেনসিভ এবং টাইম লাগে, অনেক দেশেই এটা করা সম্ভব ই না কেননা জিনোম সিকোয়েনসিং মেশিন ই নাই)। ডেল্টা কে বুঝতে না পারাতে খুব দ্রুত পুরো বিশ্বে এটা ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু ওমিক্রন কে যেভাবে পিসিআর দিয়ে ডিটেক্ট করা হয়, সেভাবেই ডিটেক্ট করা যাবে। নরমাল কভিড হলে এক রকম রেজাল্ট হবে আর ওমিক্রন হলে অন্যরকম রেজাল্ট আসবে সেইম স্যাম্পল থেকেই। তার মানে খুব সহজেই জানা যাবে কে কোথায় ওমিক্রন এ আক্রান্ত আর প্রতিকারও খুব তাড়fতাড়ি করা যাবে। ভাইরাস ট্র‌্যাক করা সহজ হবে, সব দেশে।

- সাউথ আফ্রিকার বিজ্ঞানীদের অভিনন্দন জানাতেই হয় এত আর্লি এই ভ্যারিয়েন্ট কে ডিটেক্ট করার জন্য। এত প্রাথমিক স্টেজে ধরা পড়াতে সব সরকার/বিজ্ঞানীরা তৈরী হয়ে যাচ্ছেন ভ্যারিয়েন্ট স্পেসিফিক রেসপন্স করার জন্য।

- আর আগেই বলেছি, ওমিক্রন স্পেসিফিক ভ্যাকসিন বাজারে চলে আসতে বেশী সময় নিবে না, কেননা mRNA vaccineকে আপডেট করা খুব সহজ। অলরেডি মর্ডানা আজ ঘোষনা দিয়েছে সেই রকম ভ্যাকসিন বাজারে আনার। যেহেতু এটা নতুন ভ্যাকসিন না, তাই ২ মাসের মাঝেই এটা বাজারে চলে আসবে বলে বিশ্বাস। যদি বেশী লিথ্যাল হয় এই ভ্যারিয়েন্ট, আমি গত সপ্তাহে বুস্টার নেওয়ার পরও আবার ওমিক্রন ভ্যাকসিন নিতে একবার ও দ্বিধা করব না)

শেষ কমেন্ট হল যে ভয় পাওয়ার কোন কারন নাই...নানা ব্লগ সাইট ও অন্যান্য বিজ্ঞানী/ডাক্তার দের কথা শুনে মনে হচ্ছে এই ভ্যারিয়েন্ট মাইল্ড হবে (হয়ত বেশী বেশী মানুষকে ইনফেক্ট করবে কিন্তু মারাত্মক হবে না)


সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে নভেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:৫০
১৯টি মন্তব্য ১৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছায়ানটের ‘বটমূল’ নামকরণ নিয়ে মৌলবাদীদের ব্যঙ্গোক্তি

লিখেছেন মিশু মিলন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



পহেলা বৈশাখ পালনের বিরোধীতাকারী কূপমণ্ডুক মৌলবাদীগোষ্ঠী তাদের ফেইসবুক পেইজগুলোতে এই ফটোকার্ডটি পোস্ট করে ব্যঙ্গোক্তি, হাসাহাসি করছে। কেন করছে? এতদিনে তারা উদঘাটন করতে পেরেছে রমনার যে বৃক্ষতলায় ছায়ানটের বর্ষবরণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বয়কটের সাথে ধর্মের সম্পর্কে নাই, আছে সম্পর্ক ব্যবসার।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৫০


ভারতীয় প্রোডাক্ট বয়কটটা আসলে মুখ্য না, তারা চায় সব প্রোডাক্ট বয়কট করে শুধু তাদের নতুন প্রোডাক্ট দিয়ে বাজার দখলে নিতে। তাই তারা দেশীয় প্রতিষ্ঠিত ড্রিংককেও বয়কট করছে। কোকাকোলা, সেভেন আপ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষের জন্য নিয়ম নয়, নিয়মের জন্য মানুষ?

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৪৭



কুমিল্লা থেকে বাসযোগে (রূপান্তর পরিবহণ) ঢাকায় আসছিলাম। সাইনবোর্ড এলাকায় আসার পর ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি আটকালেন। ঘটনা কী জানতে চাইলে বললেন, আপনাদের অন্য গাড়িতে তুলে দেওয়া হবে। আপনারা নামুন।

এটা তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন খাঁটি ব্যবসায়ী ও তার গ্রাহক ভিক্ষুকের গল্প!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৪


ভারতের রাজস্থানী ও মাড়ওয়ার সম্প্রদায়ের লোকজনকে মূলত মাড়ওয়ারি বলে আমরা জানি। এরা মূলত ভারতবর্ষের সবচাইতে সফল ব্যবসায়িক সম্প্রদায়- মাড়ওয়ারি ব্যবসায়ীরা ঐতিহাসিকভাবে অভ্যাসগতভাবে পরিযায়ী। বাংলাদেশ-ভারত নেপাল পাকিস্তান থেকে শুরু করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×