অস্তগামী সূর্যের শেষ ম্লান আলোকচ্ছটায় বড্ড মায়াময় লাগছে রাতুলের মুখখানী। দু’চোখ ভরা মৃত্যুর নেশা, মৃত্যু যেন হাতছানি দিয়ে ডাকছে।
কাঁপতে কাঁপতে ছাদের ঠিক কিনারায় দাঁড়িয়ে পড়ল রাতুল। অপেক্ষা শুধু টিপ টিপ করে জ্বলতে থাকা সূর্যটার নিভে যাওয়ার, সন্ধ্যাতারার জেগে ওঠার। সন্ধ্যাতারাকে সাক্ষী রেখে রাতুল আত্নহত্যা করবে, নিজেকে বিলীন করে দেবে রহস্যের পরপারে। যেখানে কোনো দূঃখ তাকে স্পর্শ করবে না।
রাতুল আত্নহত্যা করবে, দেহটি শুন্যে এলিয়ে দিলেই স্তব্ধ হয়ে যাবে সাতাশ বছরের কোলাহল। চেনা-জানা এই পৃথিবী , পৃথিবীর অতি আপন মানুষগুলো, সেই ছোট্ট রুম, কতশত স্বপ্ন, অজস্র ভালোবাসার বন্ধন সব বিলীন হয়ে যাবে, সব পর হয়ে যাবে শুধু দেহটি শুন্যে এলিয়ে দিলে। অপেক্ষা শুধু সন্ধ্যা তারার, রাতুল আত্নহত্যা করবে।
হঠাৎ করেই একটা করুন সুর বেজে উঠল, রাতুলের মোবাইলটা করুন গলায় বেজে উঠছে। চরম বিরক্তি নিয়ে রাতুল মোবাইলটা বের করল ছুড়ে ফেলবে বলে। ছোট বোন ফোন করেছে। এই বোনটিকে রাতুল প্রচুর ভালোবাসে। ভাবল আত্নহত্যা করার খবরটা দিয়েই ছাদ থেকে ঝাপিয়ে পড়বে।
ফোন রিসিভ করা মাত্রই অপাশ থেকে,
-ভাইয়া, কই তুই? জানিস বাসায় না একটা ডানাকাটা পরীর বাচ্চা এসেছে। সে একটা লালটুকটুকে বিয়ের শাড়ি পড়ে ঠিক আমার সামনে বসে বসে কাঁদছে। মনে হচ্ছে ক্ষানিকবাদে তার বিয়ে হবে। তোকে ডাকছে , তুই যেখানেই থাকিস তাড়াতাড়ি চলে আয়।
রাতুল ফোনটা নিরবে কেটে দিল......
সন্ধ্যাতারাটা মিট মিট করে জ্বলছে।
রাতুল জীবনের অর্থ খুজে পেয়েছে.........ভাবছে......জীবনটা আসলেই অনেক সুন্দর.........