আবহমান কাল থেকে আমরা শোষক শ্রেণীর হাতে শাষিত হচ্ছি। একসময়ে রাজা-বাদশারা আমাদের শোষণ করতো এর পর পর্যায়ক্রমে বৃটিশরা, পাকিস্তানীরা সর্বশেষ স্বদেশী মহান রাজনীতিবিদরা।
গল্প শুনেছি, ৭১ পরবর্তী মুজিব সরকারের নির্যাতন ইতিহাস, রক্ষীবাহিনীর নির্মমতার করুন কাহিনী। আজও একটি শেখ মুজিবের একটি উক্তি শোনা যায় "সাড়ে ৭ কোটি বাঙালীর জন্য ৮ কোটি কম্বল এল আমারটা কই"। ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় রাজপথে শেখ মুজিবর রহমান যতটা পারদর্শী দেশ শাসনে ততটাই ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। হয়তো মুজিব শাসনে অনেকেই ত্যক্ত-বিরক্ত হয়েছে, বাকশাল এর বিরুদ্ধে জনমত বেশী ছিল কিন্তু ১৫ আগষ্ট এর রক্তাক্ত ইতিহাস কারো কাম্য ছিল না। তবুও শাসক শ্রেণীর ক্ষমতালোভীরা সেদিন সাধারণকে নতুন আশার দেখাল, নতুন স্বপ্ন দেখাতে লাগল- "এদেশে সুশাসন আসবে"। বাঙালী স্বপ্ন দেখলো, বুঝতে পারলো না, শাসকশ্রেণীতে শুধু চেয়ারটার মানুষ পরিবর্তন হয়, নীতি বা লোভ নয়।
রক্তের মাতম ঝরিয়ে এল জিয়াউর রহমান, তিনিও স্বপ্ন দেখালেন। একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ীর সৃষ্টি করলেন যাদের ব্যবসা হল 'রাজনীতি'। শুরু হল নতুন নির্যাতনের খেলা। বাঙালী উপলদ্ধি করল, দূর্নীতি কত প্রকার এবং কি কি ?
আবারও রক্তের খেলা আর রাজনীতিবিদদের প্রহসন। ক্ষমতায় এলেন এইচ এম এরশাদ। কিছুদিন প্রতিবাদ হল, মিছিল হল, মিটিং হল তারপর যখন সুবিধাবাদীদের তিনি প্রলুদ্ধ করলেন সব ঠান্ডা। আবার আমরা শোষিত হতে থাকলাম। বিশ্বপ্রেমিক এইচ এম এরশাদ যেন সনাতন ধর্মের শিব দেবতার আশ্রয় পেল। দেশ স্বেচ্ছাচারিতায় বিকলাঙ্গ হল। সুবিধাবাদীরা তার সম্ভাব্য পতন দেখে তাকে স্বৈরাচারী আখ্যা দিয়ে রাজপথে নামল। একদিন সুবিধাবাদীদের আখ্যায়িত স্বৈরাচার এরশাদের পতন হল।
সাধারণ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এল বিএনপি, প্রধানমন্ত্রী হলেন বেগম খালেদা জিয়া। এদেশে জন্মনিল নতুন এক সুবিধাবাদী চক্র। এতোদিনের শাসকেরা আজ নিষ্ক্রিয়। ক্ষমতাবঞ্চিত সুবিধাভোগীরা গণমানুষের রক্ত চুষে ক্ষুধা মেটাল। খুন, ধর্ষণ, চাঁদাবাদী আর টেন্ডারবাদীদের আড্ডা হল বাংলাদেশ নামক পৃথিবীর বৃহত্তম ব-দ্বীপ রাষ্ট্র। একদিন বিএনপি সরকারের পতন হল।
আবারও সাধারণ নির্বাচন, ক্ষমতায় এল আওয়ামী লীগ, প্রধানমন্ত্রী হলেন মুজিবকন্যা শেখ হাসিনা। ক্ষমতায় এসেই মুজিব রক্তের ভয়াবহতা দেখাল। পিতৃহত্যার বিচার তার মূর্খ উদ্দেশ্য হিসাবে দেখা গেল। এদিকে তিনিসহ তার মন্ত্রীদের দূর্নীতির বিষয়ে কথা উঠতে তার সাফ কথা - "বিএনপি সরকার এর চেয়ে বেশী দূর্নীতি করেছে"
(প্রশ্ন হল - ক্ষমতায় থাকলে কতটুকু দূর্নীতি জায়েজ আছে ?)
তাবত পৃথিবীর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে টাকা ডোনেশন দিয়ে ডিগ্রী হাসিল করা আর মেডেল পাওয়ার লোভ তাকে গ্রাস করলো। দূর্নীতির কথা আর বলতে লজ্জা করছে। কারণ, আমরা দূর্নীতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছি!!!!!!!!!!!!!!! নিজেকে উচ্চমানের শিক্ষিত দাবী করে প্রতিনিয়ত অশালীন ভাষায় কথা বলে দেশে বিখ্যাত হয়ে উঠলেন। সারাদেশে রাষ্ট্রীয় তদারকীতে বোমাবাজি করেও ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারলেন না। একদিন তারও পতন হল।
আবারও সাধারণ নির্বাচন, আবারও বিএনপি ক্ষমতায় এবং যথারীতি বেগম খালেদা জিয়া প্রধান মন্ত্রী। ম্যাডামের প্রধান সিপাহশালার জনাব তারেক জিয়ার ক্ষমতার অপব্যবহার আজ বিশ্বনন্দিত। প্রথম পর্বের ক্ষমতায় থাকা কালে আসলে দূর্নীতি কম করা হয়েছে, এটা আওয়ামী সরকারের আমলে ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন তাই এবার ক্ষমতায় এসে সেই অপূর্ণ সাধ সুদে আসলে মিটিয়ে নিলেন। সারাদেশে সিরিজ বোমা বিস্ফোরিত হল, কোথা থেকে যেন আবিস্কার হল 'জেএমবি ভুত'। নিষিদ্ধ করা হল জেএমবি, বোমাবাজদের জনতার চোখের আড়াল করতে। শীর্ষ কয়েকজন সন্ত্রাসী সুবিধাভোগীকে ফাঁসিতে ঝুলান হল। এদিকে আমরা দূর্নীতিতে চ্যাম্পিয়নশীপ অক্ষুর্ণ রাখার প্রতিজ্ঞা করলাম। শেষ হয়ে এল সরকারের মেয়াদ।
রক্তাক্ত হল রাজপথ, দুই শীর্ষ রাজনৈতিক দলের তালগাছ নিজের দাবীকে রক্ষা করতে সাধারণ জনতা কতনা ভোগান্তির শিকার হল তা আমরা দেখেছি।
কে আসবে এবার রাষ্ট্র ক্ষমতায় ?
(জামায়াত নিয়ে কথা বলার সাহস পেলাম না, ভগবান শেষে আমার বেহেস্তের টিকিট যদি বাতিল করে দেই, এই ভয়ে। দয়া করিয়া ওপারের অনাবিল সুখ ও শান্তি চাইলে জামায়াত নিয়ে কথা বলবেন না।)
আমার সোনার (রং করা ইষ্পাত) বাংলাদেশ যেন রাজনীতিবিদদের মোনালিসা..................................(রি-পোষ্ট)
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন
J K and Our liberation war১৯৭১


জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন
এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ
এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ
২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন
বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ
বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ
কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন
নিশ্চিত থাকেন জামায়েত ইসলাম এবার সরকার গঠন করবে

আমাদের বুঝ হওয়ার পর থেকেই শুনে এসেছি জামায়েত ইসলাম,রাজাকার আলবদর ছিল,এবং সেই সূত্র ধরে বিগত সরকারদের আমলে
জামায়েত ইসলামের উপরে নানান ধরনের বিচার কার্য এমন কি জামায়েতের অনেক নেতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।