আমরা প্রায়ই খবরে দেখি যে কক্সবাজার/সেন্ট মার্টিন এর সমুদ্র সৈকতে এর 'গুপ্ত খালে' পড়ে জোয়ার এর টানে সমুদ্রে টেনে নিয়ে অনেকের মৃত্যু হওয়ার খবর। কিছু সঠিক বিষয় না জানাতে এরকম মৃত্যু হতেই আছে। তাই কিভাবে গুপ্ত খাল কে চিনতে হয় এবং এই রকম পরিস্হিতি তে কি করতে তা জানাতেই এই পোস্টের অবতারনা। উপর এর ছবিতে গোলাকৃত এলাকাতেই লুকায়িত অবস্হায় আছে এই খাল যেটাকে ইংরেজীতে বলে রিপ টাইড- Rip Tide (উল্টা দিকের জোয়ার)। পানিকে এমন শান্ত দেখে (দুপাশের তুলনায়), অনেকেই না বুঝে এই পানিতে নেমে মৃত্যুর মুখামুখি হন। আর যদি আপনাকে টেনে নিয়ে যেতে থাকে, আপনাকে শান্ত হয়ে সমুদ্র তটের প্যারালেল হয়ে সাতার কাটতে হবে। ভয় পেয়ে তীরের দিকে সাতার দিকে ফিরে যাবার চেস্টা করা বৃথা কেননা এই জোয়ার কে আপনি সাতার দিয়ে অতিক্রম করতে পারবেন না। বেশীর ভাগ লোকই মারা যায় সমুদ্রের জোয়ার এর সাথে 'যুদ্ধ' করতে যেয়ে শক্তি ক্ষয় হয়ে। Please don't FIGHT the Ocean. কিন্তু যদি আড়াআড়ি ভাবে সাতার দেন, তাহলে খুব সহজেই এই জোয়ার থেকে বের হয়ে আসতে পারবেন। নীচের ছবি টা দেখুন..।আমাদের সচেনতা টা বৃদ্ধি করতে হবে ..অনলাইন, মিডিয়া, বীচ কৃর্ত্তপক্ষ এসব ছবি কে বীচে টাংগিয়ে (বানান পারি না) রাখতে পারে সচেনতার জন্য
২। বাংলাদেশে এখন কভিড নিয়ে তেমন কোন সচেনতা নাই কিন্তু কভিড কিন্তু খুবভাল ভাবেই জাকিয়ে বসেছে পৃথিবীতে। যাদের কভিড হয়েছে বিশেষ করে একবার এর বেশী, তাদের মাঝে একটা বড় অংশই লং কভিড এ ভুগছেন এবং এর প্রভাবে হার্ট এটাক এবং অন্যান্য কারনে খুব কম বয়সে অনেকে মারা ও যাচ্ছেন। লং কভিড এ আক্রান্ত হলে আপনার কোন এনার্জিই থাকে কোন কাজ করার। অলওয়েজ টায়ার্ড/fatigue, brain fog, dementia, শোয়া থেকে উঠে দাড়ালেই হার্ট রেইস আরম্ভ করা ইত্যাদি নানাবিধ উপসর্গ দেখা দেয়। এখনও কোন ঔষুধ বা কারন ঠিক ভাবে জানা যাচ্ছে না আর মিলিয়ন মিলিয়ন লোককে চাকরী হারিয়ে ঘরে বসে থাকতে হচ্ছে। তবে দুটা কারন নিয়ে বেশী গবেষনা হচ্ছে। একটা হল ব্লাড ক্লট (মাইক্রো ক্লট) যাতে আপনার রক্ত জমাট বেধে যাচ্ছে....। এর একটা সহজ রিমেডি হিসাবে অনেকেই বলছেন যে জাপানিজ হারবাল নাত্তোকাইনেজ (Nattokinase) যেটা জমাট রক্তকে ভাংতে পারে (অনেকটা এসপিরিন এর মত), সেটা খেয়ে লং কভিড থেকে অনেকটা মুক্ত হয়েছেন। (দুই বটল কিনে বাসার ঔষুধ কেবিনেটে 'মজুত' করে রেখেছি- দরকার হলে ইউজ করা যাবে)। রক্ত পরীক্ষায় ডি-ডাইমার এর পরিমান দেখে ক্লট আছে কিনা জানা যায়। আরেকটা রিসেন্ট বিজ্ঞান গবেষনা বের হয়েছে যেটা আরো বেশী ভাল ভাবে লং কভিড কে এক্সপ্লেইন করতে পারছে। এই গবেষনায় দেখা গেছে যে, নিকোটিন শরীর এর যে প্রোটিন এর সাথে বেধে আপনাকে সিগারেট কে 'উপভোগ' করায় (nAChRs), সেই সেইম প্রোটিন এর সাথে কভিড ভাইরাস এর মেইন প্রোটিন টা (এস প্রোটিন) বেধে থাকে আর তাই nAChRs অন্য কাজকে বাধা গ্রস্হ করে (The nAChR is responsible for coordinated neuronal network interaction)। তবে মজার কথা হল এই প্রোটিন এর সাথে ভাইরাস প্রোটিন আটকে থাকার শক্তি সিগারেট এর নিকোটিন আটকে থাকার শক্তি এর চেয়ে প্রায় ১০০ গুন কম। তার মানে যদি শরীরে নিকোটিন ঢুকানো যায়, যার লং কভিড আছে, তাহলে সেই নিকোটিন ভাইরাস এর প্রোটিন কে nAChR থেকে খুব সহজেই সরিয়ে দিয়ে নিকোটিন নিজে সেই জায়গা টা দখল করতে পারে। এই জন্যই এখন দেখা যাচ্ছে যে অনেক লোক যারা লং কভিড আছে, তারা নিকোটিন প্যাচ নিচ্ছেন এবং টুইটারে দেখবেন যে বেশীর ভাগ ইউজার বলছে তাদের লং কভিড এখন প্রশমিত অবস্হায় আছে নিকোটিন প্যাচ ইউজ করার পর।
৩। আরেকটা গবেষনায় (৬০ টা গবেষনার এর সামারী) দেখা গেছে ডাইবেটিক এর ঔষুধ মেটফরমিন (খুব সস্তা আর টাইম টেস্টেড ওয়েল টলারেটেড ড্রাগ) , কভিড ভাইরাস কে ধ্বংস করতে বিশেষ ভাবে পারদর্শী এবং লং কভিডে আক্রান্ত হওয়ার চান্স মোর দ্যান ৪০% কমিয়ে দেয়...যারা মেটফরমিন রেগুরাল নেন, তারা মনে করে ভিটামিন বি-১২ এক্সটা হিসাবে খাবেন কেননা মেটফরমিন অন্ত্রে বি-১২ কে এবজরভ করতে দেয় না। তবে সাধারন বি-১২ খাবেন না, যেটা বিশেষ ভাবে মডিফায়েড সহজ এবজর্ভ হওয়ার জন্য সেটা খাবেন। বি-১২ এর অভাবে রক্ত শুন্যতা এবং ডিমিনশিয়া হয়ে থাকে।
৪। সেদিন ইউটিউব এ দেখছিলাম কিভাবে প্রিডায়াবেটিস থেকে ধীরে ধীরে ডায়াবেটিক এর দিকে ধাবিত হয়। একটা ভিডিও তে দেখলাম যে ১০০ গ্রাম সাদা ভাত খাওয়ার এক ঘন্টা পরে প্রায় ৮০ পয়েন্ট এর সুগার (surge) হচ্ছে কিন্তু ব্রাউন রাইস এর ভাত খাওয়ার পর মাত্র ১৫ পয়েন্ট এর সার্জ হচ্ছে ১ ঘন্টা পর। আমার পদ্ধতি হল কোন সুগার জাতীয় খাওয়ার পর জাস্ট ১০ মিনিট হেটে আসুন, দেখবে অনেক কম সার্জ হচ্ছে। বেস্ট হচ্ছে, মিস্টি জাতীয় খাওয়ার আগে দু চামচ এ্যাপল সাইডার ভিনিগার এক গ্লাস পানিতে গুলিয়ে খেয়ে নেওয়া। যে কোন খাওয়ার গ্লাইসেমিক ইনডেস্ক প্রায় ৩০-৩৫% কমাতে পারে যদি আপনি খাওয়ার সাথে অথবা আগে/পরে একটু ভিনিগার মিশিয়ে নেন। সালাড ড্রেসিং এ ভিনিগার মাস্ট....।
৫। হিট স্ট্রোক এখন অনেক বেড়ে গিয়েছে....এর থেকে বাচতে পানি/স্যালাইন, লুজ কাপড়, ছায়ায় থাকা ইত্যাদি সবাই জানে। বাচ্চাদের অনেকেই এখন স্মার্ট ফোন ইউজ করে..নানাবিধ এ্যাপ (ফ্রি এবং সাব্সক্রাইব) পাওয়া যাচ্ছে যে সময় করে আপনাকে আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী পানি খাওয়ার জন্য এলার্ম দিবে। কতটুকু এবং কখন। নীচের লিং এ এমন উপকারী ৯টা এ্যাপ এর লিং দেওয়া হল
Water/Hydration Apps
৬। Take regular stretch breaks: If you have a sedentary job or spend long hours sitting, take regular breaks to stretch your muscles. Simple stretches can help alleviate tension, improve circulation, and reduce the risk of muscle stiffness or discomfort.
৭। Use the 20-20-20 rule for eye strain: If you spend a lot of time looking at screens, follow the 20-20-20 rule. Every 20 minutes, take a 20-second break and look at something 20 feet away. This helps reduce eye strain and fatigue.
৮। Practice deep breathing exercises: Deep breathing can help reduce stress, promote relaxation, and improve overall well-being. Set aside a few minutes each day to focus on deep, slow breaths, inhaling through your nose and exhaling through your mouth.
আমার এসব পোস্ট দেখে রাজীব নুর বলবেন যে এগুলি বাল্যখিল্য পোস্ট..মনে আছে পায়ে মোজার দাগ দেখে আপনার কিডনী যে ডাইবেটিস এ ফেইল করছে সেটা বলার পোস্টেও উনি আমাকে বলেছিল এসমস্ত ছেলেমানুষী পোস্ট আমাকে মানায় না......উনি যদি প্রয়াত নুরু ভাই এর কমেন্ট পড়তেন, তাহলে দেখতে পারতেন যে তিনি সেই পোস্ট পড়ে হালকা ভাবে কমেন্ট করেছিলেন যে মোজার দাগে উনি অনেক চিন্তিত.....
৯। এবার পোস্টে অপ্রাসংগিক নিজের কথা---- ফান এবং রেকর্ড স্ট্রেইট করার জন্য। সৃতি (বানান পারিনা) কথা। পিএইচডি ডিগ্রী লাভ করার পরই এইম ইন লাইফ হয়ে উঠে যে আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হতে হবে। পাশ করে ৬-৭ মাসের মাথায় প্রথম পোস্ট ডক এর সময়ই প্রথম ইন্টারভিউ পাই নর্থ ডাকোটা স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে। বিজ্ঞান নিয়ে 'জ্ঞানগর্ভ' কথা বার্তার পর, আমাকে প্রশ্ন করল হোয়াই নর্থ ডাকোটা?? আমিও কায়দা করে তাদের কয়েকজন প্রফেসর এর নাম বললাম যে এদের গবেষনা আমি খুব পছন্দ করি, যদি এখানে আসতে পারি তাহলে এদের সাথে কলাবরেশন করা যাবে ...হেন তেন..হাবিজাবি বলে শেষ করলাম। কথা শেষ করে, আবার বললাম, এতক্ষন তো আমি একাডেমিক কারন বললাম কেন তোমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরী করতে চাই, তোমরা যদি অনুমতি দাও তবে কিছু পার্সোনাল কারনও বলতে চাই। অনুমতি পেয়ে বললাম...আমি এমন একটা দেশ থেকে এসেছি, যে দেশের মানুষেরা আমেরিকার দুইটা বিশ্ববিদ্যালয় কে খুব ভালভাবে চেনে- একটা হল হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয় আর আরেক টা হল নর্থ ড্যাকোটা বিশ্ববিদ্যালয়..। আমার কথা শুনে তারা আরো ইলাবোরেট করতে বলল। আমি বললাম তোমাদের ফার্গু শহরে কি হোটেল গ্রেভার ইন আছে না, তারা বলল হ্যা আছে তো, আমি বললাম সেখানে কি একজন বোহেমিয়ান টাইপ লোক আছে যে সাপ নিয়ে হোটেলে থাকে, তারা বলল যে হ্যা থাকে সে তো খুব বিখ্যাত এখানে...তারা জানতে চাইল আমি কিভাবে জানি...তখন বললাম আমাদের একজন লেখক যে হোটেল গ্রেভার ইন কে বাংগালীদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন...বললাম পারলে ট্রান্সলেট করে হুমায়ন আহমেদ এর হোটেল গ্রেভার ইন টা পড়ে নিও....আমারও বেড়ে উঠা হয়েছে হুমা্যুন পড়েই ....এই শহরে থাকতে পারলে হুমা্যুন আহমেদ এর চোখেই দেখা হবে তোমার বিশ্ববিদ্যালয় কে। ইন্টারভিউ থেকে বের হয়ে পরের সেশন এর আগে সময় নিয়েই বেড়িয়ে পড়লাম...হোটেল গ্রেভার ইন এর দিকে.....।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জুন, ২০২৩ দুপুর ১২:৫২