somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মানবিক বিপর্যয়ে পশুদের কোনো দায়ভার নিতে হয়না।

২৭ শে মে, ২০১৪ রাত ১১:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

২০১২ সালে কুমিল্লার মেয়র নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী আফজাল খান ঠাকুর পাড়া এবং ব্রাহ্মণ পাড়ার ৪০টি পরিবারকে উচ্ছেদ করে তাদের জমি জবর দখল করে নিয়েছেন। বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে খুব একটা আলোড়ন তোলার মত কোন ঘটনা নয়।এই হীরক রাজার দেশে ৭/৮টা লাশ পড়ার আগে সেটাকে ঘটনা হিসেবে দেখার আগ্রহ আমাদের নষ্ট হয়ে গিয়েছে। কিছুদিন পর হয়তো ২০/২৫টা লাশ নিয়েও আমাদেরকে আর তেমন চিন্তিত হতে হবেনা।

সুতরাং সে অর্থে এ ঘটনা আসলে তেমন মনোযোগের দাবী রাখেনা।

২০১২ সালের বাস্তুচ্যুত সে মানুষগুলোই এখন গত এক মাস ধরে নিজেদের অধিকার আদায়ের জন্য প্রতিরোধ গড়ে তুলেছেন বা তুলতে চাচ্ছেন। প্রেক্ষাপট বিবেচনায় প্রতিরোধ গড়ে তোলার এ মানষিকতা জাতীয় সংবাদ মাধ্যমের লিড নিউজ হওয়ার যোগ্যতা রাখে। গণতন্ত্রের(!) বাম্পার ফলনের এই সময়ে ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে সমালোচনা করতে গেলেও ঘাড়ে একটা করে ব্যাকআপ মাথা রাখা লাগে,আর সেখানে এ দুষ্ট লোকগুলো রীতিমতো প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। সুতরাং এটা জাতীয় পর্যায়ে আলোচিত একটি ঘটনা হওয়ার দাবীদার।কিন্তু,অনলাইনে সচেতন দু'এক জনের ব্যাক্তিগত পোষ্ট ছাড়া এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত তেমন কোনো সাড়া শব্দ পাইনি।

যাই হোক,সাদা চোখে যদি এই ঘটনার চরিত্রগুলোর পরিচয় খুঁজতে যাই তাহলে বলতে হয়-এই বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলোর সবাই ধর্মীয় সংখ্যালঘু আর ঘটনার নায়ক ক্ষমতাসীন দলের নেতা।

কিন্তু,এ ধরনের পরিচয়ে পরিচিত করতে আমাদের যথেষ্ট আপত্তি থাকা উচিত। আমরা বরং আফজাল খানকে অপরাধী আর বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলোকে ভিকটিম হিসেবেই দেখতে চাই। আমাদের অতীত অভিজ্ঞতায় দেখি-অপরাধীর দলীয়করন,ধর্মীয়করন আর জাতীয়করনের মাধ্যমে অপরাধীকে অনেক সময়ই প্রচ্ছন্ন একটা প্রশ্রয় দেয়া হয়;আর ভীকটিমদেরকে ঠেলে দেওয়া হয় ব্যকফুটে। এ প্রবনতা পাহাড় থেকে শুরু করে সমতল পর্যন্ত বাংলাদেশের প্রতিটি অংশেই কম-বেশী একই রকম।

প্রকৃত গণতন্ত্র এবং আইনের শাষন প্রতিটি নাগরিককেই সমমর্যাদাশীল এবং সমঅধিকারের নিশ্চয়তা দেয়। সেখানে ধর্ম,দল কিংবা কোনো একক গোষ্ঠীর নগ্ন প্রভাব থাকেনা,সেখানে আইন সবার জন্যই সমান।

স্বাধীন এবং দায়িত্বশীল প্রশাসন আর প্রকৃত গনতন্ত্রের অপেক্ষায় থেকে ৭টি প্রাণকে শীতলক্ষ্যায় ভাসতে হয়েছে, ৪০টি পরিবারকে অধিকার আদায়ের প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হয়েছে। এরপরও যদি প্রতিটি নাগরিকের সমান অধিকার নিশ্চিত না হয়,প্রতিটি অপরাধীর শাস্তির নিশ্চয়তা না পাওয়া যায় তাহলে আমাদের মানবিক পরিচয় মুছে ফেলে পশু হয়ে যাওয়া-ই ভালো।

মানবিক বিপর্যয়ে পশুদের কোনো দায়ভার নিতে হয়না।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×