অধ্যায় ৩১
রাত ১ টা ১২ মিনিটে বাবা পুলিশ স্টেশনে পৌছায়। ১ টা ২৪ মিনিট পর্যন্ত আমি তাকে দেখিনি কিন্তু জানতাম সেখানে সে ছিল। কারন, আমি তার কথা শুনেছি।
সে চিৎকার করছিল, “আমি আমার ছেলেকে দেখতে চাই, এবং কেন তাকে বন্দী করা হয়েছে! আর অবশ্যই আমি ক্ষুদ্ধ!”
তখন শুনলাম একজন পুলিশম্যান তাকে শান্ত হতে বলছে। এরপর অনেক্ষণ কিছু শোনা গেল না।
১ টা ২৪ মিনিটে একজন পুলিশ সেলের দরজা খুলল এবং আমাকে বলল, কেউ একজন আমার সাথে দেখা করতে এসেছে।
আমি বাইরে পা রাখলাম। বাবা করিডোরে দাড়িয়ে ছিল। সে তার ডান হাত উঁচু করল এবং আঙ্গুলগুলো ফ্যানের মতো ছড়াল। আমি আমার বাম হাত উঁচু করে আঙ্গুলগুলো ফ্যানের মতো ছড়ালাম। তারপর আমরা আমাদের বৃদ্ধাঙ্গুল এবং অন্য আঙ্গুলগুলো স্পর্শ করলাম। আমরা এই কাজটি করি কারণ, মাঝে মাঝে বাবা আমাকে জড়িয়ে ধরতে চায় কিন্তু আমি ব্যপারটা পছন্দ করিনা এর পরিবর্তে আমরা এই কাজটি করি। এবং এর মানে সে আমাকে ভালোবাসে।
তখন পুলিশম্যানটি আমাদেরকে করিডোর থেকে অন্যরুমে নিয়ে গেল। রুমটির মধ্যে একটি টেবিল এবং তিনটি চেয়ার ছিল।
সে আমাদের টেবিলের একপাশের চেয়ারে বসতে বলে নিজে অন্যপাশের চেয়ারে বসল। টেবিলে একটি টেপ রেকর্ডারও ছিল। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, আমাকে কি ইন্টারভিউ দিতে হবে এবং সে কি সেই ইন্টারভিউ রেকর্ড করবে?
সে বলল, “আমি মনে করি না সেটার কোনো প্রয়োজন আছে।”
সে ছিল একজন ইনস্পেক্টর। আমি সেটা বলতে পারি কারণ সে কোনো ইউনিফর্ম পড়ে ছিল না। তার নাকটি খুব রোমশ ছিল। এটা দেখাচ্ছিল যেন দুটি ছোট ইঁদুর তার নাকের ছিদ্রে লুকিয়ে আছে।
সে বলল, “আমি তোমার বাবার সাথে কথা বলেছি। তিনি জানিয়েছেন, তুমি পুলিশকে আঘাত করতে চাওনি।”
আমি কিছু বললাম না কারণ সেটা কোন প্রশ্ন ছিল না।
সে বলল, “তুমি কি পুলিশম্যানটিকে আঘাত করতে চেয়েছিলে?”
আমি বললাম, “হ্যা।”
সে তার মুখ কুঁচকাল এবং বলল, “কিন্তু তুমি তো পুলিশম্যানটিকে আহত করতে চাওনি?”
আমি এই সম্পর্কে ভাবলাম এবং বললাম, “না। আমি পুলিশম্যানটিকে আহত করতে চাইনি। আমি শুধু চেয়েছিলাম তাকে আমাকে স্পর্শ করা থেকে থামাতে।”
তখন সে বলল, “তুমি কি জান, একজন পুলিশকে আঘাত করা একটি অপরাধ। জান তুমি?”
আমি বললাম, “আমি জানি।”
সে কিছুক্ষন চুপ থেকে জিজ্ঞেস করল, “তুমি কি কুকুরটিকে মেরেছ, ক্রিস্টোফার?”
আমি বললাম, “আমি কুকুরটিকে মারিনি।”
সে বলল, “তুমি কি জান পুলিশের সাথে মিথ্যা কথা বলাও অপরাধ এবং তুমি মিথ্যা বললে খুব বিপদে পড়বে।”
আমি বললাম, “হ্যা।”
সে বলল, “তাহলে তুমি কি জান কে কুকুরটিকে মেরেছে?”
আমি বললাম, “না।”
সে বলল, “তুমি কি সত্য কথা বলছ?”
আমি বললাম, “হ্যা, আমি সবসময় সত্য কথা বলি।”
সে বলল, “ঠিক আছে, আমি তোমাকে একটি সতর্কতা দিচ্ছি।”
আমি জিজ্ঞেস করলাম, “এটা কি একটি সার্টিফিকেটের মত হবে, যেটা আমি আমার কাছে রাখতে পারব?”
সে জবাব দিল, “না, একটি সতর্কতা মানে তুমি কি করেছ সেটার আমরা একটা রেকর্ড রাখব। যেমন, তুমি একজন পুলিশম্যানকে আঘাত করেছ কিন্তু ওটা ছিল একটা দূর্ঘটনা এবং তুমি পুলিশম্যানটিকে আহত করতে চাওনি।”
আমি বললাম, “কিন্তু ওটা কোনো দূর্ঘটনা ছিল না।”
তখন আমার বাবা বলল, “ক্রিস্টোফার প্লিজ।”
পুলিশম্যানটি তার মুখ বন্ধ করল এবং নাক দিয়ে জোড়ে নি:শ্বাস ছেড়ে বলল, “তুমি যদি আরো কোনো ঝামেলায় জড়িয়ে পড় আমরা রেকর্ডটি বের করে দেখব, তোমাকে একটি সতর্কতা দেওয়া হয়েছিল এবং আমরা ব্যপারগুলো খুব গুরুত্বসহকারে নিব। তুমি কি বুঝতে পারছ, আমি কি বলছি?”
আমি জানালাম যে, আমি বুঝেছি।
তখন সে বলল আমরা চলে যেতে পারব। সে উঠে দাড়াল এবং দরজা খুলে দিল।
আমরা করিডোর দিয়ে হেঁটে সামনের ডেস্কের কাছে আসলাম। সেখান থেকে আমার সুইস নাইফ, তারের টুকরা, কাঠের পাজল, টবির জন্য ৫ প্যালেট ইঁদুরের খাবার, আমার £ ১.৪৭ , পেপার ক্লিপ, আমার সমানের দরজার চাবি তুলে নিলাম। সবকিছু একটি ছোট প্লাস্টিকের ব্যাগে ছিল। আমরা বের হয়ে বাবার গাড়ির দিকে গেলাম। ওটা বাইরে পার্ক করা ছিল এবং আমরা ড্রাইভ করে বাসায় পৌছালাম।
চলবে .....
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে মে, ২০১৩ ভোর ৬:৫৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




