সারাটা দিন কেমন যেন ছোটাছুটি ।অথচ তেমন কাজ কিছুই হচ্ছে না।উঠি উঠি করে উঠলাম সকাল ৮.৩০এ। ভেবেছিলাম ঠিক সময়ে ইস্কুলে যাবো। কোথায় কি? উল্টে আদ ঘণ্টা দেরি বাড়ি থেকেই বেরোলম ১১.১০ এ । এরপর গ্রামের লোকেরা না আমাকে রাস্তার ধারে কান ধরে দার করিয়ে রেখে দেয়।
গ্রামের লোকেরা না দিলেও পাড়ার লোকেদের দেওয়া উচিত। এই সেদিনও মোরের মাথায় ফোরসে বেরুতে গিয়ে একটা রিক্সাতে গিয়ে মারলাম।আর আজ মারলাম একটা কাগজ কুড়নো বুড়োকে। সেদিন না হয় রিক্সা অয়ালার কিছু দোষ ছিল। যথেষ্ট জোরে ঔ আসছিল। তাই বেচারা কাচুমাচু মুখে আমার পিছু পিছু সাইকেল সারাবার দোকান পর্যন্ত এসে ছিল।নিজের গ্যাঁটের টাকা পর্যন্ত বার করে ক্ষতিপূরণ দিতে চেয়াছিল।
কিন্তু আজ কের বেসির ভাগ দোষটায় আমার। প্রথমত জোরে জাচ্ছিলাম। তারপর ব্রেক কম। তারওপর আবার চোখ ও মন ফোনে। লোকটার পা ছড়ে গিয়েছিল। দেখলাম কালো রক্ত গড়াচ্ছে। হাঁটুর অল্প নিচ থেকে। ওনাকে বসানো হল রানুদের বারান্দায় । কাছেই কোথাও মিরাজ ছিল। একটা মগে করে পানি এনএ দিল। আমার ব্যাগে দুটো ব্যান্ড এইড ছিল । সেটা ওনার পায়ে লাগিয়ে দিলাম। উনি উঠে প্রথমে একটু খোঁড়ালেন। তারপর আবার সিধে হয়ে বস্তাটা তুলে নিয়ে হাটা জুড়ে দিলেন।
এটা নেহাত আমর পারা বলে আমি পার পেয়ে গেলাম।টুকটুকির আব্বা শুধু একবার মৃদু ভাবে বলল গড়ানের মুখটাতে দেখে নামতে। মিরাজ তো একসময় আমার চাত্র ছিল। ও পুরো সাফাই গাইল আমার হয়ে। বাঁকের মুখ তো , অনেকেই কন্ট্রোল হারিয়ে ফেলে। অর্ঘ্যর মা অঙ্গনওয়ারী থেকে ফিরছিল। তার সমস্ত সহানুভূতিটাই গেল আমার দিকে ।দেরি হয় হোক। বার বার করে বলল আমায় সাবধানে দেখে যেতে।
লোকটা কিন্তু একটা কথাও বলেনি। মুখে উহ পর্যন্ত না। বসিয়ে দিয়েছি বসেছে। জল দিয়েছি ধুয়েছে। ব্যান্ডেজ লাগিয়ে দিয়েছি নিয়েছে। আর সব কিছু হয়ে গেলে আবার নিঃশব্দে চলে গেছে তার পথে।
যেতে যেতে ভাবছিলুম একদিন আমার সমস্ত রাজকার্য ফেলে ওনাকে আমার বাইকের পিছনে বসিয়ে সারাদিন ওনার সাথে কাগজ কুড়লে কেমন হয়?