somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অবহেলিত দেশের প্রাথমিক শিক্ষকগণ এবং শিক্ষা খাত!

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১১:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



দেশের মানুষকে শিক্ষিত করে তোলার জন্য সরকার অনেক কিছুই করছে। এমনকি শিক্ষার হার বাড়ানোর জন্যও। তবে দেশের প্রাথমিক শিক্ষা খাতটিকে কেমন যেন অবহেলিত মনে হয় আমার কাছে। একটি দেশের বা দেশের মানুষের শিক্ষার মূল ভিত্তিটাই কিন্তু তৈরী হয় এই প্রাথমিক শিক্ষা দিয়ে যেখানে প্রাথমিক শিক্ষাতে খুব বেশী একটা গুরুত্ব দেয়না সরকার। কেন এমনটি বললাম? কারণ প্রাথমিক শিক্ষায় অন্যান্য দেশগুলো যতোটা সিরিয়াস, বাংলাদেশে তার কিছুই নেই।

প্রথমত অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশগুলো তাদের বাচ্চাদের প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করার জন্য টিচারদের সব চেয়ে বেশী সুবিধা প্রদান করে থাকে। তাদের বেতনও তুলনামূলক ভাবে অনেক বেশী হয় অর্থাৎ একটা ভার্সিটির টিচার এর মতো। কারণ তাদের কষ্টটাও তো অনেক বেশী। সে তুলনায় আমাদের দেশের টিচারদের বেতন অনেক কম।

দ্বিতীয়ত তাদের সম্মানও কম দেয়া হয়। যেখানে অন্যান্য দেশে প্রাথমিক শিক্ষকদের সম্মান একজন প্রফেসরের মতো। শিশুদের পড়ানো বা কোন কিছু শেখানোর জন্য অনেক ধৈর্য্য এবং প্যাশন এর প্রয়োজন হয় যেটা অন্যান্য টিচারদের মতো না এবং যে কষ্টটা হয় সেটা একজন বড় কোন ইউনিভার্সিটির প্রফেসর এর থেকে অনেক বেশী। কিন্তু একজন প্রায়মারি টিচারকে যেভাবে ট্রিট করা হয় সেটা রীতিমত অবহেলায় বলা যায়।



তৃতীয়ত সরকার প্রাথমিক শিক্ষা খাতকে সেফ দ্যা চিলড্রেন এর মতো বিদেশী এন.জি.ও এর কাছে বিক্রি করে দিয়ে বসে আছে। এত অবহেলার পরেও একজন শিক্ষক যে ঠিকভাবে শিশুদের ক্লাস নেবেন সেটার কোন উপায়ও রাখেনি সরকার। একটা সিম্পল সিস্টেমের মধ্যে সেফ দ্যা চিলড্রেন এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় মিলে হাজারটা রিপোর্ট ঢুকিয়ে বসে আছে। যেটা আমার কাছে খাজনার থেকে বাজনা বেশী বলে মনে হয়। আজকে এই রিপোর্ট, কাল সেই রিপোর্ট, অডিট অফিসার থেকে শুরু করে এরকম বাইশটা অফিসার আছে শুধু শিক্ষকদের তাদের গোলাম বানিয়ে রাখার জন্য। এসব কিছু করতে গিয়ে আর আসল কাজটিই হচ্ছে না, যেটা হচ্ছে সেটা হলো, শিশুদের পিওর অশিক্ষিত করে মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিকে পাঠানো হচ্ছে। পরে যতোই শিক্ষা দেওয়া হোক না কেন, বেইজ বা ভিত্তিটাই তো নড়বড়ে, তাদের দিয়ে কিই বা আশা করা যাবে? শিশুদের রেজাল্ট খারাপ হচ্ছে? না তা হবে কেন? সব শিক্ষককে তো নির্দেশ দেওয়ায় আছে, পরীক্ষা যেমনই হোক না কেন পাশের হার যেন শতভাগ থাকে এবং সেটাই হয়।

যদি শুরুতেই গলদ থাকে তবে পাশের হার দিয়ে একটা জাতিকে শিক্ষিত করে তোলা যায় না। আর তার ফলাফল দেশ এখনও সেভাবে না পেলেও এক সময় ঠিকই পাবে বলে আমি মনে করি। উচ্চমাধ্যমিকের অধিকাংশ ছাত্রছাত্রীরা ঠিক ভাবে নিজের নামটাও লিখতে পারে না। এমন কি এসএসসি পরীক্ষা দেবে এমন একজন স্টুডেন্ট এক লাইন বাংলা লিখতে সাতটা বানান ভুল করে। আর তার কারণ হলো তাদের প্রাথমিক শিক্ষার অভাব। আর এর জন্য আমি কোন প্রাইমারী শিক্ষককে দায়ী করবো না। কারণ তারা নিজেরাই তো অবহেলিত। সমস্যা টা হলো, সরকারই জানে না কোথায় গুরুত্ব বেশী দেওয়া উচিত আর কোথায় কম। যদি জানতো তবে দেশ অনেক দ্রুত এগিয়ে যেতে পারতো, অনেক দ্রুত।

এখন এ দেশে ‘আমি জিপিএ ৫ পেয়েছি’ এর ইংরেজীতে I am GPA 5 বলা টাইপের ছাত্র-ছাত্রীরা বের হয়। যার মূল কারণই হলো প্রাথমিক শিক্ষার অবক্ষয় এবং অবহেলা। দেশে এখন হাজার হাজার GPA 5 তৈরী তো হয়, কিন্তু শিক্ষিত হয় কয়জন? নামধারী শিক্ষিত আর প্রকৃত শিক্ষিত দুইটি ভিন্ন জিনিস। এটা সরকার এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় এর বোঝার দরকার। খুব দ্রুতই বোঝা দরকার, না হলে বড্ড দেরী হয়ে যাবে।

আর একটা কথা, শুনলাম ২০১৫ সালের প্রশ্ন ফাঁস করে ভর্তি হওয়া মেডিকেল স্টুডেন্টসরা নাকি এ বছর বের হয়ে ডাক্তারী শুরু করবে, এখন থেকে তো আমার ডাক্তারদের প্রতিও বিশ্বাস উঠে গেল। মরে গেলেও তো আর কোন ডাক্তারের কাছে যাবো না।


কপিরাইট © কনক ২০১৯
ফেসবুকে আমিঃ মোঃ কামরুজ্জামান কনক
ছবিঃ ইন্টারনেট (bdnewshour24, Jugantor)
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১১:২৩
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা

লিখেছেন করুণাধারা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৯



এই ধাঁধার নাম সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা; নিচের লিংকে এটার ভিডিও আছে।

স্বৈরশাসকের বন্দী

এই ধাঁধাটি আমার ভালো লেগেছিল, তাই অনেক আগে আমার একটা পোস্টে এই ধাঁধাটি দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই পোস্টে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বৃদ্ধাশ্রম।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১৬



আগে ভিডিওটি দেখে নিন।

মনে করেন, এক দেশে এক মহিলা ছিলো। একটি সন্তান জন্ম দেবার পর তার স্বামী মারা যায়। পরে সেই মহিলা পরের বাসায় কাজ করে সন্তান কে... ...বাকিটুকু পড়ুন

টের পেলে

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৫৭

টের পেলে
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

টের পেলে গুটিয়ে যায় লজ্জাবতী/ পরিপূর্ণ যৌবনে যুবতীর নিখুঁত অনুভূতি। আমার চাওয়া, ইচ্ছে, স্বপ্ন! আমার পছন্দ বুঝদার, সুন্দর হৃদয়ের রূপ! সৌন্দর্য সুন্দর যা চিরন্তন সত্য। কিন্তু সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের চার খলিফার ধারাবাহিকতা কে নির্ধারণ করেছেন?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৭




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ২৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৬। বল হে সার্বভৈৗম শক্তির (রাজত্বের) মালিক আল্লাহ! তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) প্রদান কর এবং যার থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব)... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×