somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাদেশের ৬৫ জেলার নামকরণের ইতিহাস : ময়মনসিংহ বিভাগ

০১ লা অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৯:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
রংপুর, রাজশাহী এবং খুলনা বিভাগের জেলাসমূহের নামকরণ


ময়মনসিংহ বিভাগ বাংলাদেশের অষ্টম প্রশাসনিক বিভাগ। জামালপুর, শেরপুর, ময়মনসিংহ ও নেত্রকোনা জেলা নিয়ে ময়মনসিংহ বিভাগ গঠিত। ১৮২৯ সালে ঢাকা বিভাগ প্রতিষ্ঠার সময় থেকে ২০১৫ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চল ঢাকা বিভাগের অংশ ছিল। ২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে ঢাকা বিভাগ ভেঙ্গে নতুন ময়মনসিংহ বিভাগ গঠনের ঘোষণা দেন। শুরুতে ঢাকা বিভাগের উত্তর অংশ থেকে প্রতিবেশী ৮টি জেলা নিয়ে পরে ৬টি জেলা নিয়ে ময়মনসিংহ বিভাগ গঠনের পরিকল্পনা করা হয়। এসময় টাঙ্গাইল ও কিশোরগঞ্জবাসী, ময়মনসিংহ বিভাগের অন্তর্ভুক্ত হতে অনীহা ও বিরোধীতা করে এবং ঢাকা বিভাগের অন্তর্ভুক্ত থাকতেই ইচ্ছাপোষন করে। অবশেষে ২০১৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর ৪টি জেলা নিয়ে ময়মনসিংহ বিভাগ গঠিত হয়। এ বিভাগের এর আয়তন ১০ হাজার ৪৮৫ বর্গকিলোমিটার ও জনসংখ্যা এক কোটি ১৩ লক্ষ ৭০ হাজার। (উইকিপিডিয়া)

ময়মনসিংহ বিভাগের জেলাসমূহের নামকরণ :

১. ময়মনসিংহ জেলাঃ-
ময়মনসিংহ জেলার নাম নিয়ে ইতিহাসবিদদের মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন মত প্রচলিত আছে। ষোড়শ শতাব্দীতে বাংলার স্বাধীন সুলতান সৈয়দ আলাউদ্দিন হোসেন শাহ তাঁর পুত্র সৈয়দ নাসির উদ্দিন নসরত শাহ’র জন্য এ অঞ্চলে একটি নুতুন রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, সেই থেকে নসরতশাহী বা নাসিরাবাদ নামের সৃষ্টি। সলিম যুগের উৎস হিসেবে নাসিরাবাদ, নাম আজও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য কোথাও নাসিরাবাদ কথাটি উল্লেখ্য করা হচ্ছে না। ১৭৭৯ সালে প্রকাশিত রেনেল এর ম্যাপে মোমেসিং নামটি ‘ময়মনসিংহ’ অঞ্চলকেই নির্দেশ করে। তার আগে আইন-ই-আকবরীতে ‘মিহমানশাহী’ এবং ‘মনমনিসিংহ’ সকার বাজুহার পরগনা হিসেবে লিখিত আছে। যা বর্তমান ময়মনসিংহকেই ধরা হয়।

২. জামালপুর জেলাঃ-
সাধক দরবেশ হযরত শাহ জামাল (র) এর পূণ্যস্মৃতি বিজড়িত নয়নাভিরাম সৌন্দর্যমন্ডিত গরো পাহাড়ের পাদদেশে যমুনা-ব্রক্ষ্মপুত্র বিধৌত বাংলাদেশের ২০-তম জেলা জামালপুর। হযরত শাহ জামাল (র) এর নামানুসারে জামালপুরের নামকরণ হয়।

৩। নেত্রকোনা জেলাঃ-
ব্রিটিশ প্রাশাসনিক আমলেই এই অঞ্চলটি ময়মনসিংহ জেলার অন্তর্গত ছিল। চাষ ও বাণিজ্য স্বার্থসংশ্লিষ্ট
ভীতকে সুসংহত করার লক্ষ্যে ব্রিটিশ প্রশাসন ময়মনসিংহ জেলার গারো পাহাড়ি ও হাওড়ি নেত্রকোনা জনপদকে শাসনের
আওতায় আনতে চেষ্টা চালিয়ে যায়। পরবর্তীতে এই লক্ষ্যে এখানে মহকুমা স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়। 'নাটোরকোণা' নামক
গ্রামে প্রাথমিক জরিপকর্ম সম্পন্ন করেন। নাটোরকোণা গ্রামটি বর্তমানে নেত্রকোনা জেলা শহরের সাত-আট কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত। উক্ত প্রাশাসনিক জরিপ শেষে নাটোরকোণা গ্রামে মহকুমা স্থাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এ সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রাশাসনিক কাজকর্ম নাটোরকোণা গ্রামেই চলতে থাকে। এই 'নাটোরকোণা' নামটিই কালে 'নেত্রকোনা' উচ্চারণরূপ ধারণ করে।
আবার অনেকেই মনে করেন, নেত্রকোনার আগের নাম ছিল কালীগঞ্জ।
এখানে নেত্রকোনা মহকুমা স্থাপিত হবার পরও বহুবছর মানুষ নেত্রকোনাকে কালীগঞ্জ বলেই অভিহিত করতেন। আরও লোকশ্রুতি রয়েছে, নেত্রকোনা শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত মগরা নদীর বাঁকটি চোখের বা নেত্রের কোণের মতো বলে এই এলাকার নামকরণ করা হয়েছে 'নেত্রকোনা'। আবার কেউ কেউ এমনও মনে করেন যে, মগড়া ও কংশনদী পরিবেষ্টিত এলাকটি দেখতে অনেকটা চোখের মতো বা নেত্রের কোণসর্দশ বলেই এই রকম নামকরণ হয়েছে। তবে ধারণা করা হয় যে, নেত্রকোনা শব্দটি 'নাটোরকোণা' থেকেই হয়েছে।

৪। শেরপুর জেলাঃ-
শেরপুরের নামকরণ সম্পর্কে ইতিহাসবিদ ও পন্ডিতরা বলেছেন, দিল্লির আকবর বাদশা খাতক মনসবদারী প্রদান করে দ্বাদশ পরিষদসহ বাংলাদেশের প্রেরন করেন । এই বারো জনের মধ্যে চারজন গাজী ও চারজন মজলিস বংশীয় পরিষদ ছিলেন । ঈশা খাঁর মৃত্যুর পর সপ্তদশ শতাব্দীর প্রথম ভাগেই গাজীগণ শেরপুর ও ভাওয়াল পরগনা গ্রহণ করেন । নাসিরুজিয়াল ও খালিয়াজুরি পরগানা মজলিসগণের ভাগে পড়ে । এই গাজী বংশের শেষ জমিদার ছিলেন শের আলী এবং তার নামানুসারে দশকাহনিয়া মহালের নতুন নাম হয় শেরপুর । একই তথ্য মেলে অন্যত্র, সৈয়দ মুর্তুজা আলী বলেছেন, ‘ময়মনসিংহের শেরপুরের নামকরণ হয়েছে ভাওয়ালের জমিদার শের আলী গাজী থেকে’ এই শেরপুর তখন একটি পরগনা ছিল, তারপর জমিদার প্রথা বিলুপ্তির পর পৌর শহর শেরপুর, মহকুমা শেরপুর -পন্ডিত ফসিহুর রহমান ।‘শেরপুর, নকলা, নালিতাবাড়ি, ঝিনাইগাতি ও শ্রীবরদী উপজেলার সমন্বয়েন১৯৮৪ সালের ১২ ই ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে জেলা শেরপুর ।

-চলবে
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৯:১০
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×