হাশেম সাহেব আমেরিকাতে থাকেন অনেক দিন। মাঝে মাঝে উনার বাড়ীতে উনার কিছু বড় লোক আত্মীয় স্বজন বেড়াতে আসে। তেমনি ২০০১ সনে উনার এক দুর সম্পর্কের আত্মীয় রতন সাহেব বেড়াতে আসেন। হাশেম সাহেবের দাদা আর রতন সাহেবের দাদা হলেন আপন ভাই-ভাই। তবে রতন সাহেব সবার অজান্তে বড় একটা ক্রাইম করে চুপিসারে আমেরিকা বেড়িয়ে বাংলাদেশে ফেরত চলে যান। হাশেম সাহেবের বাড়ীর কাছে হাইকিং ট্রেইলে একজন নারী রেইপ হন কিন্তু সন্ধ্যার অন্ধকারে রেপিস্ট কে চিনতে পারেন নাই মহিলা। পুলিশ অনেক খুজেও কোন ক্রিমিনাল কে গ্রেপ্তার করতে পারে নাই। তবে রেইপ কিট থেকে সিমেন সংগ্রহ করে স্টোরেজে রেখে দেওয়া আছে যাতে ভবিষ্যতে উন্নত কোন টেকনজি আসলে তা দিয়ে রেপিস্ট কে সনাক্ত করা যায়।
২০১২-১৩ সনের থেকে আমেরিকাতে অনেক লোক ই নিজেদের ডিএনএ ancestry.com; 23andme.com নামক ওয়েবসাইটে জমা দেয় নিজেদের পূর্বপুরুষ কে জানার জন্য আর সাথে সাথে তার কোন জেনেটিক রোগ হওয়ার সম্ভবনা কত ইত্যাদি জানার জন্য। আবার নতুন একটা ওয়েব সাইট GEDMatch তৈরী হয় যেখানে যে কেউ তার ancestry.com; 23andme.com থেকে পাওয়া ডিএনএ জমা দিলেই তারা বলে দেয় আপনার কোন লস্ট আত্মীয় যাকে হয়ত আপনি চিনেন না, তাকে খুজে এনে দেয়, অনেকের ই হয়ত বিবাহ বহির্ভুত সন্তান থাকে কিন্তু লুকিয়ে রাখে, কিন্তু ডিএনএ ম্যাচ করে আপনার কোন step brother/sister আছে কিনা তাও বের করে তারা বলে দেয়। আজ পর্যন্ত্য প্রায় ১২-১৩ লাখ লোকজন তাদের ডিএনএ GEDMatch আপলোড করেছে। আর মাত্র ৩০ লাখ হলেই, ১০০% আমেরিকান দের আত্মীয় স্বজন কে ডিটেক্ট করা যাবে ডিএনএ ম্যাচ থেকে। এখানে দেখতে পারেন Genealogy databases could reveal the identity of most Americans
তো হাশেম সাহেব ও একবার উনার ডিএনএ GEDMatch এ আপলোড করেছিলেন একটা কিউরিসিটি থেকেই, আর তাতেই পুলিশ পৌছে যায় হাশেম সাহেবের কাছে যেহেতু ২০০১ সনের রেপিস্ট এর সিমেনে যে ডিএনএ পাওয়া গিয়েছিল, সেটার সাথে হাশেম সাহেবের ৩.৩% ম্যাচ হয় (মিল অনুযায়ী রেপিস্ট হল উনার সেকেন্ড কাজিন)। পুলিশ উপরের ছবির ন্যায় হাশেম সাহেবের বংশের genealogy ম্যাপ করে দেখে যে রতন সাহেব ২০০১ সনে ক্রাইম সিনের আছে পাশে ছিলেন। তারপর বাংলাদেশে গিয়ে রতন সাহেবের অজান্তে উনার সিগারেট এর বাট থেকে ডিএনএ নিয়ে দেখা গেল যে ১০০% ম্যাচ রেপিস্ট এর ডিএনএ এর সাথে। ২০০১ সনের ক্রাইম ২০২০ সনে এসে সলভড হল।
(উপর এর ঘটনা কাল্পনিক)
Higher studies এ এখন Forensic genealogy সাবজেক্ট হিসাবে খুবই লেটেস্ট এবং হাই ডিমান্ড। এমন সময় আসবে যে সকল দেশে বাচ্চা জন্ম গ্রহন করার সাথে সাথেই ডিএনএ কে ন্যাশনাল ডাটা বেইসে রাখা হবে। এই ডিএনএ এর নানাবিধ ব্যবহার হবে (শুধু মাত্র ক্রিমিনাল/ রেইপ কেইস সলভ না) - সেটা বলতে গেলে আরেক টা পোস্ট দিতে হবে। বাংলাদেশে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে মনে হয় Forensic genealogy পড়ানো হয় না। পড়ানো উচিত (ক্রিমোনলজি, বায়োলজি, আইন বিভাগ এ)। আপনি ইচ্ছে করলে অনলাইনে Forensic genealogy certification course করতে পারেন। যারা বিদেশে পড়তে আসতে চায় আর যদি এই বিষয়ে আগ্রহ দেখায়, ফেভারএবল রেসপেন্স পেতে পারেন। আপনি আপনার সন্তানদের এই বিষয়ে আগ্রহী করে তুলতে পারেন। এই বিষয় টা এখন খুব কম লোকই জানে কিন্তু এই টপিক এর ব্যবহার/এপ্লিক্যাশন অনেক
সাগর-রুনির ক্রাইম সিন থেকে কিলার এর ডিএনএ কিন্তু পাওয়া গিয়েছে... কিলার এর ডিএনএ দিয়ে ভবিষ্যতে হয়ত বাংলাদেশীরা কিলার এর আত্মীয়-স্বজন কে খুজে পাওয়া যাবে।
পাদটীকা: বাংলাদেশে দেখলাম জমজ ভাই জমজ বোন কে বিয়ে করেছে!!!! এখন এই দুই ফ্যামিলির ছেলে মেয়ে রা তো কাজিন না হয়ে বায়োলজিক্যালি আপন ভাই/বোন হবে। আর যদি কাজিন-কাজিন প্রেম হয়ে যায়......
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মার্চ, ২০২২ সকাল ৯:০৯