অধ্যায় : ১৭
পুলিশটি কিছুক্ষন কোনো কথা না বলে আমার দিকে তাকিয়ে থাকল।
এরপর বলল, “আমি তোমাকে একজন পুলিশ অফিসারকে আক্রমনের দায়ে অ্যারেস্ট করলাম।”
এই ঘটনায় অনেকটা শান্ত হলাম কারণ টেলিভিশনে এবং মুভিতে পুলিশ এভাবেই কথা বলে।
তারপর সে বলল, “আমি তোমাকে পুলিশের গাড়ীতে ওঠার নির্দেশ দিচ্ছি। আর যদি তুমি আবার কোনো রকম বাদরামি করার চেষ্টা কর, দুষ্ট ছেলে, আমি সত্যি সত্যি ধৈর্য হারাব। বুঝতে পেরেছ।”
আমি পুলিশের গাড়ীর দিকে হাটলাম। গাড়ীটি গেটের বাইরে পার্ক করা ছিল। সে পেছনের দরজা খুলে দিল এবং আমি ভেতরে ঢুকলাম। তারপর পুলিশটি ড্রাইভারের সিটে বসে বাড়ীর ভেতরে মহিলা পুলিশটির সাথে যোগাযোগ করল।
"ছোট বিচ্ছুটি এইমাত্র আমার উপর আক্রমন করেছে, কেট, তুমি কি মিসেস সিয়ারসের সাথে কিছুক্ষন থাকবে, আমি ওকে স্টেশন এ নিয়ে যাব?"
মহিলা পুলিশটি বলল, “অবশ্যই, তোমার সাথে তাহলে পরে দেখা হবে।”
“ওকিডকি”, সে বলল।
এরপর আমরা রওনা দিলাম। পুলিশের গাড়ীটিতে বাসি চিপস, আফটার সেভ আর গরম প্লাস্টিকের গন্ধ ছিল।
যখন আমরা মধ্য শহরের দিকে যাচ্ছিলাম, আমি আকাশের দিকে তাকালাম। সেটা ছিল পরিস্কার রাত এবং মিল্কিওয়ে পর্যন্ত দেখা যাচ্ছিল।
কেউ কেউ মনে করে মিল্কিওয়ে একটি লম্বা তারার সারি। আসলে আমাদের ছায়াপথ একটি বিশাল চারার চাকতি যা লক্ষ লক্ষ আলোকবর্ষ পর্যন্ত বিস্তৃত এবং সৌর জগতটি এই চাকতির বাইরের দিকের একপাশে অবস্থিত।
যখন তুমি চাকতির ৯০' কোণে A এর দিকে তাকাবে, খুব বেশি তারা চোখে পরবে না। কিন্তু যখন B এর দিকে তাকাবে অনেক বেশি তারা দেখতে পাবে। কারণ তুমি ছায়াপথের মূল অংশের দিকে তাকিয়ে আছ এবং চাকতির মতো ছায়াপথের তারার সারি দেখছ।
তারপর আমি ভাবলাম কেন বিজ্ঞানীরা এতদিন ধাঁধাঁয় ছিল যে, লক্ষ লক্ষ তারা থাকা সত্তেও রাতের আকাশ কালো কেন। যেদিকে তাকানো যায় সেদিকেই তারা দেখা যায়,তাহলে আকাশ তারার আলোয় উজ্জল হওয়ার কথা, পৃথিবীতে আলো আসার পথ বন্ধ করার উপায় নেই বললেই চলে।
পরে বিজ্ঞানীরা বের করল, বিশ্বজগৎ ছড়িয়ে যাচ্ছে। বিগ ব্যাং এর পর থেকে তারা গুলো একে অপরের থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। সবচেয়ে দূরের তারাগুলো সবচেয়ে দ্রূত সরছে। কিছু কিছু তারা প্রায় আলোর গতিতে ছুটছে। একারনেই তাদের আলো কখনো আমাদের এখানে এসে পৌছায় না।
এই তথ্যটা আমার ভালো লেগেছে। এটা এমন যে, কাউকে না প্রশ্ন করেই রাতের আকাশের দিকে তাকিয়ে চিন্তা করে বের করা যায়।
আর যখন বিশ্বজগতের এই সম্প্রসারণ থেমে যাবে, তখন সব তারারা মন্থর হবে। অনেকটা একটি বলকে আকাশে ছোড়ার মত। তারাগুলো একসময় থামবে এবং বিশ্বজগতের কেন্দ্রের দিকে রওনা হবে এবং কোনোকিছুই আর তখন তারাগুলোর আলো দেখা থেকে বিরত রাখতে পারবে না। কারন ওরা আমাদের দিকেই আসবে। ক্রমশ জোড়ে, আরো জোড়ে। আমরা জানব পৃথিবী ধ্বংস হচ্ছে কারন যখন আমরা রাতের আকাশের দিকে তাকাব, দেখব কোনো অন্ধকার নেই, শুধু লক্ষ লক্ষ তারার উজ্জল আলো, সবগুলো নেমে আসছে।
আসলে প্রকৃতপক্ষে কেউই সেটা দেখতে পারবেনা। কারন ঘটনাটা দেখার জন্য পৃথিবীতে কেউ তখন বেঁচে থাকবে না। সবাই ততদিনে সম্ভবত বিলুপ্ত হয়ে যাবে। যদি বেঁচেও থাকে তারা সেটা দেখতে পাবে না, কারন আলো খুবই উজ্জল এবং উত্তপ্ত হবে যে সবাই পুড়ে মারা যাবে। এমনকি তারা টানেলের মধ্যে থাকলেও।
অধ্যায় : ১৯
সচরাচর গল্প বা উপন্যাসের অধ্যায়গুলো কার্ডিনাল সংখ্যায় অর্থাৎ সাধারণ ধারবহিক সংখ্যাবাচক পদ্ধতি যেমন ১,২,৩,৪,৫,৬, এভাবে দেওয়া থাকে। কিন্তু আমি ঠিক করেছি আমার গল্পের অধ্যায়গুলো মৌলিক সংখ্যায় হবে। কারন আমি মৌলিক সংখ্যা পছন্দ করি। মৌলিক সংখ্যা বের করার পদ্ধতি বলে দিচ্ছি। তোমাকে প্রথমে পৃথিবীর সব ধনাত্বক পূর্ণ সংখ্যা লিখতে হবে। যেমন-
১,২,৩,৪,৫,৬,৭,৮,৯,১০,
১১,১২,১৩,১৪,১৫,১৬,১৭,১৮,১৯,২০,
২১,২২,২৩,২৪,২৫,২৬,২৭,২৮,২৯,৩০,
৩১,৩২,৩৩,৩৪,৩৫,৩৬,৩৭,৩৮,৩৯,৪০,
৪১,৪২,৪৩,৪৪,৪৫,৪৬,৪৭,৪৮,৪৯,...ইত্যাদি।
এখন তুমি দুই এর গুনিতক গুলো বাদ দাও, মানে যেসব সংখ্যা দুই দিয়ে ভাগ করা যায় সেগুলো। এরপর তিন এর গুনিতকগুলো বাদ দাও। এরপর ৪,৫,৬,৭ এভাবে এদের গুনিতকগুলো বাদ দাও। যে সংখ্যাগুলো রয়ে যাবে ওগুলো মৌলিক সংখ্যা।
২,৩,৫,৭,১১,১৩,১৭,১৯,২৩,২৯,৩১,৩৭,৪১,৪৩,৪৭,...ইত্যাদি।
মৌলিক সংখ্যা বের করার পদ্ধতি খুব সহজ। কিন্তু এখন পর্যন্ত কেউ খুব বড় একটি সংখ্যা মৌলিক কিনা অথবা পরবর্তী মৌলিক সংখ্যা কোনটি বের করার সহজ কোনো পদ্ধতি বের করতে পারেনি। যদি সংখ্যাটি সত্যিই খুব বড় হয় তাহলে একটি কম্পিউটারেরও কয়েক বছর লেগে যায় সংখ্যাটি মৌলিক কিনা বের করতে।
মৌলিক সংখ্যা কোড লেখার জন্য কাজে লাগে। আমেরিকাতে সেগুলো মিলিটারী মেটারিয়ালে অন্তরভুক্ত। আর তুমি যদি ১০০ অঙ্কের উপরে কোনো মৌলিক সংখ্যা বের করে সিআইএ কে বল, ওরা সেটা ১০০০০ ডলার দিয়ে কিনে নিবে। কিন্তু এটা টাকা আয় করার কোনো সহজ পদ্ধতি না।
মৌলিক সংখ্যা হল অবশিষ্ট সেই সব সংখ্যা যখন তুমি সব প্যাটার্ন সরিয়ে ফেলবে। আমি মনে করি মৌলিক সংখ্যা অনেকটা মানুষের জীবনের মত, তারা খুব যৌক্তিক কিন্তু তুমি নিয়মে ফেলতে পারবে না। এমনকি যদি তুমি তোমার সকল সময় ওদের পিছনে ব্যয়ও কর।
চলবে .....
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ৯:২৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




