somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আজ ফেলানী দিবসঃ ভারতীয় সীমান্তরক্ষা বাহিনীর রক্তাক্ত সন্ত্রাসের শিকার ফালানির ৩য় মৃত্যুবার্ষিকী আজ

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৩:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বিএসএফের গুলিতে নিহত হয়ে কাঁটাতারে ঝুলে থাকা ফালানীর তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০১১ সালের ৭ই জানুয়ারি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে নির্মম ভাবে গুলি করে হত্যা করা হয় ফালানীকে। ১৫ বছরের শিশু ফেলানী তার বাবার সাথে কাঁটাতারের বেড়া পার হয়ে বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু কাঁটাতারের বেড়ায় কাপড় জড়িয়ে পা ফসকে ঝুলে পড়েছিল সে। তখন সাহায্যের জন্য ফেলানী চিৎকার করে আবেদন করছিল। কিন্তু বিএসএফ-এর রক্ত পিপাসু ঘাতকরা সে আবেদনের সাড়া না দিয়ে তাকে গুলী করে হত্যা করে তেমনি ঝুলন্ত অবস্থায়ই। ঐ নরঘাতকরা তাকে হত্যা করে তার লাশ নামিয়ে নিয়ে যায়নি। বরং পরবর্তী পাঁচ ঘণ্টা ফেলানীর লাশ ঝুলেছিল কাঁটাতারের বেড়ার ওপরই। যেন বিএসএফ বাংলাদেশী মানুষদের জানান দিতে চেয়েছিল যে, সীমান্তের কাছাকাছি এলে এভাবেই বাংলাদেশীদের হত্যা করে কাঁটাতারে ঝুলিয়ে রাখা হবে।


ফেলানীর ঝুলন্ত লাশের ছবি ভারতীয় পত্র-পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল। পরে ছাপা হয় বাংলাদেশের দু' একটি পত্রিকাতেও। সে মর্মান্তিক দৃশ্য চোখে দেখা যায় না। কাঁটাতারে ঝুলে থাকা লাশের ছবি বিশ্বজুড়ে হইচই পড়ে। ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বর্বরতার একটি প্রতীক হয়ে দাড়ায় ফেলানী। পরে ভারত সরকার ফেলানী হত্যার ঘটনায় বাংলাদেশের কাছে আনুষ্ঠানিক দুঃখ প্রকাশ করে। ফেলানীর এই ঘটনার পর বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে স্বরাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।বিভিন্ন দেশের মানবাধিকারকর্মী ও সংগঠনের চাপে এবং বিজিবির পক্ষ থেকেও বিএসএফের সঙ্গে বিভিন্ন বৈঠকে ফেলানী হত্যার বিচারের জন্য চাপ দেয়া হয়। এরপর গত বছর ১৩ অগাস্ট ভারতের কোচবিহার জেলায় সোনারি বিএসএফ ছাউনিতে অমিয় ঘোষের বিচার শুরু হয়। ভারতীয় দন্ডবিধির ৩০৪ ধারায় অনিচ্ছাকৃত খুন এবং বিএসএফ আইনের ১৪৬ ধারায় অভিযোগ আনা হয় তার বিরুদ্ধে। পাঁচ বিচারকের এই আদালত রায়ে বলে, বিএসএফ ১৮১ নম্বর ব্যাটালিয়নের হাবিলদার অমিয় ঘোষের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের পক্ষে যথেষ্ট প্রমাণ আদালত পায়নি। এভাবে অভিযুক্ত বিএসএফ সদস্য মামলা থেকে অব্যাহতি পান। এই হত্যাকাণ্ডের পর বিএসএফর ডিজি বাংলাদেশে এসে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, কোনো বাংলাদেশী নাগরিকের ওপর তারা কোনো মরণাস্ত্র ব্যবহার করবেন না। কিন্তু সে প্রতিশ্রুতি তারা রাখেনি। গত বিয়াল্লিশ বছর ধরে ভারত সহস্রবার কথা দিয়েছে যে সীমান্তে বাংলাদেশী হত্যা তারা বন্ধ করতে ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু ঐ প্রতিশ্রুতি পর্যন্তই। তারা যখন ঢাকায় বসে এ রকম প্রতিশ্রুতি উচ্চারণ করেছে ঠিক তখনই হয়তো কোন সীমান্তে তাদের রক্ত পিপাসু বাহিনী অকারণেই কোন বাংলাদেশীকে গুলী করে হত্যা করেছে। ফেলানীর ঘটনায় শুধু বাংলাদেশী মানুষেরাই নয় সারা পৃথিবীই যেন স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিল। শুধু স্তম্ভিত হয়নি বাংলাদেশের সরকার। তবু ধারণা করা হয়েছিল যে, ফেলানীর এই ঘটনার পরে নিতান্তই চক্ষু লজ্জার কারণে হলেও ভারতীয় রক্ত পিপাসু এই বাহিনী সাময়িকভাবে হলেও সীমান্তে নরহত্যা বন্ধ করবে। কিন্তু তা হয়নি। ঘটনার কয়েকদিন পরেই আবারও ঘটেছে আরেক নারকীয় হত্যাযজ্ঞ। কাঁটাতারের বেড়ার এপাশে-ওপাশে দাঁড়িয়ে ভারত ও বাংলাদেশের দু' বন্ধু হাসিঠাট্টার গল্প করছিলেন। ভারতীর ঘাতক বাহিনী সেখানেই বাংলাদেশী বন্ধুটিকে গুলী করে হত্যা করে। পৃথিবীতে এমন বর্বর জাতির অস্তিত্ব আর আছে কিনা সন্দেহ।


কাঁটাতারের বেড়ায় আটকে থাকা ফালানীর ঝুলন্ত লাশের ছবি বিশ্বজুড়ে হইচই ফেলে দেয়। ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বর্বরতার একটি প্রতীক হয়ে দাঁড়ায় ফালানী। কিন্তু ফালানী যে দেশের নাগরিক সে দেশের শাসকগোষ্ঠীর মধ্যে তা কমই প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। ফালানী হত্যার কড়া প্রতিবাদ পর্যন্ত করতে পারেনি বাংলাদেশ; বরং হত্যাকারীদের সাথে বাংলাদেশের নাকি এখন বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ইতিহাসের সর্বোচ্চপর্যায় অতিক্রম করছে। তাদের সব চাওয়া-পাওয়া পূরণ করা হয়েছে। ফালানীর দেশের নদীর বুক চিরে তাদের যানবাহন চলাচলের রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। আর প্রতিদান হিসেবে বাংলাদেশ পাচ্ছে নিরীহ নাগরিকদের লাশ।


শুধু ফালানি নয় বিগত এক যুগে ভারতীয় সিমান্ত রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে নির্মমভাবে মৃত্যুর শিকার হয় ১,০৩৯ নিরীহ বাংলাদেশী। এর মধ্যে মধ্যে আওয়ামী লীগ সরকারের ৪ বছরে সীমান্তে বিএসএফ হত্যা করেছে ২৫০ জন বাংলাদেশিকে। ছয়টি দেশের সঙ্গে সীমান্ত থাকলেও শুধু বাংলাদেশ সীমান্তেই হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে ভারত। ২০০০ সালের পর গত একযুগে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ ১০৩৯ নিরীহ বাংলাদেশীকে হত্যা করেছে। বাংলাদেশ ছাড়া ভারতের সঙ্গে পাকিস্তান, চীন, নেপাল, ভুটান এবং মিয়ানমারের সীমান্ত রয়েছে।এ সময় ভারতের সঙ্গে অন্য পাঁচটি সীমান্তে একটি হত্যার ঘটনাও ঘটেনি। ভারতের সবচেয়ে বৈরী প্রতিবেশী পাকিস্তান সীমান্তেও গত ১০ বছরে কোনো বেসামরিক মানুষ নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেনি।


ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী ধারাবাহিকভাবে প্রায় প্রতিদিনই সীমান্তে খুন করে যাচ্ছে বাংলাদেশী নাগরিকদের। আর সে কারণেই ভারত বাংলাদেশ সীমান্তে বাংলাদেশীদের জন্য এক বধ্যভূমিতে পরিণত হয়েছে। এ সীমান্ত চলে গেছে কারো উঠানের ওপর দিয়ে, কারো জমিনের পাশ দিয়ে, খালের ধার দিয়ে। নদী পেরিয়ে। এপারের-ওপারের মানুষের মধ্যে যোগাযোগ আছে। সুখ-দুঃখের আদান-প্রদান আছে। উৎসবে খাদ্য সামগ্রির বিনিময় আছে। বৈবাহিক সম্পর্ক আছে। দেশ দু'টি হলেও ভাষার সাযুজ্য আছে। কখনও কখনও সীমান্তের দু'পাশে, কাঁটাতারের বেড়ার এ পাশে ওপাশে দাঁড়িয়ে দু' দেশের মানুষ সুখ-দুখের গল্প করে। কলাটার-মুলাটার বিনিময় করে। মানুষের মধ্যে সম্পর্ক এ রকমই। তাদের মধ্যে কোন শত্রুতা নেই। কিন্তু ভারতীয় সীমান্তরক্ষী ঘাতকবাহিনী বিএসএফ এর কাছে এসবের কোন মূল্য নেই। তারা বাংলাদেশের সীমান্তের ভেতরে বাংলাদেশী মানুষ দেখলেই যেন রক্ত পিপাসায় উন্মত্ত হয়ে ওঠে। যথেচ্ছ গুলী চালিয়ে হত্যা করে। শুধু তাই নয় বাংলাদেশের জাতীয় দিবস ও গুরুত্বপূর্ণ উৎসবগুলোতে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী তাদের এই হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে বাংলাদেশী মানুষের মনে আতঙ্কের সৃষ্টি করছে। গত ২০১১ সালে বাংলা নববর্ষে ২ বাংলাদেশিকে হত্যা করে বিএসএফ। ১৪ এপ্রিল ২০১১ ভোরে বাংলা নববর্ষে যশোর জেলার বেনাপোলের সাদীপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত হয় মুন্না (১৮) নামে এক বাংলাদেশি যুবক ও আহত হয় মামুন (২৩)। একই দিন চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁর সীমান্তবর্তী নীতপুর সীমান্তে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী বিএসএফের গুলি করে হত্যা করে সানাউল্লাহ (৩২) নামের এক বাংলাদেশী ব্যবসায়ীকে। ১৬ ডিসেম্বর ২০১১ বিজয়ের ৪০ বছর উদযাপনের সময় বিএসএফের গুলিতে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার সাহেববাড়িয়া সীমান্তে নিহত হন নাহারুল (৪০) নামে এক বাংলাদেশী। একই দিন কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলা সীমান্তে বিএসএফ’র বোমার আঘাতে আনোয়ার হোসেন (২৭) নামে এক বাংলাদেশী নিহত হন। এ সময় আহত হন মোহর আলী (২৫) নামে আরো একজন। একই দিন দিনাজপুর জেলার বিরামপুর সীমান্তে গভীর রাতে মতিয়ার (২০) ও তাইজুদ্দিন (৩০) নামে দুই বাংলাদেশীকে বিএসএফ গুলি করে হত্যা করেছে। ২০১২ বাংলা নববর্ষে ১ বাংলাদেশিকে হত্যা। ১৪ এপ্রিল ২০১২ চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার চৌকা সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে ফারুক হোসেন (২৫) নামে এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়। মে দিবসে ১ বাংলাদেশিকে হত্যা। ৩০ মে রাতে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে রহমত আলী (৩৫) নামের বাংলাদেশী এক রাখাল নিহত হয়েছে। বিজয় দিবসে ৪ বাংলাদেশিকে হত্যা। ২০ আগস্ট ২০১২ পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার জগতবেড় ইউনিয়নের ভোট হাটখাতা সীমান্তে দুপুরে ভারতীয় চেনাকাটা ক্যাম্পের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) জাহাঙ্গীর আলম বাবলু (২৫) নামে এক বাংলাদেশীকে পিটিয়ে হত্যা করে। ইংরেজি নববর্ষে ৪ বাংলাদেশিকে হত্যা। ১ জানুয়ারী ২০১৩ ঠাকুরগাঁও সীমান্তে বিএসএফ গুলি করে হত্যা করে মুক্তার আলম (২৮) ও তরিকুল ইসলাম ওরফে নূর ইসলাম (২৮) নামে ২ বাংলাদেশি যুবককে। তাদের গুলিতে আহত হয়েছেন আরো তিনজন। এ ঘটনায় আহতরা হলেন আমজাদ (২৫), সামাদ (২৯) ও রাজু (২৩)। এদের মধ্যে রাজু মোলানী সীমান্তে গুলিবিদ্ধ হন। বুধবার ভোর রাত ৩টার দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলা সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে মাসুদ (২৩) এবং শহীদুল ইসলাম(২৮) দুই বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন।


এক দেশের সঙ্গে আরেক দেশের সীমান্ত থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। অবৈধ অনুপ্রবেশ কোনো সীমান্তে নেই, এমন নজির কেউ দেখাতে পারবে না। ভাগ্যের অন্বেষণে মানুষজন বৈধ-অবৈধ পথে প্রতিবেশী দেশে পাড়ি জমায়, এটাই নির্মম বাস্তবতা। এজন্য প্রায় প্রতিটি দেশেরই সীমান্ত ভাগাভাগি নিয়ে ঝামেলা রয়েছে। এর জন্য সীমান্ত আইন রয়েছে। স্মাগলিং বন্ধে অপরাধীদের ধরে আইনের আওতায় নিয়ে আসার বিধানও আছে। কিন্তু এভাবে নির্বিচারে সাধারণ নাগরিকদের লাশের পর লাশ ফেলা হবে, আর কোনো দেশের নপুংশক সরকার চুপ করে বসে থাকবে এটা কল্পনারও অতীত। সীমান্ত রয়েছে কানাডা-আমেরিকার, আমেরিকা-মেক্সিকোর, চীন-ভারতের, আবার ভারতের সঙ্গে সীমান্ত রয়েছে তার অজাতশত্রু পাকিস্তান ও কাশ্মীরের। কিন্তু গত ১০ বছরে পাকিস্তান ও কাশ্মীর সিমান্তে কোনো বেসামরিক মানুষ নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেনি। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা বিএসএফ এর নাম দিয়েছে ‘ট্রিগার হ্যাপি’ বাহিনী, কানাডার ভাষায় ‘anti-human, violent unit that is engaged with systematic attacks on civilian’ (অর্থাৎ, অমানুষদের এক জঙ্গলে বাহিনী যারা পদ্ধতিগতভাবে সাধারণ মানুষদের ওপর হামলা করে বেড়ায়)। কানাডিয়ান হাইকমিশনার বিএসএফ নামক এই বর্বর বাহিনীর এক জওয়ানের ইমিগ্রেশন আবেদন বাতিলও করে দিয়েছিল ওই অভিযোগে।


ফালানী হত্যার পর হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতো মানবাধিকার সংগঠন বিএসএফকে একটি ‘খুনে বাহিনী’ হিসেবে অভিহিত করেছিল। কারণ বিশ্বজুড়ে এটা আজ প্রতিষ্ঠিত বিএসএফ একটি বর্বর বাহিনী। এই বাহিনী এর আগেও নারী ও শিশুদের নির্মমভাবে হত্যা করেছে। ফালানী হত্যার আগে ২০১০ সালের মে মাসে ঠাকুরগাঁওয়ের রত্নাই সীমান্তের এক কিলোমিটার ভেতরে এসে পারুল নামে ১৪ বছরের এক কিশোরীকে হত্যা করেছিল। এ সময় খালেদা খাতুন নামে আরো একজন গুলিবিদ্ধ হয়। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তো দূরে থাক বাংলাদেশের সব গণমাধ্যমেও এসব খবর আসেনি। মানবাধিকার সংগঠন অধিকার ছাড়া এ দেশের অন্য মানবাধিকারজীবীরা সীমান্তে বিচারবহির্ভূত এসব হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে নিশ্চুপ। বিএসএফ বর্বরতার কথা বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয়ভাবে কখনোই আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বা মানবাধিকার সংগঠনগুলোর সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করেনি, বরং আমরা দেখছি বিডিআর বিদ্রোহের পর সীমান্তের নাগরিকদের জীবন আরো অনিরাপদ হয়ে উঠেছে। আর বর্ডার গার্ড এখন এই বিএসএফর মতো ‘খুনে বাহিনীর’ সাথে যৌথ টহল দিচ্ছে বলে সংবাদপত্রে খবর প্রকাশিত হয়েছে


(ফেলানীর কবর)
বৃটেনের গার্ডিয়ান পত্রিকা লিখেছে যে, ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত যেন এক বধ্যভূমি। বিএসএফের মিশনই গুলী করে বাংলাদেশীদের হত্যা করা। ভারতীয় বাহিনী বাংলাদেশী নাগরিকদের গুলী করছে স্রেফ হত্যার জন্যই। এমনকি ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তারা প্রকাশ্যেই স্বীকার করেছেন যে, ভারতে অবৈধভাবে প্রবেশের চেষ্টাকারী নিরস্ত্র বেসামরিক লোকদের তারা হত্যা করেছে। দেখামাত্র গুলী বর্ষণের কারণে সীমান্ত এলাকাটি এখন বধ্যভূমিতে পরিণত হয়েছে।


(ফেলানীর সমাধি আজ ফুলে ফুলে ঢাকা)
গার্ডিয়ান লিখেছে, সুন্দর বেড়া কী সুপ্রতিবেশী বানায়? বাংলাদেশের সীমান্তে ভারত ২ হাজার কিলোমিটার বেড়া নির্মাণ করেছে। একসময় যে জনগণ বৃহত্তর বাংলার অংশ ছিল আজ ভারত অবৈধ অভিবাসন, চোরাচালানি ও সরকারবিরোধী জঙ্গী অনুপ্রবেশের কথা বলে তাদের ঢুকতে দিচ্ছে না। ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী যেভাবে নিরস্ত্র গ্রামবাসীদের হত্যার জন্য গুলী করার নীতি বাস্তবায়ন করছে, এমন নজির বিশ্বের কোথায়ও নেই। ফলে সীমান্ত এলাকা এশিয়ান বধ্যভূমিতে পরিণত হয়েছে। অসংখ্য নিরস্ত্র ও নিরুপায় স্থানীয় মানুষের ওপর ঠান্ডা মাথায় হত্যাকান্ড চালানোর স্পষ্ট প্রমাণ করা সত্ত্বেও কাউকে বিচারের মুখোমুখি করা হয়নি।


আজ ফালানীর মৃত্যু দিবসে তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করার সাথে সাথে আমরা সবাই শপথ নেই আর কোন ফালানীর মৃত্যু মেনে নেওয়া হবেনা। কড়া প্রতিবাদের সাথে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। ইটের জবাব দেওয়া হবে পাটেকেলে। ভালো থেকো ফালানী যেখানেই থাকো। আমরা আছি তোমার হেয়ে বাংলাদেশী সীমান্তসহ বিশ্বের সকল বিচার বহির্ভূত হত্যার প্রতিরোধ প্রতিবাদ জানাতে।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৩:৩৮
১০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×