মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে স্বীকার করলেও নিজে জড়িত ছিলেন না বলে দাবি করেছেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ। তবে তিনি বলেছেন, 'মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানিদের পক্ষ নেওয়াটা ভুল ছিল। প্রাণভয়ে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিলাম। নেতা গোলাম আযমের নির্দেশ আমাকে পালন করতে হয়েছে।' ধানমন্ডির সেফহোমে গতকাল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার সদস্যদের জেরার মুখে জামায়াতের এ শীর্ষস্থানীয় নেতা এসব কথা বলেন। তদন্ত সংস্থার দ্বিতীয় জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সানাউল হক জানান, মুজাহিদের কাছে কিছু জানতে চাইলেই অপ্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়ে কথা বলতেন। তিনি মূল বিষয় থেকে বারবার সরে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। নিজেকে রক্ষার চেষ্টা করেছেন সুকৌশলে। তাই তাকে আবারও জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন জানানো হবে। সানাউল জানান, আগামী ১০ মে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী এবং ১২ মে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে সেফহোমে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। মুজাহিদকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে গতকাল সকাল পৌনে ৯টার দিকে কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে সেফহোমে নেওয়া হয়। দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিকাল সোয়া ৫টার দিকে তাকে সেফহোম থেকে কারাগারে নেওয়া হয়। মাঝে বেলা ১টায় আধঘণ্টার জন্য নামাজ ও খাবারের বিরতি ছিল। এর আগে গত শনিবার তাকে নারায়ণগঞ্জ কারাগার থেকে কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হয়। গত ৫ মে জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীকেও সেফহোমে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। মুজাহিদের আইনজীবী ব্যারিস্টার মুন্সী আহসান কবীর সাংবাদিকদের জানান, তদন্ত কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদে মুজাহিদ জানিয়েছেন, তিনি রাজাকার ও আলবদর বাহিনীর সদস্য ছিলেন না। এ দুই বাহিনী গঠনেও কোনো ভূমিকা ছিল না তার।
এদিকে তদন্ত সংস্থার বিরুদ্ধে নিজামী ও সাঈদীর দুই আইনজীবী গতকাল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পৃথক দুটি অভিযোগ করেছেন। নিজামীর আইনজীবী তাজুল ইসলাম আদালতের নির্দেশ অমান্যের অভিযোগ এনে বেলা সোয়া ১১টায় ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার মো. শাহিনুর ইসলামের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দেন। এতে বলা হয়, জিজ্ঞাসাবাদে মতিউর রহমান নিজামীকে মানুষিক নির্যাতন ও গালাগালি করা হয়েছে। এ ছাড়া নিজামী কোনো স্বীকারোক্তি দেননি বলে আবেদনে জানানো হয়। অথচ, তদন্ত সংস্থার সদস্যরা আইনবহির্ভূতভাবেই সাংবাদিকদের জানিয়েছেন নিজামী স্বীকার করেছেন। আবেদনে তদন্ত প্রতিবেদন থেকে স্বীকারোক্তির তথ্য বাদ দেওয়ার অনুরোধ জানান আইনজীবী তাজুল। অন্যদিকে সাঈদীর আইনজীবী ব্যারিস্টার তানভীর আহমেদ আল আমিন তদন্ত সংস্থার সদস্যদের সতর্ক করে দিতে ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেছেন। জিজ্ঞাসাবাদে গুরুতর অনিয়ম ও গণমাধ্যমে বক্তব্য দেওয়ায় এ অভিযোগ করেন তিনি।
সূত্র : http://www.bd-pratidin.com

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



