কমতো নয় দেখতে দেখতে আটত্রিশটি বছর পেরিয়ে এসেছে বাংলাদেশ।এই সময় অনেক জল গড়িয়েছে পদ্মা মেঘনায়।আর কয়দিন পরেই বিজয় দিবস।যাদের আত্মত্যাগে আমরা আজ স্বাধীন আমি মনেকরি এতটা বছরেও আমরা তাদের স্বপ্ন পূরনে পুরোপুরি ব্যার্থ।অপ্রতুল হলেও মুক্তিযোদ্ধাগন আর্থিক সুবিধা সহ কিছু সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকেন।কিন্তু দুইলক্ষ বীরঙ্গনা মায়েরা কতটা সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকেন বা আদো পান কিনা আমি জানিনা। একজন বীরঙ্গনাকে আমি জানি।তিনি কখনো এই বিষয় কথা বলতে চাইতেননা। অনেক চেষ্টার গত ঈদে তার সাথে কথা বলি ।তাদের বাড়ীতে।জানতে চাইলাম তার কথা। একাত্তরে অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ছিলেন।তখন আমাদের অন্চলে তাঁর মত সুন্দরী খুব কমই ছিল।এই বয়সেই তাঁর বিয়ের জন্য অনেক প্রস্তাব আসত।কিন্তু তার ভাই খিতিশ এখনি বোনকে বিয়ে দিতে রাজি ছিলেননা।এর মাঝে যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়।দলে দলে হিন্দু তখন রাজাকারদের অত্যাচারে দেশ ছাঢ়তে লাগল।কিন্তু খিতিশ দেশ ছাড়তে রাজী হলেননা।বুড়ো মা আর বোন করুণাকে এক চাচার কাছে রেখে আরো কয়েক বন্ধু মিলে ট্রেনিং নিতে ভারত চলে গেলেন।জামসেদ যার খিতিশদের সাথে যুদ্ধে যাওয়ার কথাছিল কিন্তু শেষমূহর্তে যাননি। খিতিশদের যাওয়ার দিন জামসেদ খিতিশকে বলেছিল তুই নাফেরা পর্যন্ত তোর মা বোনের দায়িত্ব আমার। সেদিন তারিখটা ছিল অক্টোবর সাতাশ।রাত নয়টা।হঠাৎ বাহীরে কোলাহল শুনতে ফেল করুণা।কিছু বুঝার আগেই দেখল দরজা ভেঙ্গে চার পাঁচজন লোক ঘরে ঢুকে গেছে।লোকগুলো তার মাকে টেনে বাহীরে নিয়ে গেল।ঘরে ডুকল কাপড়ে মুখ বাধা একজন। তারপর আর কিছুই বলেননা তিনি।দিগন্তে চেয়ে থাকেন।জানতে চাইলাম চিনতে পেরেছিলেন?ভাইয়ের সেই বন্ধু জামসেদ,তাঁর উত্তর।আর কিছু জানাতে চাইনি আমি। না করুণার আর বিয়ে হয়নি।কোন বীর পুরুষ একজন ধর্ষিতাকে বিয়ে করতে এগিয়ে আসেনি।আজো তিনি একা।কোন সন্মান তিনি পাননি,না রাষ্ট্রীয়ভাবে না সামাজিক ভাবে।সমাজ অবশ্য তাকে একটা উপাধী দিয়েছে,নষ্টা।এখনো কোন মা তার সন্তানকে করুণার কাছে আসতে দেয়না অমঙ্গলের ভয়ে। খিতিশের গুলিতে নিজর ঘরেই মরতে হয়েছিল রাজাকার জামসেদকে।গত সপ্তাহে গিয়েছিলাম জামসেদের বাড়ী দেখতে।তার ছেলে এখন স্হানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান।করুণাদের সম্ভ্রমে পাওয়া দেশের টাকায় জামসেদের ছেলে বাবার নামে রাস্তা নামকরন করেছে।আর করুণাদের চৌদ্দকোটি সন্তান তাদের কি দিয়েছে? গত শনিবার ঢাকা ফেরার আগে গেলাম করুণাদির সাথে দেখা করতে।হ্যা তাঁকে দিদিই বলতাম।এবার বললাম মা আমাদের ক্ষমা করো।এই দেশের মাটি বাতাস আকাশ চিরদিন তোমাদর পূজা করবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১:১২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



