আরে ওইডা সুমন না?চেহারা ছবির এই অবস্থা কেন?অহনো খায়?
ধুর বেটা,খায় কিরে,অহন তো হালায় ভেন্ডর
কি কছ!!!(পুরো ভিমরি খেয়ে আমার তখন রিক্সা থেকে পড়ার অবস্থা)
কবে থিক্কা?
আর করবডা কি,ধান্দাপানি বন্ধ,মাল খাওনের টেকা পাইব কই?হেগো পুরা গ্রুপটাই অহন এডি কইরা বেড়ায়।
পুরা গ্রুপ মানে লাল… গ্রুপ?
আবার জিগায়?সুমন,টিটু,মুন্না,বাবু সঅঅঅঅব অহন মোবাইল ভেন্ডর,ফোন দিবি হুন্ডায় কইরা মাল ডেলিভারি দিয়া যাইব।
কি কছ এইসব!!!হালাগো ডর ভয় নাই?অহন কি এডি করনের সময়?পুলিশ ধরলে আস্ত রাখব?
ধুর হালা,আছস কই,খবর দেহি কিছুই রাহছনা?সব সিস্টেম করা আছে
লীগের পুলাপান কিছু কয়না?
কইব কিরে,হেরা অইলো মেইন কাস্টমার।বাকিতে মাল খাইতে পারে,তার বদলা শেল্টার দেয়।বহুত লীগের নেতারাতো আবার ইনভেস্টর।বিশাল সিন্ডিকেট,বিরাট কারবার,
শহীদ মিনার,শাহবাগের মোড়,আজিজ সুপার,গাউছল আজম,পলাশির মোড়………বিশাল নেটওয়ার্ক। রীতিমতন কর্পোরেট ভেন্ডিং………হা হা হা
আমার মোটেই হাসি পেলনা বরং বুকের মধ্যে কোথাও চিনচিন ব্যথা করে উঠলো।প্রাণপ্রিয় সংগঠনটির আজ এই অবস্থা!!!নিজের জীবন যৌবন যে দলটার জন্য উৎসর্গ করেছিলাম,পরিবার-পরিজন,প্রিয়তমা,আপন ক্যারিয়ার সবকিছুর ঊর্ধ্বে রেখে আদর্শিক চেতনায় নিজেকে উজার করে দিয়েছিলাম সেই দলটির আজ এই দশা!!!
এই কি সেই শহীদ জিয়ার গড়া দল!!!যার আহবানে সাড়া দিয়ে এক ঝাঁক অমিত সম্ভাবনাময় তরুন মেধাবি ছাত্ররা ঘটিয়েছিল এক রাজনৈতিক বিপ্লব,বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত হয়েছিল এক নতুন মাত্রা।যেই সংগঠনটি ছিল আশির দশকের তারুন্যের ক্রেজ।যে সমস্ত তূখোড় মেধাবি ছাত্রনেতাদের দেখে সেই কৈশর থেকে স্বপ্ন দেখেছি ছাত্রদল করবার সেই দলের আজ এই করুন পরিনতি দেখে অশ্রু ধরে রাখতে পারিনি।
৯৬ থেকে ২০০১ যে সমস্ত ত্যাগী ছাত্রনেতারা তাদের শিক্ষা জীবনকে বিসর্জন দিয়ে আন্দোলন সংগ্রাম করেছিল জোট সরকার ক্ষমতায় এসেই সবার প্রথম তাদেরকেই ক্যাম্পাস থেকে নির্বাসন করেছিল।দৃশ্যপটে আনল লাল…… গ্রূপের চরম অথর্ব চ্যাংড়াদের।ক্ষমতার পুরো সময়টায় যারা তারেক জিয়া তারেক জিয়া বলে মুখে ফেনা তুলতো সেই তারাই আবার ১/১১ এর পর সংস্কারপন্থি সেজে সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ মদদে পার্টি অফিস দখল করে তার চাবি তুলে দেয় মান্নান ভুইয়ার হাতে।ম্যাডাম যেদিন এ্যরেস্ট হন সেদিন তারা মধূর ক্যান্টিনে কেক কেটে উল্লাস করেছিল।আজ তাদেরকেই আবার দেখছি কমিটিতে,আবার তাদেরই আরেক অংশকে দেখছি বিদ্রোহী গ্রুপ সেজে পার্টি অফিস ভাংচুর করতে।
২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত ক্যাম্পাসের পান-বিড়ির দোকানদার থেকে শুরু করে পলাশী বাজার,শাহবাগ হাতিরপুল,নিউমার্কেট,এলিফ্যান্ট রোড,বকশীবাজার,চাংখারপুল,নাজিমুদ্দিন রোডের সমস্ত ব্যাবসায়ী-দোকানদার ছিল তাদের যন্ত্রনায় অস্থির।এমনকি সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের ভাসমান নিশিকন্যারাও তাদের বিরূদ্ধে বাকীর অভিযোগ আনত তারাই আজকে আবার ছাত্রদলের নতুন কমিটিতে সদর্প হুঙ্কার দিয়ে বেড়াচ্ছে!!!
চমৎকার…………দেখি আর বিস্মিত হই।আজকাল অবশ্য সবই গা সওয়া হয়ে গেছে।
যখন দেখি ম্যাডামের আহবানে ছাত্রদল আর রাজপথে নামতে সাহস পায়না,
যখন দেখি শিবিরের মিছিলের পেছনে ছাত্রদলের নেতাদের সভয় অবস্থান,
যখন দেখি ছাত্রদলের গর্ধবদের ৭১টিভির টকশোতে গিয়ে নতুন কমিটি নিয়ে ক্ষোভ ঝাড়তে,
তখন আর অবাক হইনা,শুধু লজ্জা লাগে এককালে আমিও এই সংগঠনে ছিলাম।
ম্যাডাম আপনাকে বলছি,প্রিয় নেত্রী,এখনো সময় আছে,আপনি আপনার চারপাশের মীরজাফরদের বলয় থেকে বেড়িয়ে আসুন।ভুলে যাবেন না,আজকের বিএনপি হলো একঝাঁক প্রতিশ্রুতিশীল মেধাবি ছাত্রনেতাদের জীবন-যৌবন,ক্যারিয়ার সেক্রিফাইস করা রাজপথে রক্তঝরানো সংগ্রামের দল।স্বৈরাচার বিরোধী প্রতিটি আন্দোলনে রক্ত দিয়েছে নির্যাতিত হয়েছে এই ছাত্রজনতা,আপনাকে ঘিরে রাখা বুর্জোয়া সুবিধাভোগী বসন্তের কোকিল নেতৃবৃন্দ নয়।মনে রাখবেন,এই ছাত্রদলই হলো আপনার মূলশক্তি।আপনার আজকের এই পরিনতির কারন হলো দূর্বল আযোগ্য ছাত্র নেতৃত্ব।
ছানাঊল হক নিরু,গোলাম ফারুক অভি,ইলিয়াস আলি তাদেরতো এই পরিনতি হওয়ার কথা ছিলনা?
নিরু ভাই এখন ঠিকাদারি করেন,অভি ভাই হত্যা মামলার হুলিয়া মাথায় নিয়ে আজ এরশাদের অনুকম্পা লাভে ব্যস্ত,ইলিয়াস ভাই কোথায় কেউ জানেনা…………আজকের প্রজন্ম তাদেরকে চেনে স্রেফ সন্ত্রাসী হিসেবে।জাতির জন্য,দলের জন্য কি তাদের অবদান কেউ বলেনা।যৌবনের সোনালী অধ্যায়ে মেধা এবং সময়ের চরম অপচয় করে আজ জীবন সংগ্রামে ধুকে ধুকে মরছি আমরা অথচ এমনতো হওয়ার কথা ছিলনা আমাদের।
এখনো বলছি,ম্যাডাম আমরা এখনো শেষ হয়ে যাইনি।শুধু আপনার সদিচ্ছাই যথেষ্ট।একটি ডাক দিয়েই দেখুন।তবে আমাদের বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতে হবে আপনাকেই।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ৭:৪০