আজ আপনাদের কুরুচি সম্পন্ন এক নারীর ঘটনা আপনাদের বলব! আমি কোন কাল্পনিক ঘটনা বলছি না। আমার জীবনের সত্যি এই ঘটনা আজ বলতে কোন দিধা নেই।
আমি তখন ক্লাস ফাইভ এ পড়ি। আমাদের বাসায় তখন ভিসিআর ছিল না। আমার ভিসিআর-এ সিনামা দেখতে খুব ভালোলাগত। আমাদের বাসা থেকে খুব কাছে তিনটা বাড়ীর পরেই আমার এক বন্ধুর বাড়ী, ওরা ছিল হিন্দু। আমার বন্ধুর বড় ভাই ভিসিআর ভাড়া দেয়ার ব্যাবসা করতো। তাই ওদের বাসায় সব সময় দুই তিনটা ভিসিআর থাকতো। আমার বন্ধুর বড় বোন তখন কলেজে পড়তো। সে আমার মেজ আপার বান্ধবি। আমাকে খুব আদর করতো, আমিও ঐ দিদিটাকে খুব পছন্দ করতাম। মাঝে মধ্যে সময় পেলেই ঐ বাসায় চলে যেতাম ভিসিআর-এ সিনামা দেখার জন্য।
তখন ছিল শিতকাল। বিকালে মাঠে খেলাধুলা করে বাসায় ফিরছি ঐ বাড়ির সামনে দিয়ে। বাড়ির বারান্দায় একটা চেয়ারে ঐ দিদি চাদর মুড়িদিয়ে বসে ছিল। আমাকে দেখে হাতের ইসারায় ডাকল। আমি এক দৌড়ে দিদির কাছে গিয়ে দাড়ালাম। দিদি আমাকে বল্ল এই শিতেও এতো পাতলা কাপড় পড়ে আছিস কেন? তোর শিত লাগছে না? আমি বল্লাম না। ফুটবল খেলেছিতো এজন্য গরম লাগছে। দিদি বল্ল- সিনামা দেখবি? আমি দিদির এই কথায় আনন্দে প্রায় লাফিয়ে উঠলাম। হ্যা দেখবো। আমি দিদির সাথে রুমে গিয়ে ভিসিআর দেখতে লাগলাম। আমি একটা সোফা চেয়ারে বসেছি আর দিদি খাটের উপর লেপ জড়িয়ে বসেছিল। অমিতাভ বচ্চনের শাহেনশাহ্ ছবিটা চলছিলো ভিসিআর-এ। কিছুক্ষণ পরেই আমি শিতে কাঁপতে লাগলাম কিন্তু সিনামার এ্যাকশনে শিতকে কিছুই মনে হচ্ছিল না। আমাকে কাঁপতে দেখে দিদি বল্ল- কিরে শিত লাগছে? আমি বল্লাম- হ্যা। দিদি বল্ল- দরজাটা ভালকরে আটকে দিয়ে আয়। আমি উঠে দরজা লক করে দিলাম। দিদি বল্ল- আয় বিছানায় লেপের মধ্যে আয়। আমি দিদির কাছে লেপের মধ্যে গিয়ে ঢুকলাম। দিদি আমাকে লেপে জড়িয়ে দিল। আমি সিনামায় মগ্ন হয়ে আছি আর দিদি আমাকে মাঝে মাঝে গালে চুমু দিচ্ছে। বড়রা ছোটদের আদর করে চুমু দেবে এর থেকে বেশি কিছু ভাবার বয়স আমার তখন ছিল না।
হঠাৎ কারেন্ট চলে গেল। ঘর অন্ধকার, সিনেমাটা দেখা হল না তাই আমি খুব দুঃখিত মনে বিছানা থেকে উঠতে যাব কিন্তু দিদি আমাকে আরো জোরে জড়িয়ে ধরলো। কয়েক সেকেন্ডে এর মধ্যেই দিদির আচরণ আমার কাছে অদ্ভুত মনে হতে লাগল। আমাকে বিছানায় শুইয়ে দিদির সমস্ত শরীরের ভর আমার শরীরের উপর রেখে আমার মুখে মুখ চেপে ধরতেই আমার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে গেল। আমার সমস্ত শক্তিদিয়ে দিদিকে ঠেলে ফেলার চেষ্টা করছি নিঃশ্বাস নেয়ার জন্য কিন্তু কিছুতেই পেরে উঠছি না। দিদি কি আমাকে মেরে ফেলতে চাচ্ছে? ভয়ে আতংকে অবশেষে প্রাণপন চেষ্টা করে নিঃশ্বাস নিয়ে একটা চিৎকার দিলাম।
আমার চিৎকারে পাশের ঘরে আমার বন্ধুর বড় দাদা আর বৌদি কি হয়েছে কি হয়েছে বলে এগিয়ে আসতে লাগল। আমার চিৎকারের সাথে সাথেই দিদি আমাকে ছেড়ে একলাফে বিছানা থেকে নেমে দ্রুত দরজা খুলে ফেল্ল। দিদি বলতে লাগল অন্ধকারে ভয় পেয়েছে মনে হয়। দাদা আর বৌদি আলো নিয়ে ঘরে ঢুকল। আমি বিছানায় বসে কাঁদছি। বৌদি আমার মাথায় হাত বুলিয়ে সাহস দেয়ার জন্য বলতে লাগল এতো বড় ছেলে অন্ধকারে ভয় পায়? কোন ভয় নেই, কোন ভয় নেই। দিদিও বলতে লাগলো বোকা কোথাকার কোন ভয় নেই। আমি কিছুই বল্লাম না। বাসায় চলে এলাম।
বাসায় এসে কাউকে কিছু বলিনি। সারারাত ঘুমাতে পারিনি। বুঝতে পারছিলাম না দিদি কি আমাকে মেরে ফেলতে চেয়েছিল? নাকি আমার সাথে অসভ্য কিছু করতে চেয়েছিল?
ঐদিনের ঐ ঘটনা আমাকে এ্যাবনরমাল করে দিল। আমার মনে হতে লাগল কলেজে পড়ুয়া বড় বড় মেয়েরা অসভ্য হয়। এদের ধারে কাছে থাকা যাবে না। এদের সাথে কথা বলা উচিৎ নয়। আমার মেজ বোনের বান্ধবিরা বাসায় এলে গালিগালাজ করতাম, ঢিল ছুড়তাম। কিন্তু কেউ এর কারণ জানতো না। কখনও কাউকে বলিনি।
আমার এই এ্যাবনরমালিটি থেকে যে রেহাই দিল আমি তার কাছে চির কৃতজ্ঞ। এর বছর খানেক পর আমি আমার বড়বোনে সাথে কিশোরগঞ্জ চলে এলাম। আমরা যে বাসায় থাকতাম সেই বাসায় বাড়ীওলার পাঁটি মেয়ের সাথে একটি বিধবা বোন ছিল। তার নাম ছিলো নাদিরা। বিয়ের ছয়মাসের মাথায় সড়ক দূর্ঘটনায় তার স্বামী মারা যায়। স্বামীর মৃত্যুর পর নাদিরা আন্টি ভাই এর বাড়ী এসে আবার কলেজে ভর্তি হয়। আন্টি আমার পাশের রুমে থাকতো। বাড়ীটি ইনকমপ্লিট ছিল তখনও কনস্ট্রাকশন চলছিল তাই আমার আর আন্টির রুমের দরজার পাল্লা লাগানোর কোন ব্যাবস্থা ছিল না। নাদিরা আন্টি পাঁচ ওয়াক্তই নামাজ পড়তো। কখনই নামাজ বাদ দিতে দেখিনি। প্রতিদিন ভোরেই ফজরের নামাজের পর আন্টি আমার রুমে এসে তজবিগুনে কি যেন দোয়া পড়ে আমার মাথায় ফু দিতো, আমার ঘুম ভেঙ্গে যেত আন্টির ঐ তজবির রিনঝিন আওয়াজে। চোঁখ বুঝেই ভাবতাম কলেজে পড়ুয়া সব মেয়ে খারাপ হয় না। দুই একজন খারাপ, সবাই খারাপ না।
আজও ঐ দিদি আমার চোঁখের সামনে র্নিলজ্জ বেহায়ার মতো আমার চোঁখের সামনে দিয়ে চলাফেরা করে................
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:১১