somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

“ঈদ”: বাধহীন আনন্দ –বন্যা

২১ শে আগস্ট, ২০১২ বিকাল ৫:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

(এ পোস্টটি চাঁদ রাতে লেখা। মডেম সংক্রান্ত জটিলতায় পোস্টটি করা যায়নি।)


বছরের আর্বতনে চলে এসেছে ঈদুল ফিতর-২০১২ । দীর্ঘ এক মাস সংযমের পর বাধহীন আনন্দ । আমার একমাত্র ছেলেকে নিয়ে তার দাদু বাড়ীতে ঈদ করছি। অনেক মজা পায় আমার টুকুন সোনা –এটা এক অন্যরকম আনন্দ । কিন্তু আব্বু-আম্মুর সাথে সব ভাই-বোন মিলে যে ঈদ ছিল সেগুলো ছিল অসাধারণ । অবশ্য দু’টি ভিন্ন অনুভূতি । আমার ছেলের গ্রামে ঈদ করার সুযোগ নেই –হয়তো হবেও না । ঢাকায় ইট-পাথরের শহরেই ঈদ করতে হয় । সে কি করে বুঝবে গ্রামে ঈদ করার কী অপার আনন্দ !!

আমার আব্বু আমাদের প্রতি বছর ঈদে গ্রামের বাড়ী নিয়ে যেতেন । আমরা ছ’ভাই-বোন কী মজাই না করতাম ! কাজীন দের সাথে দিনভর গল্প-আড্ডা , মারামরি ,চিৎকার,সকাল-সন্ধ্যা ঘুরে বেড়ানো –কী না ছিল ? এমন কি সমস্ত রাত চলতো আমাদের আড্ডা ।

আমার মনে আছে , আমি তখন স্কুলে পড়ি – যথারীতি ঈদে বাড়ী যাবার পরিকল্পনা হচ্ছে । ঈদে টেলিভিশনে কত সুন্দর আনুষ্ঠান হয় –দেখতে পারি না । আমাদের দাদু বাড়ী বিদ্যুৎ ছিল না-ছিল না কোন টিভি । আমরা আব্বুর কাছে আবদার করলাম যেন আমাদের টিভি টা বাড়ীতে নিয়ে যাওয়া হয় । আব্বু দীর্ঘ সময় নিয়ে চিন্তা করে কেমন করে যেন রাজী হয়ে গেলেন –আমরা খুশীতে চিৎকার করে উঠলাম । আব্বু হয়তো আনন্দ দিতেই এমন কষ্টকর কাজটি করতে সম্মত হয়েছিলেন । অতঃপর আমরা ছ’ ভাই-বোন , আব্বু-আম্মু ও আমাদের টিভি-বিশাল এই দল নিয়ে এক মহা কষ্টকর ভ্রমণ শেষে আমরা বি-বাড়ীয়া থেকে রসূলপুর এসে পৌঁছলাম ।

ঈদের দিন সন্ধ্যায় ব্যাটারী দিয়ে টিভি চালানো হলো-দেখা গেল কিছুক্ষণের মধ্যেই গ্রামের আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা, ঘরে জায়গা দেয়া যাচ্ছে না । অগত্যা আমাদের বিশাল উঠোনে টেবিল এনে টিভি টা রেখে দেয়া হলো । সব্বাই খুব আনন্দ নিয়ে উপভোগ করলো । কেননা আশেপাশে বেশকটি গ্রামে কোন টিভি ছিল না । সেদিন আমি বেশ মজা পেয়েছিলাম । অনুষ্ঠানে নৃত্য হচ্ছিল-একজন নৃত্যশিল্পী চমৎকার নাচছিল, আমার পাশে বসা এক মহিলাকে বলতে শুনলাম-হিতি ইৎ কইরা আত-ফা লরায় কিল্লাই ? হাগল অই গেছে নাই –ও আমার আল্লা । এই দিন যাই করতাম –কোন বাধা দিতেন না আব্বু-আম্মু । কি মজা.............।। একটা দিন অন্তত রক্ষে.....।

ঈদের আগের দিন রাত পর্যন্ত আম্মু আমাদের জন্য জামা সেলাই করতেন আর রাত জেগে বিভিন্ন খাবার বানিয়ে রাখতেন । আমরা বোনেরা একেক জন একেক কাজ করতাম –কেউ ঘর গোছাতো ,কেউ নিজের স্পেশাল আইটেম রান্না করতো । ঘর সাজানোতে অবশ্যই কাঁচা ফুল থাকতে হবে।
ঈদের দিন সকালে আব্বু সহ দুই ভাইকে নতুন পাঞ্জাবী পরিয়ে আম্মুর হাতের সেমাই-ফিরনী খাইয়ে নামাজে পাঠাতাম-আমরা বোনেরা গেইট পর্যন্ত পৌঁছে দিতাম । অদ্ভূত অনূভূতি ..........!
খুব, খু......উ.........ব মিস্ করছি । এই ঈদে সিমি ও থাকবেনা আব্বু-আম্মুর সাথে । প্রথাগত নিয়মে শ্বশুর বাড়ীতেই তাকে ঈদ করতে হচ্ছে........আজব সব নিয়ম ।। এমনি করে একদিন রিমি, মিনিকেও চলে যেতে হবে.........আব্বু-আম্মু রয়ে যাবে একা । ভাবতেই খুব কষ্ট হচ্ছে –বিষাদে ছেয়ে যাচ্ছে.........। এই রিমি ! কেমন করে আজ চটপটি, পুডিং .......এসব বানাবি? পারবি তো? না পারলে ফোন দিস্-রেসিপি বলে দিব । আমি আছি.....। বাবু আবার কবে কখন আমাদের সাথে ঈদ করবে .........জানিনা ।

সব্বাইকে ঈদ মোবারক ।।
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিচার চাই? না ভাই, আমরা "উল্লাস" চাই

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৩৭





দীপু চন্দ্র দাস একটি পোশাক শিল্প কারখানায় চাকরি করতো। সম্প্রতি দীপু দাস তার যোগ্যতা বলে সুপার ভাইজার পদে প্রমোশন পেয়েছিলো।

জানা যায়, সুপারভাইজার পজিশনটির জন্য আরও তিনজন প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×