somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রথম স্বামীর পর দ্বিতীয় স্বামীকেও মানতে পারছি না

১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানিয়েছেন নিজের সমস্যার কথা।
‘আমার জীবনের মত ইতিহাস আমি খুব কমই শুনেছি, দেখেছি। আমার খুব কষ্ট হয় আপু, কাউকে কিছু বলতে পারিনা। আমার মনের অবস্থাটা কাউকে বুঝাতে পারিনা। জানেন, সবাই আমাকে খুব খারাপ ভাবে। আমার খুব খারাপ লাগে আপু।
আমি যখন একাদশ শ্রেনীতে পড়ি তখন আমাকে আম্মুরা বিয়ে দেয়। আমি বড় মেয়ে, আর আমাকে নিয়ে বাড়িতে একটু ঝামেলা হয়েছিলো এসএসসির সময়ে (আমার এক খালাতো ভাই আমাকে পছন্দ করতো, বিয়ে করতে চেয়েছিলো, এটা নিয়ে ঝামেলা হয়) আর তাই আম্মুরা আমাকে বিয়ের কথা বলাতে আমার মতামত জানতে চাইলে আমি কেবল বলি তারা যা ভালো মনে করে তাই করবে। তো তারা বিয়ে দেয়। কিন্তু স্বামীর বাড়িতে প্রথমে সবাই রাজী থাকলেও পরে আমার আম্মুর গার্মেন্টেসে জব করতো জেনে মানা করে দেন। যদিও উনি নিজেই আমাকে প্রথমে পছন্দ করেন। ছেলের বাবা ছিলোনা (মারা গেছেন)। কিন্তু ছেলে আমাকে পছন্দ করে। অনেক মেয়ে দেখেছেন কিন্তু আমাকেই পছন্দ হওয়ায় সে তার মায়ের অমতেই আমাকে বিয়ে করে (আমি জানতাম না যে শাশুড়ি রাজি নন)।
আর তাই বিয়ের পর ওরা কেউ ভালো ব্যবহার করতোনা। আর আমাকে বিয়ের সময় আম্মুরা কোন জিনিস (যৌতুক) দেয়নি। আমার শাশুড়ি এই নিয়ে আমাকে অনেক কথা বলতো, অনেক অপমান করতো (আমি নাকি উনার ছেলেকে পটিয়েছিলাম, আমি নাকি ওদের ঘরে অশান্তি এনেছি, আমি নাকি আমার মা বাবার পালিত মেয়ে নয়তো বিয়ের সময় অনেক কিছু দিয়ে ঘর সাজিয়ে দিত)। আমার চোখে সমস্যা ছিলো, দূরের জিনিস দেখিনা আর তাই অনেক কথা বলেছেন শাশুড়ি মা। আমার সন্তানও নাকি অন্ধ হবে। বিয়ের আগে বলা হয়েছিলো আমি যত পড়াশোনা করতে চাই করাবে। কিন্তু বিয়ের পর অনেক ঝামেলা করে এই পড়াশোনা নিয়ে। আমি অনেক কষ্টে পড়াশোনা চালিয়ে গেছি। আমাকে কাজ করতো দিতো না শাশুড়ি। ঠিকমত নাকি পারবো না। কিন্তু মানুষকে বলতো আমি নাকি কিছুই কাজ করিনা। অথচ আমি ঘর ঝাড়ু দেয়া, ঘর মোছা যা করতে পারতাম করতাম। আমিও তখন রান্না জানতাম না, এটা ছাড়া অন্যগুলো করে যেতাম। আমার আম্মুকে উনি একটুও সহ্য করতেন না। অনেক ভাবে আমাদেরকে অপমান করেছেন উনি।
ছেলের বয়স ছিলো ৩২ আর আমার ১৫। অনেক কেঁদেছি বিয়ের পর, তাও মেনে নিয়েছি সব। কোনরকমে যাচ্ছিলো সব। কিন্তু এর মাঝে আম্মুর সম্পর্কে এমন কিছু জানতে পারি যা আমার সবকিছুকে ওলট পালট করে দেয়। সে বিষয়ে এখানে বলতে চাচ্ছি না। তারপর আমি পাগলের মত হয়ে যাই। কোন কিছুই কাজ করেনা আমার মাথায়। তখনই ফেসবুক ব্যবহার করি সময় কাটানোর জন্য। তখন আমার স্বামী বিদেশ চলে যায়( বিয়ের ১ মাস পরেই)।
ওরা অনেক ঝামেলা করে, আর আমি দেখি আমার কারণেই ওদের পরিবারে অশান্তি হচ্ছে। নিজের মা নিজের ছেলেকে অভিশাপ দিচ্ছেন। আর তাই সিদ্ধান্ত নেই যে আমি সবাইকে ছেড়ে চলে যাবো, সবাই সুখে থাকবে। আর তাই আমি আমার ফ্রেন্ডের বাসায় গিয়ে কিছুদিন থাকি কাউকে কিছু না জানিয়ে। কিছুদিন পর আসি। কিন্তু আমাকে ওরা বিশ্বাস করেনি। ওরা আমাকে বাজে কথা বলেছে, ডিএনএ টেস্ট করতেও বলেছিলো, আমি রাজিও হয়েছিলাম কিন্তু করায়নি। আমার স্বামী আমাকে খুব বুঝতো কিন্তু তাও উনি অনেক বাজে কথা বলেছে আমাকে। আর উনার মা, ভাই, বোন সুযোগ পেয়ে অনেক কথা শুনিয়ে এই সম্পর্ককে ডিভোর্সে নিয়ে গেছে। শেষে ডিভোর্স হয়ে গেছে। এর মধ্যে একটা কাজ হল। আমার এইচএসসি পরীক্ষার সময় আমাকে আব্বু পরীক্ষা দিতে দেয়নি, অনেক কষ্ট পেয়েছি তখন।
আপু, আমি এখন ওদের দিকে ভালোমত তাকাতেও পারিনা, রাগ উঠে খালি আর খালি মনে হয় আমি জাহান্নামেই যাবো মনে হয়। তারপর আব্বুরা আমাকে কথা দিয়েছিলো আমাকে পড়াশোনা করাবে, প্রতিষ্ঠিত না করিয়ে আর বিয়ে দিবেনা। আমার সব স্যার, ম্যাম উনাদের বুঝিয়েছে যেন পড়াশোনা শেষের আগে আর বিয়ে না দেয়। কিন্তু ওরা কারো কথা শুনেনি। নিজেদের দেয়া কথাও রাখেনি। ওরা আমাকে আবারও বিয়ে দেয়ার কথা চিন্তা করে। আমি অমত জানালে আমাকে অনেক বাজে বাজে কথা বলেন, আমার মনে হয় এমন বাজে কথা কোন মা বাবা তার সন্তানকে বলতে পারেনা। আমি নাকি ডাস্টদিনের ময়না হয়ে গেছি, আমাকে নাকি কোন ভালো ছেলেই বিয়ে করবেনা, আমি নাকি ভালো কিছুই করতে পারবোনা, আমাকে নাকি সবাই খারাপ বলবে এমন অনেক কিছু। তারপরও আমি রাজি হইনি। কারণ ছেলে বেকার ছিলো আর তার মন মানসিকতা আমার সাথে মেলেনা। পুরোই নেগেটিভ মাইন্ড যা আমি মোটেও সহ্য করতে পারিনা। কিন্তু আমার কথা উনারা না শুনেই ফাইনাল করে ফেলে। তারপর আবারও সেই বিয়ে হয়।
আমি শুধু নীরবে কেঁদেই গেলাম, এত করে বলেও কিছু করতে পারিনি আমার জন্য। আমি জানি যে এই সময় আমি আবার আরেকজনের সাথে সংসার করতে পারবো না, সম্ভব না। আমার মনই ঠিক হয়নি এখনও কিন্তু তাদের জোরাজুরিতে বিয়েটা করতেই হল। মেনে নিলাম আবারও কিন্তু মন মানতে পারলোনা। যতই বুঝাই, সহ্য করতে পারি। তাও চেষ্টা করে গেছি। কিন্তু শেষমেশ আমি আর পারছিনা। আর অভিনয় করতে পারছিনা। কারণ এটা স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক। আমি আর পারছি না তাকে মেনে নিতে, সে আমার সাথে বাজে ব্যবহার করছে, বাজে কথা বলছে। আমার অতীত নিয়ে কথা বলছে, আমাকে বাজে বলছে, তাও চেষ্টা করেছিলাম টিকে থাকতে। কিন্তু এখন আর পারছিনা। সহ্যের সীমা শেষ হয়ে গেছে। আর ধৈর্য রাখতে পারছিনা। কেমন যেন পাগলের মত লাগে সবসময়। আমার দ্বিতীয় স্বামীকে সহ্য না করার অত্যতম প্রধান কারন হচ্ছে তার পর্ন আসক্তি। যে ব্যাপারগুলো আমি একদমই পছন্দ করতে পারিনা।
আমি সবসময় হেডফোন দিয়ে গান শুনি। আর তাই অনেক বকা শুনি আম্মুদের। (কারণ আমার দ্বিতীয় বিয়ের পর এখনও শশুর বাড়ি যাওয়া হয়নি) তাও আমি গান শুনি। নয়তো নিজেকে ঠিক রাখতে পারিনা। আমি অনার্সে পড়ছি কিন্তু কিছুই ধরতে পারিনা মেমোরিতে। কিছুই মনে থাকেনা এখন। আর সবসময় মাথা ব্যথা তো আছেই। কীসের মাঝে বেঁচে আছি জানিনা। কিন্তু একটা কথা সত্যি যে আমি এখনও বেঁচে আছি, নিঃশ্বাসটা চলছে, অন্য কোন মেয়ে হয়ে এতদিনে ঠিকই আত্মহত্যা করে বসতো কিন্তু আজো আমি বেঁচেই আছি। আপু, আমার স্বপ্ন একটাই আর সেটা হল আমার পড়াশোনা। আমি পড়াশোনাকে অনেক ভালোবাসি, ভালো কিছু করার ইচ্ছা ছোট থেকেই, সবকিছু ছাড়তে পারি কিন্তু পড়াশোনা ছাড়া মনে হয় আমি বাঁচতেই পারবো না।

এখন আমি এই দ্বিতীয় স্বামীকেও ছাড়তে চাচ্ছি আমাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য কারণ আমি যাকে মানতেও পারিনা, সহ্য করতে পারিনা। তার কন্ঠ, মেসেজ, কল দেখলেই তাকে খুন করে ফেলতে ইচ্ছে হয়। এখন আমি কিছুই সহ্য করতে পারিনা, খুব অল্পতেই রেগে যাই। আমাকে অহংকারী, বেয়াদপ, খারাপ মেয়ে বলে সবাই অথচ এই আমি আজ পর্যন্ত নিজের স্বার্থ নিয়ে ভাবলাম না, বিনিময়ে কিছুই পেলাম না, একটু শান্তিও না।

কিন্তু এখন নিজের কথা ভাবতেই হচ্ছে। আমি বাঁচতে চাই। একটু শান্তিতে একটা রাত অন্তত ঘুমাতে চাই। অনেক রাত ঘুমাইনা আপু, অনেক ক্লান্ত হয়ে গেছি মনে হয়। খুব ইচ্ছে করছে এখন একটু শান্তির মুখ দেখার, জানিনা হয় কিনা। আমার আসলেই কী করা উচিত বলে আপনি মনে করেন? আমাকে একটু পরামর্শ দিন আপু।’
পরামর্শ:
খুব কষ্ট হল আপু তোমার চিঠি পড়ে। তবে তোমাকে পরামর্শ দেবার আগে আমারই এক অতি প্রিয়জনের গল্প বলি তোমাকে। তাঁরও বিয়ে হয়েছিল এই ১৫/১৬ বছর বয়সে। বিয়ের পরই স্বামী বিদেশ চলে যায়, মেয়েটি তখন গর্ভবতী। বাচ্চা হতে না হতেই আসে ডিভোর্সের বার্তা। মেয়েটি একটু সামলে না উঠতেই পরিবার তাঁকে দ্বিতীয় বিয়ে করায় জোর করে। এমন একজনের সাথে, যে কিনা বাচ্চাকে মেনে নেবে না। কিন্তু মা তো, ছাড়তে পারে না সন্তানকে। তাই তালাক দিতে বাধ্য হয় দ্বিতীয় স্বামীকে, পরিবারও হাত ছেড়ে দেয় ওর। এরপর অনেক ঘাত প্রতিঘাত পেরিয়ে মেয়েটি এখন নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছে এবং জীবনের পথে খুঁজে পেয়েছে একজন জীবন সঙ্গীকেও। হ্যাঁ, একদম ঠিক ধরেছো। মেয়েটি এখন খুব ভালো আছে। কারণ সে সাহসী, কারণ সে ভেঙে পড়েনি, কারণ সে জীবনের সকল কিছুর সাথে মাথা উঁচু করে লড়াই করেছে।
দেখো, আমাদের সমাজ এখনো মনে করে যে আমাদের মেয়েদের শেষ গন্তব্য হচ্ছে বিয়ে, যা মোটেও ঠিক নয়। তবে আমি দেখতে পাচ্ছি যে তোমার জীবনের সবচাইতে বড় সমস্যা তোমার পরিবার, তোমার বিয়ে নয়। তুমি বলো নি, কিন্তু আমি আন্দাজ করতে পারছি যে মায়ের ব্যাপারে তুমি কী ধরণের কথা জানতে পেরেছো। খুব সম্ভবত খুব ঘৃণিত কিছু, মায়ের পরকীয়া বা অবৈধ সম্পর্কের ব্যাপারে, তাই না? এই বয়সে বাচ্চাদেরকে সবচাইতে বেশি আঘাত করে এই ব্যাপারটাই। আর এটাই তাঁদের মনের জগতটা এলোমেলো করে দেয়। আর খুব সম্ভবত এই কারণেই মা তোমাকে বিয়ে দিয়ে শ্বশুরবাড়ি পাঠিয়ে দিতে চান। কারণ তুমি বড় হয়েছো, এখন তিনি তোমার চোখে লুকাতে গেলে ধরা পড়েই যাবেন। বাবাকেও খুব সম্ভবত মা-ই কনভিন্স করেছেন তোমাকে তাড়াতাড়ি বিয়ে দিয়ে দিতে।
যাই হোক আপু, তুমি যদি নিজেকে বাঁচাতে চাও, তাহলে খুব বুঝেশুনে পা ফেলতে হবে তোমার। প্রথম বিয়েতে যা হয়েছে সেটা যত দ্রুত ভুলে যাবে সেটাই ভালো। মাত্র এক মাস সংসার করেছো আর সেই বিয়েতে না টিকে ভালোই হয়েছে। এমণ শাশুড়ির সাথে থাকতে পারতে না। ১৫ বছরে প্রথম বিয়ে আর এখন তুমি অনার্সে পড়ছো, মাঝে ইয়ার গ্যাপও আছে লেখাপড়ায়। এর অর্থ দ্বিতীয় বিয়ের আগে বেশ কিছুদিন গ্যাপ ছিল। এতটা সময়েও তুমি প্রথম বিয়ের ব্যাপারটা ভুলতে পারোনি, কারণ হয়তো নিজের অজান্তেই প্রথম স্বামীর জন্য টান তৈরি হয়েছিল। কিন্তু আপু, সেই ব্যাপারটা ভুলে যেতেই হবে। তোমার চিঠি পড়ে আমি যেটা বুঝতে পারছি, তুমি খুবই ভেঙে পড়েছো, কিন্তু সত্যি বলতে কি এখনো খুব বেশি ভেঙে পড়ার মত সময় আসে নি। তোমার কাছে কিছুই ভালো লাগে না বিধায় সবকিছুকেই খারাপ মনে হয় তোমার। কিন্তু বাস্তবে বিষয়টা তত খারাপ নয়। আমি একটু উদাহরণ দিয়ে বোঝাই, কেমন?
যেমন দেখো, তুমি লিখেছ যে স্বামী কণ্ঠ, কল, মেসেজ ইত্যাদি দেখলে তোমার রাগ ওঠে বা খুন করতে ইচ্ছা করে। (এটা কিন্তু মোটেও স্বাভাবিক আচরণ না।) কিন্তু এটা তুমি খেয়াল করছো না যে স্বামী তোমাকে কল বা মেসেজ দিচ্ছে, এর অর্থ সে তোমার খোঁজ নিচ্ছে। আমরা কার খোঁজ নিই? যাদের ব্যাপারে আমরা কেয়ার করি! তুমি একটা বার ভেবেছ যে তোমার দ্বিতীয় বিয়ে, পারিবারিক সমস্যা বা তোমার আম্মুর জব (যেটা নিয়ে আগের শাশুড়ির সমস্যা ছিল) ইত্যাদি দেখার পরও ছেলেটি তোমাকে বিয়ে করেছে। কেন? হতে পারে তার কোন খারাপ উদ্দেশ্য আছে, আবার এটাও হতে পারে আপু যে ছেলেটি তোমাকে আসলেই পছন্দ করে। স্ত্রীর কাছ থেকে সব ছেলেরই অনেক প্রত্যাশা থাকে, এই ছেলেটিরও আছে। হয়তো সেই প্রত্যাশা পূরণ না হবার কারণেই সে তোমার সাথে খারাপ ব্যবহার করে। এমনও তো হতে পারে আপু যে তুমিও তার সাথে খারাপ বিহেভ করো। হতে পারে না এমন? আমার কিন্তু মনে হচ্ছে ছেলেটিকে তোমার এই কারণেও অপছন্দ, কারণ বিয়েতে তোমার মা বাবা দিয়েছে।
যাই হোক, আমি মনে করি না যে এখনোই দ্বিতীয় বরকে ডিভোর্স দেয়াটা তোমার উচিত হবে। কারণ তাহলে কিছুদিন বাদে মা বাবা তোমাকে আবারও বিয়ে দিতে চাইবেন। আর সেই বিয়েটা হবে আরও অনেক বেশি খারাপ। তোমার লেখাপড়া শেষ করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে এখনো আরও কিছু বছর সময় লাগবে, তাই সেই সময়টা দিয়ে স্বামীর ভালো দিকগুলো দেখে তার সাথে সংসার করা যায় কিনা সেই চেষ্টা অবশ্যই একবার করা উচিত। পর্ণ আসক্তি অতি অবশ্যই কোন ভালো জিনিস না। খুবই খারাপ জিনিস। কিন্তু এই মুহূর্তে স্বামীকে শুধরে নেয়া যায় কিনা সেই চেষ্টাই আগে করতে হবে।
তুমি আপু প্রথমত একজন ভালো মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ দেখাও। তোমার আচরণে যে সমস্যাগুলো দেখা দিয়েছে, যে অস্থিরতায় তুমি ভুগছো সেটার জন্য চিকিৎসা প্রয়োজন। দ্বিতীয়ত জোর করে হলেও স্বামীর সাথে ভালো ব্যবহার করে দেখো যে কী হয়, তুমি ভালো বিহেভ করলে সেও ভালো বিহেভ করে কিনা। কারণ তোমার এখন এই বাবার বাড়ির পরিবেশ থেকে সরে গিয়ে ভিন্ন পরিবেশে নিজের জীবন শুরু করা উচিত। সেটাই তোমার জন্য সবচাইতে ভালো হবে। নিজের জীবন, নিজের ঘরদোর, স্বামীর সাথে নিরিবিলি সংসার। স্বামীর সাথে সরাসরি কথা বলে দেখো। তুমি তাঁকে পরিষ্কার করে জানাও যে তুমি নিজের সংসার চাও, এভাবে বাবার বাড়িতে পড়ে থাকতে চাও না। কেবল তোমাদের দুজনের ছিমছাম একটা সংসারই তোমার চাওয়া। এটার জন্য স্বামীকে পর্ণ আসক্তি ছারতে হবে, তোমার ভালোবাসা পেটে গেলে নিজের বাজে কিছু জিনিস ছাড়তে অবে ও উপার্জন করতে হবে। স্বামী যদি নিজে কষ্ট উপার্জন করে তোমার এই চাওয়া পূরণ করে, তাহলে এই ছেলেটির সাথে জীবন কাটাবার কথা ভেবে দেখতে পারো। তোমার মানসিক অবস্থার পরিবর্তন হলে হয়তো ব্যক্তিগত জীবনের সমস্যা গুলোও মিটে যাবে আর তুমি শান্তিতে নিজের ক্যারিয়ার ও সংসার দুটির দিকেই মনযোগ দিতে পারবে। ডিভোর্স নিয়ে আবারও বাপের বাড়ি বসে থাকার চাইতে সংসার করার শেষ একটা চেষ্টা করেই দেখো। আর যদি একান্তই সেটা হয়, ডিভোর্সের পথ খোলাই রইলো। সেক্ষেত্রে আপু আমি বলবো যে তুমি দেশের বাইরে চলে যাওয়ার চেষ্টা করো। দ্বিতীয় তালাকের পর এই সমাজ তোমাকে শান্তিতে থাকতে দেবে না। দেশের বাইরে গিয়ে নতুন করে জীবন শুরু করতে পারবে তুমি।
অনেক শুভকামনা তোমার জন্য।
বিশেষ দ্রষ্টব্য
আমি কোন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, চিকিৎসক বা আইনজীবী নই। কেবলই একজন সাধারণ লেখক আমি, যিনি বন্ধুর মত সমস্যাটি শুনতে পারেন ও তৃতীয় ব্যক্তির দৃষ্টিকোণ থেকে কিছু পরামর্শ দিতে পারেন। পরামর্শ গুলো কাউকে মানতেই হবে এমন কোন কথা নেই। কেউ যদি নতুন কোন দিক নির্দেশনা পান বা নিজের সমস্যাটি বলতে পেরে কারো মন হালকা লাগে, সেটুকুই আমাদের সার্থকতা।

প্রিয় থেকে নেয়া
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৩৬
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডেল্টা ফ্লাইট - নিউ ইয়র্ক টু ডেট্রয়ট

লিখেছেন ঢাকার লোক, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:২৬

আজই শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান ভাইয়ের "নিউ ইয়র্কের পথে" পড়তে পড়তে তেমনি এক বিমান যাত্রার কথা মনে পড়লো। সে প্রায় বছর দশ বার আগের ঘটনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রিয়ট যাবো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×