somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

কাজী জহির উদ্দিন তিতাস
কাজী জহির উদ্দিন তিতাস ১৯৮৩ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সদর উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের চিলোকূট গ্রামের কাজী বংশে জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতার নাম কাজী জালাল উদ্দিন, মাতার নাম মোছা ঃ নূরুন্নাহার বেগম।

বিকৃত লালসার পুরুষদের কাছে মৃত নারীরাও নিরাপদ নয়!

১৬ ই জানুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৩:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ধর্ষণ নিয়ে ইতিপূর্বে বহুবার লেখালেখি হয়েছে। ধর্ষণ আমাদের সমাজে একটি মারাত্মক রূপ ধারণ করেছে। নারী থেকে শিশু এমনকি বৃদ্ধারাও বিকৃত লালসার পুরুষদের কাছে নিরাপদ নয়। সম্প্রতি সিআইডির তথ্যমতে আমাদের সমাজের মৃত নারীগণও নিরাপদ নয় বিকৃত লালসার পুরুষ সমাজের কাছে। তেমনি একটি ”াঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে সিআইডির তদন্তে। এ বিষয়ে দৈনিক আমাদের সময়ের একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে আজ। প্রতিবেদনটি লিখেছেন হাসান আল জাভেদ। দৈনিক আমাদের সময় পত্রিকার সেই হুবহু রিপোর্টটি পাঠকদের জ্ঞাতার্থে এখানে তুলে ধরছি।

আত্মহননকারী কিশোরীর দেহে ধর্ষণের আলামত
সেই মুন্নার বিকৃত চিন্তায় হাজত খাটে নিরপরাধীও


রাজধানীর আদাবর এলাকার একটি বাড়ি থেকে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় ১৭ বছর বয়সী কলেজছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নেওয়া হয় শেরেবাংলা নগরের শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল মর্গে। ফরেনসিক রিপোর্টে মেয়েটির দেহে মিলে ধর্ষণের আলামত। এতে জড়িত সন্দেহে আত্মহননের অভিযোগ আনা ছাত্রীর বয়ফ্রেন্ড ও তার এক বন্ধুকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

তদন্তের ফেরে তাদের কারাহাজতে থাকতে হয় বেশ কিছুদিন। তবে ডিএনএ টেস্টে মিলে মুক্তি। প্রমাণ হয় দুজনই নির্দোষ। মূলত লাশকাটা ঘরে ডোমের সহযোগী বছর কুড়ির মুন্না ভগতের বিকৃত যৌন লিপ্সার শিকার হয় কিশোরীর নিথর দেহ।

আদাবর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সেলিম হোসেন বলেন, ‘মেয়েটি আত্মহত্যা করলেও ধর্ষণের অভিযোগ ছিল না। কিন্তু ফরেনসিক রিপোর্টে সেই আলামত পাওয়ায় নিহতের পরিবারের তথ্য মতে আমরা তার বয়ফ্রেন্ড ও বন্ধুকে গ্রেপ্তার করি। জিজ্ঞাসাবাদে অবশ্য তারা অপরাধ অস্বীকার করে। এতদিন পর ডিএনএ টেস্ট প্রমাণ করে ছেলে দুটি সত্যিই নির্দোষ। মৃতদেহে শুক্রাণু পাওয়া গেছে মর্গের সহকারী মুন্না ভগতের। তাই ডিএনএ প্রমাণসহ আদালতে আমরা চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করলে কিশোরীর প্রেমিক ও তার বন্ধু খালাস পায়।’

শুধু আদাবরের এই কিশোরীকেই নয়, মুন্নার বিকৃত লালসার শিকার হয় আরও অনেক নারী ও শিশুর মরদেহ। তদন্তে বিষয়টি ধরা পড়ায় গত ১৯ নভেম্বর পুলিশের তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) তাকে গ্রেপ্তার করে। সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পশ্চিম) মামলার তদন্তকালে ২০১৯ সালের মার্চ থেকে মুন্নাকে গ্রেপ্তারের আগ পর্যন্ত ওই মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো সব নারী-শিশুর মরদেহ থেকে সংগ্রহ করা ডিএনএ নমুনার প্রোফাইলিং করা হয়। এতে পাঁচ নারীর মরদেহে মুন্নার শুক্রাণুর প্রমাণ পাওয়া যায়।

সিআইডির তদন্ত সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, আগের পাঁচজন ছাড়াও নতুন করে আরও দুই নারীর দেহেও মুন্না ভগতের শুক্রাণু উপস্থিতি প্রমাণের ডিএনএ ফল এসেছে। এর মধ্যে আদাবর থানা এলাকায় ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধারকৃত এক নারীর মরদেহ, অন্যটি শেরেবাংলা নগর থানায় বিষপানে আত্মহত্যার ঘটনা। এর বাইরে আরও ছয় নারী-শিশুর দেহেও মুন্নার শুক্রাণু পাওয়া গেছে বলে সিআইডি মৌখিকভাবে জানতে পেরেছে।

এ বিষয়ে সিআইডির ঢাকা মেট্রো (পশ্চিম) বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার সামসুন নাহার আমাদের সময়কে বলেন, ‘মুন্না ভগত নামে মর্গ সহকারীর বিকৃত ওই ঘটনা প্রমাণ হওয়ার পর আমরা তার যোগদানের তারিখ থেকে গ্রেপ্তার হওয়া পর্যন্ত প্রতিটি নারী-শিশুর মরদেহ থেকে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করি। সেগুলো প্রোফাইলিংয়ের পর নতুন করে দুটি ধর্ষণের প্রমাণ মেলে। আরও কয়েকটি নমুনা প্রমাণের কথাও শুনছি।’

শিগগিরই সিআইডির মামলার চার্জশিট : মুন্না ভগত গ্রেপ্তারের পর তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনে শেরেবাংলা নগর থানায় একটি মামলা দায়ের করে সিআইডি। ওই মামলার সূত্র ধরে নতুন করে ডিএনএ পরীক্ষা, মর্গের ডোম যতন কুমার লাল, চিকিৎসকসহ সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য ও তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করা হয়।

সিআইডি বলছে, মুন্না ভগত হাসপাতাল মর্গের নিয়োগপ্রাপ্ত কোনো কর্মচারী নন। মর্গের ডোম যতন কুমারের ভাগ্নে। মামার হাত ধরেই ডোমের সহযোগী হিসেবে কাজ করতেন মুন্না। এ জন্য তাকে যে পারিশ্রমিক দেওয়া হতো তারও যথাযথ কোনো উৎস নেই। তাই অবৈধভাবে ভাগ্নেকে কাজ দেওয়ায় যতন কুমার লালকেও আসামি করে খুব শিগগির আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হবে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিউটন কুমার দত্ত বলেন, ‘যে কয়টি মরদেহে মুন্না ভগত তার বিকৃত রুচির বহির্প্রকাশ ঘটিয়েছে প্রতিটিতেই সংশ্লিষ্ট থানায় অপমৃত্যু বা অন্যান্য ধারায় মামলা রয়েছে। সিআইডির তদন্ত প্রতিবেদন বা ডিএনএ ফলাফলের সূত্র ধরে সংশ্লিষ্ট থানাগুলো আলাদভাবে প্রতিটি মামলা তদন্ত করতে পারবে।’

যেভাবে ধরা পড়ে মুন্না ভগত : নারী-শিশু হত্যা, ধর্ষণের প্রতিটি ঘটনায় মরদেহ ময়নাতদন্তের পাশাপাশি আলামতের ডিএনএ পরীক্ষা এবং প্রোফাইল তৈরির নির্দেশনা দেন আদালত। সে অনুযায়ী সিআইডির ফরেনসিক বিভাগ এসব মামলার আলামত সংগ্রহ করে আসছিল। পরীক্ষার জন্য কয়েকটি এইচভিএস (হাই ভ্যাজাইনাল সোয়াব) ডিএনএ ল্যাবে পাঠানো হয়। কিন্তু ২০১৯ সালের মার্চ থেকে আগস্টে শেরেবাংলা মেডিক্যাল মর্গে আনা নারীদের মৃতদেহে একজন পুরুষের শুক্রাণুর উপস্থিতি পেয়ে বিস্মিত হয় সিআইডি।

প্রথমদিকে শনাক্ত হওয়া পাঁচটি মরদেহে একই ব্যক্তির শুক্রাণুর উপস্থিতি প্রমাণের পর সিআইডি প্রাথমিকভাবে ধারণা করে, সবকটি হত্যাকান্ড ও ধর্ষণের ঘটনাগুলো সিরিয়াল কিলার বা রেপিস্টদের সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে। কিন্তু থানা পুলিশের সুরতহাল কিংবা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে মরদেহে ধর্ষণ পূর্ববর্তী কোনো আঘাতের চিহ্নও পাওয়া যাচ্ছিল না। এতে সন্দেহ ঘনীভূত হয়। সেই পুরুষকে চিহ্নিত করতে মাঠে নামেন সিআইডির কর্মকর্তারা।

অনুসন্ধানে উঠে আসে প্রত্যেক ভুক্তভোগীর মরদেহে শুক্রাণু থাকা ব্যক্তি আর কেউ নন, ডোম সহকারী মুন্না ভগত। তার বিকৃত যৌন লালসার ঘটনাগুলো ঘটেছে মর্গেই, যেখানে ময়নাতদন্তের জন্য রাখা লাশ পরের দিন কাটাকাটি করা হতো। আর সেই মরদেহ পাহারার দায়িত্বে থাকত মুন্না।

এই তো গেল দৈনিক আমাদের সময় পত্রিকার প্রতিবেদন। প্রতিবেদনটি সিআইডির বরাত দিয়ে প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে একটি নিথর মরদেহ দেখে নিজের মৃত্যুর কথা চিন্তা করার প্রয়োজন, সেখানে একটি নিথর মরদেহকে ধর্ষণ কিভাবে করা হয় তা কারো বোধগম্য নয়।

এছাড়া বিষয়টি আমাদের সমাজের সেই প্রচলিত বাস্তব প্রবাদ “রক্ষক হয়ে ভক্ষকের ভূমিকা পালন করা। মুন্না ভগতকে রাখা হয়েছিল মর্গের মৃতদেহকে পাহারা দেয়ার জন্য। অথচ সেই পাহাদারই মৃতদেহের সাথে মেতে উঠে বিকৃত লালসায়। এটাকে কি বলা যায়?

আমরা চাই গ্রেফতারকৃত মুন্নার যথোপযুক্ত শাস্তি যাতে করে আর কোন ব্যক্তি এমন জঘন্য কাজে জড়িত হতে চাইলে ভয়ে শিউরে উঠে।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জানুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৩:১৩
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×