somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নাস্তিকদের প্রশ্নঃ আল্লাহ তাআলার স্রষ্টা কে? প্রশ্নটি যৌক্তিক না অবান্তর?

২৪ শে আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রশ্ন

নাস্তিকরা প্রশ্ন করে থাকে যে, আল্লাহ তাআলাকে কে সৃষ্টি করেছে? এর জবাব কি?

উত্তর

بسم الله الرحمن الرحيم

আল্লাহ তাআলা সব কিছু সৃষ্টি করেছেন। সব কিছুর স্রষ্টা যিনি তাকে আবার কে সৃষ্টি করবে? এটাতো বোকামীসূলভ প্রশ্ন। কারণ সৃষ্টি জগতে যা কিছু আছে সবই আল্লাহ তাআলাই সৃষ্টি করেছেন। তিনি সব কিছুর স্রষ্টা যখন, তখন তার আগেতো কেউ থাকতে পারে না। তার আগে কেউ না থাকায় তাঁকে কেউ সৃষ্টি করবে কিভাবে? তাকে সৃষ্টির প্রশ্ন করাটাইতো অবান্তর।

আল্লাহ তাআলা সকল কিছু সৃষ্টি করেছেন

سَبِّحِ اسْمَ رَبِّكَ الْأَعْلَى [٨٧:١] الَّذِي خَلَقَ فَسَوَّىٰ [٨٧:٢] وَالَّذِي قَدَّرَ فَهَدَىٰ [٨٧:٣]

আপনি আপনার মহান পালনকর্তার নামের পবিত্রতা বর্ণনা করুন। যিনি সৃষ্টি করেছেন ও সুবিন্যস্ত করেছেন। এবং যিনি সুপরিমিত করেছেন ও পথ প্রদর্শন করেছেন। {সূরা আলা-১-৩}

وَتَرَى الْجِبَالَ تَحْسَبُهَا جَامِدَةً وَهِيَ تَمُرُّ مَرَّ السَّحَابِ ۚ صُنْعَ اللَّهِ الَّذِي أَتْقَنَ كُلَّ شَيْءٍ ۚ إِنَّهُ خَبِيرٌ بِمَا تَفْعَلُونَ [٢٧:٨٨]

তুমি পর্বতমালাকে দেখে অচল মনে কর, অথচ সেদিন এগুলো মেঘমালার মত চলমান হবে। এটা আল্লাহর কারিগরী, যিনি সবকিছুকে করেছেন সুসংহত। তোমরা যা কিছু করছ, তিনি তা অবগত আছেন। [সূরা নমল-৮৮}

قَالَ رَبُّنَا الَّذِي أَعْطَىٰ كُلَّ شَيْءٍ خَلْقَهُ ثُمَّ هَدَىٰ [٢٠:٥٠]

মূসা বললেনঃ আমাদের পালনকর্তা তিনি,যিনি প্রত্যেক বস্তুকে তার যোগ্য আকৃতি দান করেছেন, অতঃপর পথপ্রদর্শন করেছেন। {সূরা ত্বহা-৫০}

আল্লাহ তাআলাকে কে সৃষ্টি করেছেন? প্রশ্নটি স্ববিরোধী প্রশ্ন

আল্লাহ তাআলা স্রষ্টা। যিনি স্রষ্টা তিনি যদি সৃষ্টি হন, তাহলে মৌলিক স্রষ্টাতো আর তিনি বাকিই থাকেন না। কারণ তখন তাঁকে যিনি সৃষ্টি করেছেন তিনি হয়ে যাচ্ছেন মূল স্রষ্টা। এক্ষেত্রেতো আল্লাহ তাআলা মূল স্রষ্টা হিসেবে আর বাকি থাকবেন না। তাই আল্লাহ তাআলাকে স্রষ্টা মানার পর তাঁর স্রষ্টা কে? এ প্রশ্ন করাটাই অযৌক্তিক ও বোকামী।

এছাড়া এ প্রশ্ন করার দ্বারা ক্রমান্বয়িক অসীম প্রশ্নধারার পথ খোলা হয়। যার কোন শেষ কোনদিন হবে না। কারণ যদি বলা হয় যে, আল্লাহর স্রষ্টা ওমুক [নাউজুবিল্লাহ]।

তাহলে আবার প্রশ্ন হবে- ওমুকের স্রষ্টা কে? যদি কারো নাম উচ্চারণ করা হয়, তাহলে আবার প্রশ্ন আসবে- ওমুকের স্রষ্টা কে? এভাবে ক্রমধারায় অসীম প্রশ্নের দ্বার উন্মোচিত হবে। যার কোন সীমা-পরিসীমা আর বাকি থাকবে না। চলতেই থাকবে এ প্রশ্ন। তাই এরকম প্রশ্ন অযৌক্তিক ও বোকামীসূলভ প্রশ্ন।

এ প্রশ্নটি শয়তানের প্রশ্ন

قال أبو هريرة رضي الله عنه : قال رسول الله صلى الله عليه و سلم ( يأتي الشيطان أحدكم فيقول من خلق كذا من خلق كذا حتى يقول من خلق ربك ؟ فإذا بلغه فليستعذ بالله ولينته )

হযতর আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ তোমাদের কারো কাছে শয়তান আসতে পারে, এবং সে বলতে পারে যে, এ বস্তু কে সৃষ্টি করেছে? ঐ বস্তু কে সৃষ্টি করেছে? এরূপ প্রশ্ন করতে করতে শেষ পর্যন্ত বলে বসবে, তোমাদের প্রতিপালককে কে সৃষ্টি করেছে? যখন বিষয়টি এ পর্যায়ে পৌঁছে যাবে তখন সে যেন অবশ্যই আল্লাহর কাছে আশ্রয় চায় এবং বিরত থাকে। {সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৩১০২, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৩৬২, মুসনাদে আবী আওয়ানা, হাদীস নং-২৩৬}

عن عائشة عن رسول الله صلى الله عليه و سلم قال : إن الشيطان يأتي أحدكم فيقول : من خلق السماوات ؟ فيقول : الله فيقول : من خلق الأرض ؟ فيقول : الله فيقول : من خلق الله ؟ فإذا كان ذلك فليقل : آمنت بالله ورسله

হযরত আয়শা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ তোমাদের কারো কাছে শয়তান এসে বলতে পারে- আসমানসমূহ কে সৃষ্টি করেছে? সে বলবে, আল্লাহ। তারপর শয়তান প্রশ্ন করবে- জমীন কে সৃষ্টি করেছে? জবাবে সে বলবে-আল্লাহ তাআলা। তারপর শয়তান বলবে- আল্লাহকে কে সৃষ্টি করেছে? যখন বিষয়টি এ পর্যন্ত এসে যাবে তাহলে বলবে- আমি আল্লাহ ও রাসূলের উপর ঈমান এনেছি। {মুসনাদে আবী ইয়ালা, হাদীস নং-৪৭০৪, মুসনাদে আহমাদ বিন হাম্বল, হাদীস নং-২১৯১৬, মুসনাদে আব্দ বিন হুমাইদ,হাদীস নং-২১৫, আলমুজামুল কাবীর, হাদীস নং-৩৭১৯}

والله اعلم بالصواب
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×