somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

" মাগো " - ক্ষমা করো ! ! !

০৮ ই মে, ২০১১ রাত ১০:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ মা দিবস । ধরণীর সকল মাকে শুভেচ্ছা ।

মে মাস আসে কেমন মা মা গন্ধ নিয়ে। প্রতিটি দিনই মাকে ভালবাসার দিন,বিশেষ কোন দিনের দরকার হয় না । তবু মিডিয়ার কল্যাণে এই দিনটি যেন বিশেষ হয়ে উঠেছে - মাকে চমকে দেয়ার জন্য। আমাদের মা আমাদের ছয় ভাই-বোনকে লালন পালন করতে গিয়ে কত কষ্টই না করেছে।খুবই পরিস্কার - পরিচ্ছন্ন,ঝকমকে থাকতে পছন্দ করেন বলেই সারাদিন গৃহকর্মে লেগে থাকেন। ছোটবেলা থেকেই দেখেছি কখনো দুপুরের ভাত সময় মত খেতে পারতেন না। বিকেল গড়িয়ে যেত ,তারপরও কত তৃপ্তি ঝরে পড়ত! আমি একা খেতে পারতামনা বলে মা আমার জন্য অভূক্ত বসে থাকতেন। বিকেল ৪:০০টার পর আমি ফিরে এলেই সঙ্গে নিয়ে ভাত খেতেন।

মনে পড়ে, আমি যখন ৫ম শ্রেণির বৃত্তি পরীক্ষার্থী- মা আমার সাথে গভীর রাত পর্যন্ত বসে থাকতেন আর আমি পড়া তৈরি করতাম। কেননা আমি সন্ধ্যা রাতে পড়তে পারতাম না। আমি ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পাওয়ার পর আমাকে নিয়ে মায়ের সেকি আনন্দ! তারপরেও একটু মনমতো নাহলেই মায়ের সাথে কত অভিমান, দুর্ব্যবহার করেছি। মনে হলে এখন খুবই কষ্ট পাই।

মায়ের ত্যাগ, কষ্ট, ভালবাসা, মমতার কথা খুব গভীরভাবে উপলব্ধি করতে পারি যখন আমি মা হই। আমার ছেলেকে যখন মা প্রথম আমার কোলে দিলেন তার মুখ দেখে আমি খুব কেঁদেছিলাম.. যতটা না আনন্দে তার চেয়ে বেশি ছিল অনুশোচনা, অনুতাপ যে – আমার মা-ও আমাকে পৃথিবীর আলো দেখাতে এতটা কষ্টকর journey করেছেন। সঙ্গে সঙ্গে আমি বলেছিলাম, “আম্মু আমি আমার ছেলেকে কখনো কিছু বলবো না, বকা দিবনা, মারবো না। এত কষ্টের অর্জন!” সেদিন খুব ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও আম্মুকে বলা হয়নি ,ক্ষমা করো মা। কেন জানি আজ বলতে ইচ্ছা হচ্ছে – “মাগো “- ক্ষমা করো! সকল অপরাধ।

“মা” আমার এখনো চলার পথের শক্তি, আনন্দ -বেদনার পরম আশ্রয়স্থল। বহু কন্টকময় পথ পাড়ি দিয়ে আমি কর্মক্ষেত্রেও আজ আমার কাজ চালিয়ে যেতে পারছি – সে তো আমার কল্যাণকামী মায়ের সহযোগিতায়। আমার খুব মন খারাপ হলে মাকে জড়িয়ে ধরে বুকে মাথা রাখলেই জাদুর মত এক অনাবিল শান্তি অনুভব করি, মনটা জুড়িয়ে যায়-যেমন আমার ছেলেকে বুকে জড়িয়ে পাই তেমনি। এটাই হয়তো প্রকৃতিগত- এটাই মমতা, মাতৃত্বের পরম পাওয়া ।

“মাগো” ৬ সন্তানের জননী হলেও এখন তুমি একাকী, নিঃসঙ্গ। সবাই যার যার ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত, নিজেদের প্রয়োজনে তোমার থেকে দূরে অবস্থান করছে। ফোনে যখন শুনি – তুমি একা বলে বিকেলে চা খাচ্ছ না – কষ্টে বুকটা চৌচির হয়ে যায়। কিছুই করার থাকেনা ,চোখের পানি ফেলা ছাড়া। বাস্তবতা এত নির্মম!
আবার এই তুমিই সারাটা দিন ব্যস্ত থাক যখন ছুটিতে আমরা সব্বাই তোমার কাছে যাই। কে কী খাবে, কার কোনটা পছন্দ – এই নিয়ে তোমার ছোটাছুটির সীমা থাকে না। এই আনন্দযজ্ঞ ভেঙ্গে যায় যখন আমাদের বিদায় দাও- অশ্রুসিক্ত নয়নে। তোমাকে ছাড়া এ জীবন-সংসার যেন স্থবির। মাগো আজ শত সহস্রবার তোমাকে বলতে চাই ভালোবাসি! ভালোবাসি! ভালোবাসি...............।

আম্মু তুমি সুস্থ্ থেকো, আনন্দে থেকো, দুশ্চিন্তামুক্ত থেকো – বিধাতার কাছে এই আমার প্রার্থনা।।
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিচার চাই? না ভাই, আমরা "উল্লাস" চাই

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৩৭





দীপু চন্দ্র দাস একটি পোশাক শিল্প কারখানায় চাকরি করতো। সম্প্রতি দীপু দাস তার যোগ্যতা বলে সুপার ভাইজার পদে প্রমোশন পেয়েছিলো।

জানা যায়, সুপারভাইজার পজিশনটির জন্য আরও তিনজন প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×