ঘুমোলে পৃথিবীর সমস্ত মানুষকে মনে হয় অসম্ভব সুন্দর দেখায়। ঘুমন্ত মানুষের চেহারায় কি যেন একটা মায়া কাজ করে। মুখখানি বড্ড নিষ্পাপ লাগে,বড়ই পবিত্র লাগে।
নীলু ঘুমোচ্ছে। চমৎকার পারফিউমের ঘ্রান নাকে এসে লাগছে। এই গন্ধ তার অনেক দিনের চেনা, প্রায় ৮ বছর হবে। কেলভিন কেইনের মায়াময় গন্ধে সমস্ত ঘর তখন মৌ মৌ ।
২
নীলুর ঘুম ভেঙ্গে যায়। এই গন্ধে এক ধরনের অস্তিরতায় ভোগে সে। জন্ম থেকে জন্মন্তারের অস্থিরতা। কি যে ভালোলাগা কাজ করে। কেলভিন কেইন রাতুলের প্রিয় ব্র্যান্ড, নিশ্চয় আজও রাতুল এসেছে। নিশ্চয় সে ড্রয়িং রুমের সোফায় বসে পুরাতন পেপার গভীর মনোযোগ দিয়ে পড়ছে। নাহ, এই ছেলেকে আর বোঝানো গেল না। হুটহাট করে কোন মেয়ের বাড়িতে আসা কি ঠিক,পাগল একটা।
৩
নীলুকে দেখেই হন্তদন্ত্য হয়ে রাতুল বলে, তোমার মনে আছে সেই গানটার কথা? চাঁদের হাসি বাধ ভেঙ্গেছে, উছলে পরে আলো...
হ্যা, মনে আছে! কেন বলত?
গুড, চল তোমাকে চাঁদের হাসি দেখাব আজ। পুরো ধরনীতে আজ চাঁদের আলো উছলে পড়ছে। না দেখলে বিরাট মিস!
বলেই রাতুল হাটা শুরু করল ছাঁদের দিকে। নীলু হেটে চলছে পেছন পেছনে।
৪
রাতুল ছাঁদের ঠিক কিনারায় দাঁড়িয়ে পরেছে। নীলু ও দিকটায় যাচ্ছে। হ্যামিলোনের সেই মন্ত্রমুগ্ধ মানুষ গুলোর মত নীলু রাতুলকে অনুসরণ করতে করতে ছাঁদের কিনারার দিকে যাচ্ছে। রাতুল ছাদ ছেড়ে শুন্যে হাটা শুরু করেছে। আর বারবার হাতছানি দিয়ে নীলুকে ডাকছে। নীলু তখন মায়াজালে বন্দী। সে রাতুলকে অনুসরণ করেই চলছে...
হঠাৎ পেছন থেকে নীলুর হাত টেনে ধরল শফিক। হাত ধরেই হ্যাঁচকা টানে নীলুকে ফিরিয়ে আনলো বাস্তবে। আরেকটু হলে নীলু ছ’তলা ছাঁদের উপর থেকে পরে যায়।
৫
নীলু ডুকরে ডুকরে কাঁদছে। শফিকের বুকে মাথা রেখে সে কেঁদে চলছে...
৬
আজ রাতুল ফিরে এসেছিলো। চার বছর আগে নীলুর বিয়ের দিনে একগাদা ঘুমের বড়ি খেয়ে কোথায় যে হারিয়ে গিয়েছিল। আজ সে ফিরে এসেছিলো।