টুনটুন শব্দে যখন নবযুগের নতুন যন্ত্রটি বাজিয়া উঠিল তখন ধ্যান ভগ্ন করিয়া আমি আকাশের দিকে তাকাইলাম।প্রসঙ্গত বলিয়া দেওয়া উচিৎ যে, কিছুদিন যাবত আমি আমার বাগানে চালতা গাছের নিচে বসিয়া ধ্যান করিতেছিলাম। ধ্যান বলিলে নিজেকে ঋষি-মুনি বলিয়া মনে হওয়াতে ইহাকে আর "মেডিটেশন" বলিলাম না। আরো একটা কথা না বলিলে অন্যায় হইবার সম্ভবনা সমূহ তাহা এই যে, আমার বাগানটি আমাদের ত্রিতল বিশিষ্ট দালানের ছাদের উপর। ত্রিতল বিশিষ্ট এই দালানটি আমাদের থাকিবার, খাইবার, ঘুমাইবার এবং কাজ করিবার স্থান। আমাদের "এ্যাডমিনিসট্রেটর"গন এযুগের কৃতদাস বানাইবার জন্যই বোধ করি এরূপ ব্যবস্থা করিয়া থাকিবেন।
কৃতদাস বা অকৃতদাস যেই ভাবেই বলা হউক না কেনো, আমি বিগত সাড়ে চার বৎসর ধরিয়া এই ত্রিতল বিশিষ্ট দালানের মধ্যে বসবাস এবং কর্মরত আছি। সময় কাটাইবার জন্যই হউক অথবা নিজেকে সৃজনশীল বলিয়া প্রমান করিবার জন্যই হউক, আমি ধীরে ধীরে একটু একটু করিয়া ছাদের উপর একটা আস্তো বাগান রচনা করিয়া ফেলিলাম। সেই বাগানের মধ্যে রাত্রিকালে বসিয়া ধ্যানের ভান করিবার সময়ই নবযুগের নবীন যন্ত্রটি টুনটুন করিয়া মধুর ভাবে বাজিয়া উঠিলো।।
যন্ত্রটির "সবুজ" রঙের "বোতাম"টি চাপিয়া ধ্যান মগ্ন ঋষির মতোই ধীর গম্ভীর কন্ঠে বলিলাম, "কে বলিতেছেন?"
অপর পক্ষ হইতে উত্তর আসিলো,"আমি নীতিশা"।
গভীর ভাবে পর্যালোচনা করিলে এই দুইটি কথার মধ্যে মন্দ কিছু খুজিয়া পাওয়া বড়ই দুরূহ ব্যাপার হইয়া দাড়াইবে। কিন্তু আমার কন্ঠ হইতে ঋষি মূনি ভাব এবং গাম্ভীর্য খসিয়া পড়িলো। বলিলাম,"আবারো শুরু করিলে", অপর পক্ষ হইতে যে অম্ল মধুর বাক্য সকল বাহির হইতে লাগিলো তাহা শুনিলে ঋষি মূনি ভাব খসিয়া পড়া তো সহজ ব্যাপার, ঋষি মূনিত্ব চলিয়া যাইবার সম্ভবনা ষোলো আনা।
ইনি আমার স্ত্রী।।
[চলবে]
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৮ দুপুর ১:১৬

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




