somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

চলেপথিক
আমি মুক্তচিন্তায় বিশ্বাসী, কারণ মুক্তচিন্তা হলো এমন এক প্রকার দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গি যা বলে যে বিজ্ঞান ও যুক্তির আলোকে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিৎ , মতামত গঠনের ক্ষেত্রে প্রথা, অন্ধবিশ্বাস এবং কর্তৃপক্ষ দ্বারা প্রভাবান্বিত হওয়া বাঞ্ছনীয় নয় ।

স্বর্গের পথে

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ধর্মে বিশ্বাসী মানুষ মাত্রই এইম ইন ডেড হচ্ছে নরক কে পাস কাটিয়ে স্বর্গে পৌছে যাওয়া । যেখানে তার জন্য অপেক্ষা করছে সুদৃশ্য বাগান যার নিচ দিয়ে প্রবহমান সুশীতল জলধারা, ফুল আর ফলে সুশোভিত গাছ , মদিরার পাত্র হাতে দণ্ডায়মান আয়ত নয়না অপ্সরা আর মৃত্যুহীন এক অনন্ত জীবন । পরকালের এ জীবন পেতে হলে প্রধানতম শর্ত হছে পুণ্য করতে হবে । তার বিধান ঈশ্বর নিজেই নির্ধারণ করে দিয়েছেন ব্যক্তি বিশেষের কাছে তাঁর বানী প্রেরণের মাধ্যমে আবার কোন কোন ধর্মে ঈশ্বর স্বয়ং অবতীর্ণ হয়েছেন মর্তে । ঈশ্বরের এইসব বিধি বিধান পালনেই অর্জিত হবে পুণ্য খণ্ডিত হবে পাপ ফলে মিলবে স্বর্গ । কিন্তু যারা কোন দিন পাপ করেনি তেমন মানুষদের স্বর্গ গমনের একটি চমৎকার কাহিনি রয়েছে হিন্দু পুরাণে ।
তখন সত্য যুগের আরম্ভ । সবে মানুষের সৃষ্টি হয়েছে , সবাই তখন সাধু ; সত্য যুগতো বনে কুঠির বেঁধে সব থাকেন । ফল-মুলে জীবন ধারণ চলে, ভগবানের নাম করেন , আর পরমানন্দে দিন কাটে । মা লক্ষ্মী তখন বৈকুন্ঠে, অন্নপূর্ণা কৈলাসে, মানে সোনা-রুপা এমন কি অন্নের পর্যন্ত প্রচলন হয় নাই সংসারে । এই ভাবে এক পুরুষ কেটে গেলো । তখন অকাল মৃত্যু ছিলনা , কাজেই হাজার বছর পরে এক সঙ্গে এক পুরুষের মৃত্যুর সময় হয়ে এলো । মানুষেরা ঠিক করলেন - চল আমরা সশরীরে স্বর্গে যাব । যেমন সংকল্প তেমনি কাজ । বেরিয়ে পড়ল সব।

বদরিকা আশ্রম পার হয়ে হিমালয়ের পথে পিঁপড়ের সারির মত মানুষ চলতে লাগলো । ওদিকে স্বর্গদ্বারে দ্বারী ছিল, সে দেখতে পেল, লক্ষ লক্ষ মানুষ কলরব করতে করতে সে দিকে ছুটে আসছে । সে ভয়ে হন্তদন্ত হয়ে ছুটে গেল দেব-রাজ ইন্দ্রের কাছে - দেবরাজ মহা বিপদ উপস্থিত । কিসের বিপদ হে ? লক্ষ লক্ষ কারা স্বর্গের দিকে চলে আসছে পিঁপড়ের সারির মত , বোধ হয় দৈত্য-সৈন্য ।
দৈত্য-সৈন্য বল কি ? সঙ্গে সঙ্গে সাজ সাজ রব পড়ে গেলো । এমন সময় এলেন দেবর্ষি নারদ । বললেন দৈত্য নয় দেব-রাজ এরা মানুষ । তোমাদের অস্ত্রে ওদের কিছুই হবে না কারণ পাপ তো তাদের দেহে নাই , সুতরাং দেব-অস্ত্র অচল । দিব্যস্ত্র ফুলের মালা হয়ে যাবে তাদের গায়ে ঠেকে । তবে উপায় ? এত মানুষ যদি সশরীরে এখানে আসে তবে ? ইন্দ্র আর কথা বলতে পারলো না । তখন সবায় হয়তো দাবি করে বসবে এই সিংহাসন । শেষে বললেন চল নারায়ণের কাছে যাই । নারায়ণ শুনে হাসলেন , আচ্ছা চল দেখি । বলেই প্রথমেই পাঠালেন মা অন্নপূর্ণা কে । অন্নপূর্ণা এসে পথে এক বিশাল পুরী নির্মাণ করে ফেললেন , ভান্ডার পরিপূর্ণ করে রাখলেন এক-অন্ন পঞ্চাশ ব্যঞ্জনে । তারপর মানুষের দল সেখানে আসা মাত্র তাদের বললেন পথশ্রমে বড়ই ক্লান্ত তোমরা, আজকের মত তোমরা আমার আতিথ্য গ্রহণ কর । মানুষেরা পরস্পর মুখের দিকে চাইলো, রান্নার সুগন্ধে সকলেই মোহিত হয়ে গেলো । দলের কতক লোক কিন্তু মোহ কাটিয়ে বলল--স্বর্গের পথে বিশ্রাম করতে নাই । তারা এগিয়ে গেলো আর যারা থাকলো তারা অন্ন-ব্যঞ্জন খেয়ে পেট ফুলিয়ে সেখানেই শুয়ে পড়লো । বললে মা আমরা এখানেই যদি থাকি, রোজ এমনি খতে দেবে তো ? মা বললেন নিশ্চয় । তারা থেকে গেলো সেখানেই ।

যারা থামেনি, তারা চলল এগিয়ে । নারায়ণ তখন পাঠিয়ে দিলেন লক্ষ্মীকে । লক্ষ্মীর পুরী-- সোনার পুরী, সোনার পথ, সোনার ঘাট, সোনার ধুলো পুরীতে । দেখে মানুষের চোখ ধেধে গেল । মা বললেন এসব তোমাদের জন্য বাবা । এসো এসো পুরীতে প্রবেশ কর । এক দল প্রবেশ করলো । পথে আরও এক পুরী তখন নির্মাণ হয়ে আছে । ফুলের বাগান চারিদিকে , কোকিল ডাকছে , ভুবন ভুলানো গান শোনা যাচ্ছে -- আর এক অপূর্ব সুগন্ধ ভেসে আসছে । দরজায় দাঁড়িয়ে আছে অপ্সরার দল , এক হাতে তাদের অপরূপ ফুলের মালা আর এক হাতে সোনার পান পাত্র । তারা ডাকছে -- আসুন বিশ্রাম করুন , আমরা আপনাদের দাসী , সেবা করার জন্য দাঁড়িয়ে আছি । আপনারা তৃষ্ণার্ত - এই পানি পান করুন । সে পানি হচ্ছে স্বর্গীয় সুরা, দলে দলে লোক সেখানে ঢুকে পড়লো ।

নারায়ণ বললেন দেখতো ইদ্র আর কেউ আছে কি না ? ইন্দ্র স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বললেন -- না । ভাল করে দেখ । একটা কি যেন নড়ছে , বোধহয় একজন মানুষ । নারায়ণ বললেন স্বর্গদ্বার খুলে রাখ , তুমি নিজে পারিজাতের মালা হাতে দাঁড়িয়ে থাকো। আমার মত সম্মান করে তাকে স্বর্গে নিয়ে এসো । ওর পায়ের ধুলয় স্বর্গ পবিত্র হোক ।

------------------------------------------------



সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১:২৬
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদ: দিল্লির ছায়া থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৫:৫৭

একটা সত্য আজ স্পষ্ট করে বলা দরকার—
শেখ হাসিনার আর কোনো ক্ষমতা নেই।
বাংলাদেশের মাটিতে সে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত।

কিন্তু বিপদ এখানেই শেষ হয়নি।

ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা এখন ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭


এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

পশ্চিমা ইসলামবিদ্বেষ থেকে বাংলাদেশের ইসলামপন্থি রাজনীতি

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:৪৬


আমি যখন কানাডায় বসে পাশ্চাত্যের সংবাদগুলো দেখি, আর তার পরপরই বাংলাদেশের খবর পড়ি, তখন মনে হয় - পশ্চিমা রাজনীতির চলমান দৃশ্যগুলো বহু পথ পেরিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতির অন্ধকার প্রেক্ষাগৃহে আলো-ছায়ায় প্রতীয়মান... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×