অটিজম রোগটি শিশুদের মনোবিকাশগত জটিলতা তাই এই জটিলতায় আক্রান্ত শিশুরা আচরণগত দিক থেকে অন্যশিশুদের তুলনায় ভিন্ন হয়ে থাকে। অটিজমে আক্রান্তদেরকে অটিস্টিক বলা হয়। বেশীরভাগ অটিস্টিক শিশুর intellectual disability বা বুদ্ধিবৃত্তিক অক্ষমতা থাকে। ২০-৩০% অটিস্টিক শিশুর এই অক্ষমতা থাকেনা; যাদের অটিজমকে high-functioning autism বা অ্যাসপারগার সিনড্রোম বলা হয়। অ্যাসপারগার সিনড্রোম আক্রান্ত শিশুদের সাধারণত: বুদ্ধিবৃত্তিক অক্ষমতা থাকেনা। কখনো থাকলেও সেটা খুবই স্বল্পমাত্রার হয়ে থাকে। কথা শেখার বিচারে তারা তেমন পিছিয়ে নেই। তাদের মূল সমস্যা এই কথাগুলোকে সামাজিক মেলামেশার ক্ষেত্রে কার্যকরভাবে ব্যবহার করা নিয়ে। যেমন অন্য কারো সঙ্গে আলাপচারিতায় অংশ নিতে তাদের সমস্যা হয়। কাউকে প্রশ্ন করা, অন্যের প্রশ্নের উত্তর দেয়া, বা কারও কথায় প্রাসঙ্গিক মন্তব্য করার ক্ষেত্রে অক্ষমতার জন্য তারা প্রায়ই অমিশুক ও নিভৃতচারী হিসেবে চিহ্নিত হয়। গতানুগতিক সামাজিক আচরণ থেকে ভিন্ন আচরণ করে। অন্যদের সাথে তাদের সামাজিক সম্পকের দূরত্ব তৈরি হয়।
যার ফলে তারা প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থা, সামাজিক অনুস্ঠান, খেলাধুলায় নিজেদের মানিয়ে নিতে পারে না। কেউ কেউ এই গতানুগতিক সামাজিক জীবনে সফল না হলেও নিজের মেধা ও প্রতিভা ব্যবহার করে ব্যাক্তি জীবনে সাফল্যের চূড়ায় পৌছে গেছেন। যদিও এই পরিসংখ্যানটি অত্যন্ত নগণ্য।
অনেক বিশেষজ্ঞের ধারনা মহা বিজ্ঞানি আইনস্টাইনের অটিজম ছিল। তাছাড়া অনেকেই মনে করেন মহাকালের আরেক সেরা বিজ্ঞানী আইজেক নিউটন ও অটিস্টিক ছিলেন। আরো অনেক বিখ্যাত বিজ্ঞানি, কবি, সাহিত্যিক ও প্রেসিডেন্ট ছিলেন অটিস্টিক।
এই লিংকটিতে আরো কিছু বিখ্যাত ব্যক্তিদের কথা জানা যায়, যারা অটিজমে আক্রান্ত ছিলেন বলে ধারণা করা হয়।
মার্ক হ্যাডন নামের একজন ইংলিশ লেখক তার জনপ্রিয় "দ্যা কিউরিয়াস ইনসিডেন্ট অব দ্যা ডগ ইন নাইট টাইম" বইটিতে একজন মেধাবী অটিস্টিক শিশুর কথা বলেছেন। ১৫ বছরের সেই শিশুটি মানুষের সংস্পশে ভীত হওয়া সত্তেও তার প্রতিবেশীর কুকুরের রহস্যময় মৃত্যুর কারন ও তার মায়ের সম্পর্কে অপ্রকাশিত সত্য ঘটনা উৎঘাটন করতে বের হয়। বইটিতে প্রধান চরিত্র নিজস্ব দৃস্টিভঙ্গীতে কাহিনী বর্ণনা করে। লেখক একজন আত্মকেন্দ্রিক অটিস্টিক শিশুর বাচনভঙ্গী ও চিন্তাভাবনা দেখাতে চেয়েছেন প্রথম বক্তায় গল্প বলে। তাই গল্প বলার স্টাইল একটু ভিন্ন ধরণের। পড়ে ভালো লেগেছে। নিজের মত করে অনুবাদ করার চেষ্টা করছি।
অধ্যায় : ২
এটা ছিল মধ্যরাতের ঠিক সাত মিনিট পরের ঘটনা। কুকুরটি মিসেস সিয়ারসের বাড়ীর সামনের লনের মাঝখানে ঘাসের উপর শুয়ে ছিল। ওর চোখগুলো বন্ধ ছিল। কুকুর যেভাবে স্বপ্নে বিড়াল তাড়া করে ওকে দেখাচ্ছিল সেই রকম, যদি ও তার পাশে দৌড়াতে থাকত। কিন্তু কুকুরটি দৌড়াচ্ছিল না অথবা ঘুমন্ত ছিলনা। সে ছিল মৃত। একটি গার্ডেন ফর্ক কুকুরটির গায়ে বিদ্ধ ছিল। ফর্কটির মাথা অবশ্যই কুকুরটির শরীর ভেদ করে মাটিতে গেথে ছিল কারন ফর্কটি পরে ছিল না।
আমার ধারণা ছিল কুকুরটিকে সম্ভবত ফর্ক দিয়ে মারা হয়েছে, কারন ওর গায়ে আর কোনো ক্ষত ছিলনা এবং আমি মনে করি না, তুমি কোনো কুকুরকে অন্য কোনো কারনে, যেমন ক্যন্সার অথবা রোড একসিডেন্টে মারা গেলে গার্ডেন ফর্ক দিয়ে গেথে রাখবে। কিন্তু আমি এই ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারিনি।
আমি মিসেস সিয়ারসের দরজা দিয়ে ঢুকলাম এবং ভেতর থেকে বন্ধ করলাম। লনের উপর দিয়ে হেটে কুকুরটির পাশে বসলাম এবং কুকুরটির নাকে হাত রাখলাম, সেটা তখনো গরম ছিল।
কুকুরটির নাম ছিল ওয়েলিংটন। ও আমাদের বন্ধু মিসেস সিয়ারস এর কুকুর। তিনি রাস্তার বিপরীত দিকে বাম দিকের দুই বাড়ী পরে থাকেন
ওয়েলিংটন ছিল পুডল। হেয়ারস্টাইলসহ ছোট পুডল না বড় পুডল। ওর ছিল কোকড়ানো কালো পশম,তুমি যদি খুব কাছে যেতে তাহলে দেখতে পশমের নিচের চামড়া মুরগীর মত খুব বিবর্ণ হলুদ। আমি ওয়েলিংটনকে নাড়া দিলাম এবং ভাবলাম কে তাকে মেরেছে এবং কেন।
অধ্যায় : ৩
আমার নাম ক্রিস্টোফার জন বুন। আমি বিশ্বের প্রত্যেকটি দেশের রাজধানীর নাম এবং ৭০৫৭ পর্যন্ত সব মৌলিক সংখ্যা জানি।
আট বছর আগে সিওভান এর সাথে যখন আমার প্রথম পরিচয় হয় সে আমাকে এই ছবিটি দেখিয়েছিল।
এবং আমি জানতাম এর মানে দু:খ,যা আমি অনুভব করেছিলাম মৃত কুকুরটি দেখে। এরপর সে আমাকে দেখিয়েছে এই ছবিটি।
এবং আমি জানতাম এর মানে ভালোলাগা। যেমন, যখন আমি এপ্যোলো স্পেস মিশন সম্পর্কে পড়ি অথবা যখন আমি সকাল ৩টা অথবা ৪টা পর্যন্ত জেগে থাকি এবং পুরো পৃথিবীতে নিজেকে একমাত্র ব্যাক্তি মনে করে রাস্তায় হাটাহাটি করতে পারি।
তখন সে আরো কিছু ছবি আঁকে।
কিন্তু ছবিগুলো কি বোঝাচ্ছিল আমি বলতে পারিনি।
আমি সিওভান কে বলেছিলাম আরো বেশি করে ওই ধরনের ছবি আঁকতে এবং পাশে এর সঠিক অর্থ লিখে দিতে। কাগজটি আমি আমার পকেটে রেখেদিয়েছিলাম এবং যখন কারো কথা বুঝতাম না তখন বের করতাম। এটা ঠিক করা খুবই কঠিন ছিল যে তাদের চেহারা মত কোন ডায়াগ্রামটি হবে কারণ মানুষের চেহারা খুব দ্রুত নড়াচাড়া করে।
আমি এই কাজটি করছি সিওভানকে বলার পর সে একটি পেনসিল এবং এক টুকরা কাগজ বের করে বলল এটা মানুষকে সম্ভবত অনুভব করিয়েছে খুব
এবং তখন সে হাসল। তাই আমি আমার কাগজটি ছিড়ে দূরে ছুড়ে ফেললাম। এটা দেখে সিওভান ক্ষমা চাইল।
এখন আমি কারো কথা কিছু না বুঝলে জিজ্ঞাসা করি, তারা কি বোঝাতে চাচ্ছে অথবা হেটে চলে যাই।
অধ্যায় : ৫
আমি কুকুরটির শরীর থেকে ফর্কটি বের করি এবং হাত দিয়ে তুলে জড়িয়ে ধরি। ফর্কের করা ছিদ্র দিয়ে রক্ত ঝড়ছিল।
আমি কুকুর পছন্দ করি। তুমি সবসময় জান একটি কুকুর কি ভাবছে। ওর চার ধরনের ভাব আছে। আনন্দ, দু:খ, রাগ, এবং মনোযোগ। তাছাড়া কুকুর বিশ্বস্ত এবং মিথ্যা বলেনা, কারণ ওরা কথা বলতে পারেনা।
আমি কুকুরটিকে ৪ মিনিট ধরে জড়িয়ে ধরে ছিলাম।হটাৎ চিৎকার শুনতে পাই। আমি তাকাই এবং দেখি মিসেস সিয়ারস আমার দিকে প্যাটিও থেকে দৌড়ে আসছেন। তিনি পাজামা এবং হাউজকোট পরে ছিলেন। তার পায়ের নখ উজ্জল গোলাপী রং করা এবং দুই পায়ে কোনো জুতা ছিল না।
তিনি চিৎকার করছিলেন,” তুমি আমার কুকুরের কি করেছ?”
আমার সাথে চিৎকার করা আমি পছন্দ করি না। এটা আমাকে ভীত করে যে, তারা আমাকে মারবে অথবা স্পর্শ করবে এবং আমি জানিনা কি ঘটতে যাচ্ছে।
“কুকুরটিকে ছেড়ে দাও,”তিনি চিৎকার করলেন। “ঈশ্বরের দোহাই কুকুরটিকে ছেড়ে দাও।”
আমি কুকুরটিকে লনে নামিয়ে ২ মিটার পিছে সরে আসলাম।
তিনি নিচু হলেন। আমি ভেবেছিলাম তিনি কুকুরটিকে তুলবেন কিন্তু তিনি তা করলেন না। সম্ভবত তিনি খেয়াল করেছেন সেখানে কি পরিমান রক্ত লেগে আছে এবং নিজেকে নোংরা করতে চাননি। তার বদলে তিনি আবার চিৎকার শুরু করলেন।
আমি কানের উপর হাত রেখে চোখ বন্ধ করলাম এবং উপুর হয়ে ঘাসের উপর কপাল দিয়ে চাপ দিলাম। ঘাসগুলো ছিল ভেজা আর ঠান্ডা । যা স্বস্তিদায়ক ছিল।
অধ্যায় : ৭
এটা একটি মৃত্যু রহস্যপোন্যাস।
সিওভান আমাকে বলেছিল আমার এমন কিছু লেখা উচিৎ যা আমার পড়তে ভালো লাগে। বেশির ভাগ সময় আমি গণিত ও বিজ্ঞানের বই পড়ি। আমি উপন্যাস পছন্দ করি না। উপন্যাসে মানুষ কথা বলে এই ভাবে-
“লোহা, রূপা এবং কাঁদামাটি আমার শিরার মধ্যে। যে কর্মোদ্দীপ্ততায় নির্ভর করেনা, আমি তার শক্ত মুঠির মধ্যদিয়ে চুক্তি করতে পারিনা।”
এর মানে আমি কি যেমন আমি জানিনা তেমনি জানেনা আমার বাবা, সিওভান অথবা মি: জিভনস। আমি তাদের জিজ্ঞাসা করেছি।
সিওভানের রয়েছে লম্বা ব্লন্ড চুল, সে সবুজ প্লাস্টিকের চশমা পরে এবং মি:জিভনস এর গা থেকে সাবানের মত গন্ধ বের হয়, তিনি বাদামি জুতা পরেন যার প্রতিটিতে প্রায় ৬০টি ছোট গোলাকার ছিদ্র আছে।
আমর মৃত্যু রহস্যপোন্যাস ভালো লাগে এজন্য আমি একটি মৃত্যু রহস্যপোন্যাস লিখছি। এই ধরণের গল্পে কেউ একজন খুনিদের খুঁজে বের করে এবং ধরে ফেলে।
এটা একধরনের ধাঁধাঁ। ধাঁধাঁটা যদি মজার হয় তাহলে কখনো কখনো তুমি বই শেষ করার আগেই এর সমাধান বের করতে পারবে।
সিওভান বলে, গল্প এমন কিছু দিয়ে শুরু হওয়া উচিৎ যা মানুষের মনোযোগ ধরে রাখবে। সেই কারণেই আমি কুকুরের ঘটনা দিয়ে শুরু করেছি। আরেকটা কারণ ঘটনাটা আমার জীবনে ঘটেছিল। কোনকিছু আমার জীবনে না ঘটলে আমার পক্ষে অনুমান করা কঠিন হয়।
সিওভান প্রথম পৃস্ঠা পড়ে বলেছিল, এটা অন্যরকম হয়েছে। সে তার প্রথম দুই আঙ্গুল দিয়ে শব্দটি ইনভার্টেড কমায় উইগলি উক্তির চিহ্ণ তৈরি করেছিল।
সে বলল, সাধারণত মৃত্যু রহস্যপোন্যাসে মানুষ খুন হয়। আমি বললাম, দ্যা হাউন্ড অব দ্যা বাসকারভিলস এ দুটি কুকুর মারা যায়, একটি সেই হাউন্ডটি আরেকটি জেমস মর্টিমারের স্প্যানিয়েল । কিন্তু সিওভান বলল, ওরা তো খুনের স্বীকার ছিল না,স্যার চার্লস বাসকারভিলস ছিলেন। আর এর কারণ ছিল পাঠকরা কুকুরের চেয়ে মানুষকে বেশি গুরুত্ব দেয়। তাই গল্পে যখন মানুষ খুন হয়, পাঠকরা গল্পটি পড়তে আগ্রহী হয়। আমি বললাম, আমি সত্যিকার কোনোকিছু লিখতে চাইছি এবং আমি জানি কারা মারা গেছেন, কিন্তু কেউ খুন হয়েছে কিনা আমার তা জানা নেই। একমাত্র ব্যতিক্রম স্কুলের এডওয়ার্ডের বাবার মৃত্যু, যা ছিল একটি গ্লাইডিং দুর্ঘটনা। কিন্তু খুন নয়। আর আমি তাকে আসলে চিনতাম না।
আমি আরো বললাম, আমি কুকুরকে গুরুত্ব দিয়েছি কারণ ওরা বিস্বস্ত ও সৎ। এছাড়া কিছু কুকুর বুদ্ধিমান এবং মানুষ থেকে বেশি আকর্ষনীয়। যেমন স্কুলের স্টীভ, ও বুধবারে স্কুলে আসে। সে নিজে থেকে খাবার খেতে পারেনা এমনকি একটি কাঠিও ধরতে পারেনা। সিওভান আমাকে এটা স্টীভের মায়ের সামনে বলতে নিষেধ করল।
অধ্যায় : ১১
তখনি পুলিশ আসল।
আমার পুলিশ ভালো লাগে। তাদের ইউনিফর্ম এবং নাম্বার রয়েছে যা দেখে তুমি তাদের কাজটি বুঝতে পার।
সেখানে একজন মহিলা পুলিশ ও একজন পুরুষ পুলিশ ছিল। মহিলা পুলিশটির বাম গোড়ালীর উপরের পোশাকে একটি ছোট ছিদ্র যার মধ্যে একটি লাল দাগ আছে। পুরুষ পুলিশটির জুতায় একটি কমলা রঙ্গের পাতা আটকে ছিল যা একপাশ থেকে খোঁচা দিচ্ছিল।
মহিলা পুলিশটি মিসেস সিয়ারসকে জড়িয়ে ধরে তার বাসায় নিয়ে গেল।
আমি ঘাস থেকে মাথা তুললাম।
পুলিশটি আমার পাশে বসল এবং বলল, “young man, তুমি কি আমাকে বলবে এখানে কি হচ্ছে?”
আমি উঠে দাড়ালাম এবং বললাম, “কুকুরটি মৃত।”
“আমি এটা জানি,” সে বলল।
আমি বললাম, “আমার ধারণা কেউ তাকে মেরে ফেলেছে।”
সে জিজ্ঞেস করল, “তোমার বয়স কত?”
আমি জবাব দিলাম, “১৫ বছর ৩ মাস ২ দিন।”
“আর বাগানের মধ্যে তুমি আসলে কি করছিলে?” সে জিজ্ঞেস করল।
“আমি কুকুরটিকে জড়িয়ে ধরেছিলাম।” জবাব দিলাম।
“এবং কেন তুমি কুকুরটিকে জড়িয়ে ধরে ছিলে?” সে জানতে চাইল।
কঠিন প্রশ্ন। কারন ব্যাপারটা ছিল সেরকম যা আমার করতে ইচ্ছা করছিল। আমি কুকুর খুব পছন্দ করি এবং আমি কষ্ট পেয়েছি যখন দেখলাম কুকুরটি মৃত।
আমি পুলিশও পছন্দ করি। আর আমি চেয়েছি প্রশ্নের উত্তর সঠিকভাবে দিতে। কিন্তু পুলিশটি আমাকে সঠিক উত্তর বলার যথেষ্ট সময় দেয়নি।
“কেন তুমি কুকুরটিকে জড়িয়ে ধরেছিলে?” সে আবার জানতে চাইল।
আমি বললাম, “আমার কুকুর ভাল লাগে।”
“তুমি কি কুকুরটিকে মেরেছ?” সে প্রশ্ন করল।
আমি বললাম, “আমি কুকুরটিকে মারিনি।”
“এটা কি তোমার ফর্ক।” সে জিজ্ঞেস করল।
আমি বললাম, “না।”
“এই ব্যাপারে তোমাকে আপসেট লাগছে।” সে বলল।
পুলিশটি অনেক বেশি প্রশ্ন করছিল এবং খুব দ্রুত প্রশ্ন করছিল। সেগুলো আমার মাথার মধ্যে জমা হতে লাগল অনেকটা আংকেল টেরির ফ্যাক্টরীর রূটিগুলোর মত। ফ্যাক্টরীটি একটি বেকারী এবং সেখানে আংকেল টেরি স্লাইসিং মেশিন চালায়। সেখানে কখনো কোনো স্লাইসার দ্রুত কাজ না করলে একের পর এক রুটি এসে ব্লকেজ তৈরি করে।
মনটাকে আমার মাঝে মাঝে মেশিনের মত মনে হয়। কিন্তু একেবারে স্লাইসিং মেশিন না, এটা খুব সহজেই অন্যের কাছে ভেতরে কি চলছে জানিয়ে দেয়।
অফিসারটি বলল, “আমি তোমাকে আরেকবার জিজ্ঞেস করছি…”
আমি উপুর হয়ে আবার মাটিতে কপাল রাখলাম এবং গোঙ্গানীর মত শব্দ করতে লাগলাম। আমি তখনই ওরকম শব্দ করি যখন অতিরিক্ত তথ্য বাইরের জগৎ থেকে আমার মাথায় ঢুকে যায়। অনেকটা যখন তুমি আপসেট থাক তখন রেডিও কানের উপর চেপে দুটা স্টেশনের মাঝে টিউন করা এবং তখন যে হোয়াইট নয়েজটি শোনা যায় সেটাকে ভলিউমে বাড়িয়ে দেওয়ার মত ব্যাপার যেন তুমি সেটাই শুনছ এবং নিরাপদে আছ। অন্যকিছু তোমার কানে আসছে না।
পুলিশটি আমাকে টেনে তুলল।
আমাকে তার স্পর্শ করাটা আমি পছ্ন্দ করিনি।
এবং তখনি তাকে আমি আঘাত করি।
অধ্যায় : ১৩
এটা কোনো funny গল্প হবে না। আমি fun করতে পারিনা, কারন আমি fun ধরতে পারিনা। আমার বাবার কাছ থেকে শোনা একটি কৌতুক বলি-
“His face was drawn but the curtains were real”
কেন এটা funny আমি জিজ্ঞেস করে জেনেছি। কারনটা হল, “drawn” এর তিনটি অর্থ রয়েছে।
১। পেন্সিল দিয়ে রং করা হয়েছে।
২। ক্লান্ত বা বিধ্বস্ত।
৩। টেনে সরানো হয়েছে।
১ নাম্বার অর্থটি face এবং curtain দুইটার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। কিন্তু দুই নাম্বার অর্থটি শুধু face এবং ৩ নাম্বার অর্থটি শুধু curtain এর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
যদি আমি একই শব্দের তিনটি ভিন্ন অর্থ তৈরি করে কৌতুকটি নিজেকে বলি, সেটা হবে অনেকটা একই সময়ে তিনটা তিন ধরনের গান শোনার মত ব্যাপার। যা খুবই বিরক্তিকর ও বিভ্রান্তিকর
এবং হোয়াইট নয়েজ এর মত মজার না। একই সময়ে তিনজন মানুষ তিনটি ভিন্ন বিষয়ে তোমার সাথে কথা বলার চেষ্টা করছে তেমন একটা ব্যাপার।
এই কারনেই এই গল্পে কোনো কৌতুক নেই।
চলবে .....
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ৮:৫২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




