somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

Fusion Energy Breakthrough

২২ শে ডিসেম্বর, ২০২২ সকাল ৮:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


যখন থেকেই বিজ্ঞানীরা বুঝতে পারলেন যে সুর্য্য কিভাবে ন্যাচারালী এমন এনার্জী 'তৈরী' করে যে, সেই এনার্জী দিয়ে এত লক্ষ্ কোটি মাইল দুর এর পৃথিবীতে মানুষ বেচে আছে সুর্য্যের এই এনার্জী ইউজ করে, তখন থেকেই প্রচেস্টা ছিল, সেই একই পদ্ধতি দিয়ে পৃথিবীতই এই এনার্জী 'উৎপন্ন' করা।কেননা এভাবে ন্যাচারেলী শক্তি 'উৎপাদন' করতে পারলে, মানবজাতিকে তাহলে এত তেল, পেট্রোল, কয়লা পুড়িয়ে, পরিবেশকে দুষিত করে বিদ্যুত উৎপাদন করতে হবে না। কিন্তু সুর্য্যের মত এত টেম্পেরেচার আর প্রেসার যেটা দিয়ে সুর্য্য হাইড্রোজেন এটম এর নিউক্লিয়াস ফিউশন এর পর, এটম এর ভর থেকে যে এনার্জী উৎপন্ন করছে সেটা পৃথিবীতে রিপ্লিকেট করা সম্ভব হলেও ইউজএবল শক্তি উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছিল না কেননা এত তাপ এবং প্রেসার বানাতে যেটুকু শক্তি প্রয়োগ করা হচ্ছিল তার চেয়েও কম শক্তি উৎপাদন হচ্ছিল (নেট লস)।

কেন এত তাপ এবং শক্তির দরকার হয় দুইটা হাইড্রোজেন এটম এর নিউক্লিয়াস কে একত্র (ফিউশন) করাতে...। কারন দুইটা এটম এর ই নিউক্লিয়াসই পজিটিভলি চার্জড, সো তারা রিপেল করে একে অপরকে (ফিউশন হয় না)। কিন্তু অনেক তাপ এবং প্রেসার এ যদি দুটা পজিটিভলি চার্জড নিউক্লিয়াস কে খুব কাছাকাছি নিয়ে আসা যায়, তখন নিউক্লিয়ার ফোর্স এই রিপেল হওয়ার ফোর্সকে অতিক্রম করে নিউক্লিয়াস ফিউশন করতে পারে। আর এভাবেই সুর্য্যের মাঝে অনবরত ফিউশন এনার্জী তৈরী হচ্ছে।

ফিউশন হলে কেন শক্তি উৎপাদন হবে??? এখানে আমরা সবাই জানি আইনস্টাইন এর সেই বিখ্যাত ইকুয়েশন E= mc^2 এর কথা। m= mass (ভর) যখন শক্তি তে রূপান্তরিত হয় তখন এনোরমাস পরিমান এর শক্তি তৈরী হয় কেননা এখানে ভরকে আলোর গতি দিয়ে এর স্কোয়ার দিয়ে মাল্টিপ্লাই করা হচ্ছে (১৮৬,০০০ মাইল/সেকেন্ড)। ছোট একটা কলম এর মাঝে যত ভর আছে, সেটার অনুগুলিকে ভেংগে যদি শক্তিতে রূপান্তরিত করা যায়, সেই শক্তি দিয়ে আপনি পুরা পৃথিবী কে দুইভাগ করতে পারবেন (হাইড্রোজেন বোম্ব)।

ফিউশন এর সময় দুইটা অনুর ভর ২+২= ৪ না হয়ে ৩.৯০ এর ভর এর নতুন অনু তৈরী হয়। এই যে 0.10 ভর 'হারিয়ে' গেল সেই ভরই শক্তি তে রূপান্তরিত হয়। একই নিয়ম হেভি এটম fission এর সময়ও হয়। ভারী এটম ভেংগে কিছুটা হালকা এটম এর নতুন অনু তৈরী হয় আর যে ভর টা 'লস' হয় সেটাই শক্তিতে রূপান্তরিত হয়.। যেমন হয় এটম বোমা, পারমানবিক বিদ্যুত কেন্দ্রে এর ক্ষেত্রে। কিন্তু fission দিয়ে শক্তি বানাতে কিছুটা বিপদ জনক কেননা অনেক রেডিওএক্টিভ বর্জ্য তৈরী হয় যেটা প্রায় অনন্তকাল ধরে সংরক্ষন করা লাগে। কিন্তু Fusion Energy অনেক বেশী শক্তি তৈরী করে Fission energy এর চেয়েও এবং শর্ট লিভড রেডিওএক্টিভ বর্জ্য তৈরী করে। নীচে বিবিসি এর একটা ছবি ব্যাপারটাকে বুঝাচ্ছে কিভাবে এই শক্তি দিয়ে তাপ উৎপাদন করে বিদ্যুত বানানো হয়



এত বছর এর সাধনার পর গত সপ্তাহে আমেরিকার ন্যাশনাল ল্যাব (Lawrence Livermore national laboratory) ১৯২ টা লেসার বিম ইউজ করে প্রায় ১০০,০০০,০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপ (সুর্য্যের কেন্দ্রে এর তাপের চেয়েও বেশী) এবং পৃথিবির নরমাল প্রেশার এর চেয়ে ১০০,০০০,০০০,০০০ গুন বেশী প্রেশার তৈরী করে হাইড্রোজেন এটম দের ফিউশন দ্বারা নেট গেইন (input 2.05 megajoules (MJ) of energy to the target, which had then produced 3.15 MJ of fusion energy output) শক্তি তৈরী করতে সক্ষম হয়েছে। বিস্তারিত দেখুন বিবিসি এর প্রতিবেদনে
Fusion Energy Breakthrough

এটা মানব জাতির জন্য এর জন্য একটা বিরাট অগ্রযাত্রা কেননা এমন লিমিটলেস শক্তি উৎপাদন (যেখানে কোন কয়লা/তেল পোড়ানো ছাড়া, ড্যাম, বর্জ্য ছাড়া, কার্বন ডাই অক্সাইড এর নিস:রন ছাড়া) হলে পুরা শক্তি উৎপাদন এর প্রক্রিয়া টা হয়ে উঠবে গ্রীন টেকনোলজি..। with just a few grams of these reactants, it is possible to produce a terajoule of energy, which is approximately the energy one person in a developed country needs over sixty years. About 1 out of every 5,000 hydrogen atoms in seawater is in the form of deuterium. This means our oceans contain many tons of deuterium. When fusion power becomes a reality, just one gallon of seawater could produce as much energy as 300 gallons of gasoline (US Department of Energy website)

ভবিষ্যতে যে আরব দেশের একচেটিয়া তেলের ব্যবসায় ধ্বস নামতে পারে, তা বলাই বাহুল্য।এই ভাবে শক্তি উৎপাদন এর জন্য শয়ে শয়ে কোম্পানী উঠে পড়ে লেগেছে এই টেকনোলজির পিছনে...
এখানে দেখুন
Fusion Energy start ups pour billions of dollars.
ফিউশন এনার্জী নিয়ে আরো জানতে এখানে দেখুন
What is Fusion, and Why Is It So Difficult to Achieve?

বিজ্ঞান এর এমন অভূতপূর্ব অগ্রযাত্রা নিয়ে পশ্চিমা বিশ্বের সংবাধমাধ্যম, টিভি, সোশাল মিডিয়াতে রীতিমত আলোড়ন তৈরী করেছে, কিন্তু বাংলাদেশ এখনও বুদ হয়ে আছে পরীমনি কি মেসিকে তার ক্রাশ বলেছে কিনা তাই নিয়ে।

আপনার ছেলে-মেয়েদের কিন্তু উৎসাহ দিতে ভুলবেন না এই টেকনোলজি নিয়ে পড়াশুনা করতে।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২২ দুপুর ১২:০৮
১১টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইরান ইসরাইলের আক্রমণ-প্রতি আক্রমণ আর আমাদের সুন্নী-শিয়া মুমিন, অ-মুমিন কড়চা।

লিখেছেন আফলাতুন হায়দার চৌধুরী, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩০

(ছবি: © আল জাযীরা মিডিয়া নেটওয়ার্ক)

শ্রদ্ধেয় ব্লগার সামিউল ইসলাম বাবু'র স্বাগতম ইরান পোষ্টটিতে কয়েকটি কমেন্ট দেখে এই পোষ্ট টি লিখতে বাধ্য হলাম।
আমি গরীব মানুষ, লেখতে পারিনা। তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:৩৯




আমরা পৃথিবীর একমাত্র জাতী যারা নিজেদের স্বাধীনতার জন্য, নিজস্ব ভাষায় কথা বলার জন্য প্রাণ দিয়েছি। এখানে মুসলিম হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান চাকমা মারমা তথা উপজাতীরা সুখে শান্তিতে বসবাস করে। উপমহাদেশের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্যা লাস্ট ডিফেন্ডারস অফ পলিগ্যামি

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০


পুরুষদের ক্ষেত্রে পলিগ্যামি স্বাভাবিক এবং পুরুষরা একাধিক যৌনসঙ্গী ডিজার্ভ করে, এই মতবাদের পক্ষে ইদানিং বেশ শোর উঠেছে। খুবই ভালো একটা প্রস্তাব। পুরুষের না কি ৫০ এও ভরা যৌবন থাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রিয় কাকুর দেশে (ছবি ব্লগ) :#gt

লিখেছেন জুন, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৩



অনেক অনেক দিন পর ব্লগ লিখতে বসলাম। গতকাল আমার প্রিয় কাকুর দেশে এসে পৌছালাম। এখন আছি নিউইয়র্কে। এরপরের গন্তব্য ন্যাশভিল তারপর টরেন্টো তারপর সাস্কাচুয়ান, তারপর ইনশাআল্লাহ ঢাকা। এত লম্বা... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেরত

লিখেছেন রাসেল রুশো, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:০৬

এবারও তো হবে ইদ তোমাদের ছাড়া
অথচ আমার কানে বাজছে না নসিহত
কীভাবে কোন পথে গেলে নমাজ হবে পরিপাটি
কোন পায়ে বের হলে ফেরেশতা করবে সালাম
আমার নামতার খাতায় লিখে রেখেছি পুরোনো তালিম
দেখে দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×