নির্বিরোধী,নিরঅহঙ্কারী,সরল সহজ একজন রাষ্ট্রপতির নাম বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহম্মেদ। দেশের প্রয়োজনে ১৯৯৬ সালে তাকে রাষ্ট্রপতির পদে বসানো হয়। তার শাসন আমলে বিতর্কিত না হয়েই পার করছিলেন তার নির্দ্দিষ্ট মেয়াদ। ২০০১ সালের নির্বাচনে আওয়ামীলীগের ভরাডুবি হলে বিএনপি ক্ষমতায় আসে। বিএনপির শাসনআমলের প্রথম সংসদ অধিবেশনে বিএনপির লিখে দেওয়া রাষ্ট্রপতির ভাষণ পাঠ করে তিনি বিতর্কিত হলেন। এমন ভাবে তার সমালোচনা করা হলো যাতে তার সারা জীবনের তিলে তিলে উপার্যন করা সম্মান কর্পূরের মতো উবে গেল। এক মুহূর্তে হিরো থেকে জিরো। আছেন এক প্রকার নিভৃতেই নিজের মাঝে লোকচক্ষুর অন্তরালে।
প্রফেসর ড, ইয়াজ উদ্দিন আহম্মেদ। একজন স্বনামধন্য শিক্ষাবিদ। কোন উচ্চাভিলাশ ছিলনা। সাদাসিধা জীবন যাবপন করতেন। ২০০২ সালে দেশের অথবা দলের প্রয়োজনে তাকেও বসানো হলো রাষ্ট্রপতির পদে। দলের বিধিবদ্ধ নিয়ম কানুনের মধ্যেই দেশ পরিচালনা করতেন। না করে উপায়ও ছিলোনা। বিএনপির মেয়াদ শেষে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হয়ে বিতর্কিত হলেন। প্রফেসর ইয়াজউদ্দিন বিএনপির আজ্ঞাবহ ”ইয়েচ উদ্দিন” বিশেষণে ভূষিত হবার দূর্ভাগ্য বরণ করলেন।
ব্যারিস্টার এম,এ, আজিজ, একজন বিচার পতি। স্বজ্জন, সাদাসিধা নির্বিরোধী মানুষ। বিচারপতি থাকাকালীন কোন বিতর্কে জড়ান নেই। কোন অভিযোগও তেমন শোনা যায়নি তাই ছিলেন প্রায় লোকচক্ষুর আড়ালে। বিএনপি ২০০৫ সালে তাকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দিলে তিনি বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। সরল ও হাস্যকর অনেক কথা বলে তিনি তিরস্কৃত ও উপহাসের পাত্রে পরিণত হন। তার সরল উক্তি "I am no bodies man" আবার "আমি সকলের মানুষ" ইত্যাদি কথাবার্তা মানুষের হাসির খোরাক যোগায়।
ড.প্রফেস মোঃ ইউনুস, গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ও দেশের ক্ষুদ্র্ ঋণের জনক। দেশ বিদেশে তার অনেক সুনাম। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টনের পারিবারিক বন্ধু। নোবেল পুরস্কার লাভ করে বিশ্বে বাংলাদেশের পরিচয় তুলে ধরেণ নুতন করে। দেশের জন্য এই অর্জন অবশ্যই সম্মানের। দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনতে পারলেও নিজের সুনাম ধরে রাখতে পারলেননা। কোন এক অদৃশ্য শক্তির চাপে দেশে তৃতীয় শক্তি হিসেবে নির্বাচন করার অভিলাষ তাকে পড়তে হলো রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ্যের কোপাণলে। সুতরাং যা হবাই তাই হলো। ধুলায় লুটালো তার অর্জিত সম্মান। ভিক্ষুকের মতো বিচারকের কাছে হাত পাতছেন তার হৃত সম্মান ফিরে পেতে।
জনাব ইব্রাহীম খালেদ, একজন স্বনামধন্য ব্যাংকার, দৃঢ়চেতা, ন্যায়পরায়ন ও দায়িত্বশীল এই মানুষটি কৃষি ব্যাংকের চেয়ারম্যানের দ্বায়িত্ব পালন করেই সন্তষ্ট ছিলেন। কিন্তু শেয়ার মার্কেটের কেলেঙ্কারী অনুসন্ধানের জন্য তাকে দ্বায়িত্ত্ব দেওয়া হয়। তিনি তদন্তে তার স্বভাবসূলভ প্রজ্ঞা ও বিবেচনায় সরল বিশ্বাসে শেয়ার মার্কেট কেলেঙ্কারীতে যাদের সংশ্লিষ্টতা পেলেন তাদের নাম প্রকাশ করে বিতর্কিত হলেন। সত্যকথা বলার অপরাধে একদল অতিউৎসাহী আইনজীবী তাকে কৃষি ব্যাংকের চেয়ারম্যানের পদ থেকে ১০ দিনের মধ্যে পদত্যাগ করার জন্য রিট পিটিশন দায়ের করলেন।
শেয়ার কেলেঙ্কারীর নায়কদের মুখোশ উন্মোচনের অপরাধে ইব্রাহিম খালেদের বিতর্কে জড়িয়ে পড়ার ধারাবাহিকতায় শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত হিসেবে অভিযুক্তদের আগেই শাস্তি পাচ্ছেন সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) নির্দোষ দুই সদস্য ইয়াছিন আলী ও মোঃ আনিসুজ্জামান! কোন ধরনের অনৈতিক কর্মকান্ডের অভিযোগ না থাকলেও সবার আগে এই দুই সদস্যকে এসইসি থেকে পদত্যাগ করানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
সততার পুরস্কার যদি এমন হয় তা হলে ক্রান্তিকালে দেশের হাল ধরবার জন্য সত্যিই কাউকে খুঁজে পাওয়া দুস্কর হয়ে পড়বে

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




