somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিমগাছ---বনফুল

০১ লা মার্চ, ২০০৯ সকাল ১১:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কেউ ছালটা ছাড়িয়ে নিয়ে সিদ্ধ করছে।
পাতাগুলো ছিড়ে শিলে পিষছে কেউ।
কেউবা ভাজছে গরম তেলে।
খোস দাদ হাজা চুলকানিতে লাগাবে।
চর্মরোগের অব্যর্থ মহৌষধ।
কচি পাতাগুলো খায়ও অনেকে।
এমনি কাঁচাই...
কিংবা ভেজে বেগুন-সহযোগে।
যকৃতের পক্ষে ভারী উপকার।
কচি ডালগুলো ভেঙ্গে চিবায় কত লোক...দাঁত ভালো থাকে।
কবিরাজরা প্রশংসায় পঞ্চমুখ।
বাড়ির পাশে গজালে বিজ্ঞরা খুশি হ'ন
বলে--নিমের হাওয়া ভালো, থাক, কেটো না।
কাটে না, কিন্তু যত্নও করে না।
আবর্জনা জমে আসে চারদিকে।
শান দিয়ে বাঁধিয়ে দেয় কেউ...সে আর এক আবর্জনা।
হঠাৎ একদিন এক নূতন ধরণের লোক আসলো।
মুগ্ধ দৃষ্টিতে চেয়ে রইলো নিমগাছের দিকে। ছাল তুললে না, পাতা ছিড়লে না, ডাল ভাঙলে না, মুগ্ধ দৃষ্টিতে চেয়ে রইল শুধু।
বলে উঠলো,--বাঃ, কি সুন্দর পাতাগুলো ... কি রূপ!
থোকা থোকা ফুলেরই বা কি বাহার... এক ঝাঁক নক্ষত্র নেমে এসেছে যেন নীল আকাশ থেকে সবুজ সায়রে। বাঃ--
খানিকক্ষণ চেয়ে থেকে চলে গেল।
কবিরাজ নয়, কবি।
নিমগাছটার ইচ্ছে করতে লাগলো লোকটার সঙ্গে চলে যায়। কিন্তু পারলে না। মাটির ভিতর শিকড় অনেকদূর চলে গেছে। বাড়ির পিছনের আবর্জনাস্তূপের মধ্যে দাঁড়িয়ে রইলো সে।
ওদের বাড়ির গৃহকর্ম-নিপুণা লক্ষী বউটির ঠিক এক দশা।









-----------------------------------------------------------------------

পাঠক হিসেবে সবসময়ই উপন্যাসের ভক্ত ছিলাম। কখনো ছোট গল্প পেলে হতাশ হতাম। নিতান্তই স্টক খালি থাকলে ছোটগল্পে চালাতাম, কিন্তু তাতে পেট ভরতো না। ব্লগে এসে নানা ব্লগার তথা লেখকের লেখা পড়তে লাগলাম। ছোট-বড় সব ধরণের লেখা। বড় বড় সব লেখা যখন অপর বাস্তবে ছাপা হলো, আমি টাশকি খেয়ে গেলাম! এত্তো বড় লেখা মাত্র ২-৩ পৃষ্ঠা?! প্রথমবারের মতো উপলব্ধি করলাম যে ব্লগীয় প্লাটফর্মের বই কবিতার হতে পারে। অথবা ছোট-গল্পের হতে পারে, কিন্তু তা ওই ছোটর সীমানা ছাড়িয়ে বড় হবে না। এই হতাশাটা আরো বেড়ে গেল এইজন্য যে আমিও উপলব্ধি করলাম, ছোটগল্পের সাইজে যেই হাবিজাবিটাই আমি লেখি না কেন, সেটা উপন্যাস সাইজের জীবনেও হবে না। তাই এবারের বইমেলা থেকে ছোটগল্পকে উৎসাহ দেবার জন্যই ছোটগল্পের একটা সংকলন কিনে ফেললাম!

ছোটগল্প লেখক হিসেবে বনফুল অসাধারণ, রসবোধ আর সরল লেখনীতে আমি মুগ্ধ! এক লাইনে তিনি পুরা গল্পের চেহারা পালটে দেন। এ জিনিসটাই অবাক করার মতো। উপরের গল্পটার শেষ লাইনে এসেই আমি মুগ্ধ হয়ে গিয়েছি। শেষ লাইনের ধাক্কাটা তার অনেক গল্পেই উল্লেখযোগ্য। তবে বই পড়ার পর একটা শংকায় আছি। উনার লেখাও কিছুটা "আমি আমি গোছের" ! ভয়ে আছি... রিমিক্স না হয়ে যায়! থাক বাবা...কিছুদিন আসল জিনিসই পোস্টাই!
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১০ সন্ধ্যা ৬:১৮
২৪টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×