সম্প্রতি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর ব্লগ সহ বিভিন্ন জায়গায় একটি বিষয় আলোচিত হচ্ছে ছাত্রলীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ হওয়া উচিত। আবার কেউ বলছে এটা বিছিন্ন ঘটনা কয়েকদিনের মধ্যেই সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। নিষিদ্ধ করা উচিত হবেনা বলে তারা মন্তব্য করছে। আবার অনেককেই একথা বলতে শোনা যাচ্ছে যে বাংলাদেশে ছাত্ররাজনীতিরই কোন প্রয়োজন নেই। ছাত্ররাজনীতিতে ইতিবাচক কোন ফল নেই। তারা শুধুমাত্র ধ্বংসাত্বক কাজ করে। সরকারী দলের ছাত্রসংগঠন হলে চাঁদাবাজী, টেন্ডারবাজীই, নিজেদের মধ্যে কোন্দল এবং বিরোধী ছাত্রসংগঠনের নেতা কর্মীদের মারধর করাই প্রধান কাজ। আর ক্যাডার ও কর্মীরা হলে ভাল ভাবে থাকতে পছন্দনীয় কক্ষে থাকতে পারে। যাকে ইচ্ছা হল থেকে বের করে দিতে এবং যাকে ইচ্ছা হলে ওঠাতে পারে। পুরোপুরি ফাও খেতে না পারলেও অন্যান্যদের তুলনায় কম টাকা দিয়ে খাওয়ার যায়। অবশ্য বড় কোন নেতার সাথে বড় ভাইই চা নাস্তা ও খাবার বিল দিয়ে দেন। এজন্যই সরকারী দলের কর্মী ও ক্যাডারের অভাব হয় না। আর বিরোধী দল মানেই মার খেয়ে হাসপাতালে থাকা অথবা অথবা মার খাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকা। একই সাথে পরবর্তীতে দল ক্ষমতায় আসার জন্য অপেক্ষা করা। এই অপেক্ষা করতে করতে কারো কারো ছাত্রজীবনই শেষ হয়ে যায়।
যা হোক ছাত্ররাজনীতির ইতিবাচক ফলাফল আছে এটা অস্বীকার করার উপায় নেই কিন্তু বর্তমানে উপকারের থেকে অপকার হচ্ছে বেশি। যা দেশের সার্বিক অবস্থার জন্য ক্ষতিকর। এজন্য সাময়িকভাবে হলেও ছাত্ররাজনীতি বন্ধ রাখা উচিত।
অন্তত পরীক্ষামূলক ভাবে হলেও এটা দরকার।
কিন্ত বাংলায় একটি কথা আছে বিড়ালের গলায় ঘন্টা বাঁধবে কে?
এই কাজটা প্রথম শুরু করার লোক সমাজে বড় অভাব।
আওয়ামীলীগ এখন ক্ষমতায় আছে তারা করবে না। আবার বিএনপি ক্ষমতায় এলেও এই কাজটি করবে না। কারন ক্ষমতায় টিকে থাকতে হলে হলে সহায়ক কিছু হাতিয়ার লাগে আর এই শক্তিশালী হাতিয়ার হচ্ছে ছাত্রলীগ এবং ছাত্রদল।
তাই আপনারা নিজের ঘর, অফিস, সাইবার ক্যাফে বসে ব্লগে যতই ঝড় তোলেন তা মনে হয় কোন কাজে আসবে না। সবই পন্ডশ্রম। তবে কেউ যদি লিখে নিজে আনন্দ পেতে পারেন সেটুকু নিয়ে সন্তুষ্ট থাকা ছাড়া তেমন কোন লাভ হবে বলে মনে হচ্ছে না।
আর আমাদের দেশে সুশীল সমাজের রাজনীতির কাছে ঝানু রাজনীতিবীদরাও যেন হার মানতে বাধ্য হচ্ছে। নিরপেক্ষতার এবং দেশপ্রেমিক ধ্বজাধারী সবচেয়ে স্বার্থপর এই গোষ্ঠীটি বাংলাদেশের সবচেয়ে ক্ষতি করছে বলে আমার কাছে মনে হচ্ছে।
যাহোক উন্নয়নশীল দেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা তারা জাতীয় জনগুরুত্বপূর্ন কোন বিষয়ে একমত হতে পারেনা। নিজেদের একগুয়েমী নিয়েই একে অপরের কুৎসা রটনা করতেই ব্যস্ত থাকে। আর আমরা জনগণও যে কি? এই মূহুর্তে আমার হেগেলের রাষ্ট্রতত্বের কথা মনে পড়ছে। তিনি গনতন্ত্রে বিশ্বাসী ছিলেন না। তিনি জনগণকে সবচেয়ে বোকা/নির্বোধ বলেছেন। এই বোকা ও নির্বোধেরা কিভাবে তাদের শাসক নির্বাচন করবে।
বাংলাদেশ একটি দেশ যার জনগন ছাগলের মত আচরণ করে। ছাগলের মত আচরণ বলতে বোঝাচ্ছি ছাগল যেমন বেড়ার একপাশে থাকলে অপর পাশের ঘাস বেশি সবুজ মনে করে বেড়া ভেঙ্গে যেতে চায়। বাংলাদেশের মানুষও একই রকম ভাবে একবার আওয়ামীলীগের দিকে তো অন্যবার বিএনপির দিকে ঝোকে।
আর লিখতে পারছি না ঘুম আসছে.................................................