somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রিয়াজ সাহেব যে গল্পটি পড়েছিলেন।

০২ রা আগস্ট, ২০০৯ রাত ১১:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শুধু রিয়াজ সাহেবই নন, সেই প্রগৌতিহাসিক যুগের সকল ছাত্রছাত্রীরাই গল্পটি পড়েছিলো। হোক সে মেধাবী কিংবা মেধাহীন, সিরিয়াস কি ফাঁকিবাজ, কৃতি কিংবা ফেল্টুস।

এসএসসির গন্ডি পেরিয়ে কলেজের আঙিনায় পা রাখা মানেই বাধাবদ্ধ একঘেয়ে জীবনের বলয় ভেঙ্গে মুক্ত বাধাহীন , যা ইচ্ছে তা করার এক অবারিত স্বাধীনতার উল্লাস। ইন্টারে উঠে কবিতা লেখেনি কিংবা নিদেনপক্ষে একলাইন দুলাইন লেখার চেস্টা করেনি এমন কেউ খুঁজে পাওয়া যাবেনা-সমবয়সী এক বুদ্ধিজীবী টাইপের বিদ্যান ছাত্র একদিন খুব সিরিয়াস ভঙ্গিতে আমাদেরকে তার এ গবেষনালব্ধ তথ্যটি জানিয়েছিলো। আমরা তারও চেয়ে সিরিয়াস হয়ে হিসাব করে দেখলাম 'কথা সত্য'। অজপাড়াগা থেকে উঠে আসা সেই মন্টুও শক্ত মলাটের যে খাতা নিয়ে কলেজে আসে সেটা আসলে একটা ডায়েরী। এবং খুঁজলে ভেতরে অবশ্যই দুটো কবিতার লাইন পাওয়া যাবে।

মন্টু কিংবা তার মত ডায়েরী নিয়ে কলেজে আসা অন্য ছেলেরা এমনকি ক্যাম্পাসের শহীদ মিনারের পেছনে পুরনো গাছের ছায়ায় রোমান্টিক আড্ডার মায়া ত্যাগ করে যে ছাত্রটি দু বছরেরও দোতলার সিড়িতে পা রাখার সময়ই পায়নি সেও গল্পটি পড়েছে তা আমরা বুঝতে পারি পরীক্ষার আগের দিন । একজন নাবিক একটি জাহাজে করে অনেক দূরের দেশে যাচ্ছিলো। প্রতিদিন তার সাথে দেখা হতো কতগুলি অ্যালবাট্রস নামক সামুদ্রিক পাখির সাথে। পাখিগুলোকে বিবেচনা করা হতো সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবে। সমুদ্রগামী নাবিকেরা তাই ওগুলোকে কখনোই বিরক্ত করতোনা। কিন্তু বুড়ো নাবিক একদিন একটা সিরিয়াস কান্ড ঘটিয়ে ফেললো।

বুড়োর জন্য এটা অবশ্য বিচিত্র কিছু নয়। মানুষ বুড়ো হলেই বোধ হয় একধরনের পাগলামো পেয়ে বসে। সুতরাং বুড়ো নাবিককে কোনভাবেই দোষ দেয়া যায়না। সে কি জানতো আ্যালবাট্রসকে মেরে ফেললে এত ভোগান্তি পোহাতে হবে!

সমুদ্রের সকল পানি শুকিয়ে গেলো, শীতল বায়ু স্রোত স্তব্ধ হয়ে থাকলো। পান করার জন্য এক ফোটা পানিও নেই কোথাও।

গল্পটা মর্মান্তিক। ক্লাসশুদ্ধ উৎকন্ঠিত ছাত্রদের সামনে শিক্ষক যখন ব্যাখ্যা করতেন পুরো ঘটনা, গভীর মনোযোগ দিয়ে আমরা সবাই শুনতাম। কত বিচিত্র ভাবনা খেলে যেতো আমাদের মনে। আচ্ছা, বুড়োর পাপের কি কোন প্রায়শ্চিত্ত নেই ? একটা মানুষের জন্য কি কাফেলার সবাই এভাবে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়বে!!

ক্লাস শেষ করে , বন্ধুকে সাইকেলের পেছনের ক্যারিয়ারে নিয়ে টুং টাং ক্রিং ক্রিং বাজিয়ে, কবি মন্টুর গায়ে কায়দা করে এক পশলা কাঁদা ছিটিয়ে, গভমেন্ট গার্লস স্কুলের সামনে দিয়ে অহেতুক একটা বিপদজনক বাঁক নিয়ে, গলির মুখে শুয়ে থাকা কুকুরটার লেজের উপর দিয়ে চাকা ঘুরিয়ে বাসায় পৌছা র্পযন্ত পুরো সময়টাতে বুড়ো নাবিকের কথা থেকে থেকে স্মরন করতাম কিনা জানিনা, তবে সন্ধার পরে আমাদের ভাবনায় আবার বুড়ো নাবিকের পদচারনা শুরু হতো।

প্রগৌতিহাসিক যুগে আমাদের মত যারা কলেজের আঙ্গিনায় পা রেখেছিলাম। তারা প্রত্যেকেই এই বুড়ো নাবিকের গল্পটি অন্তত দুবার পড়েছিলো বলে জনারণ্যে চালু আছে। এমনকি যে রিয়াজ সাহেবের কাছ থেকে উত্তরাধিকার সুত্রে বইটি পেয়েছিলাম প্রথমদিনের পরে তিনি আর কলেজের ছায়া না মাড়ালেও ঝকঝকে তকতকে ইংরেজি বইটার প্রথম কটি পৃস্ঠায় তার স্মৃতিবহ কলমের দাগ স্মরন করে অনুভব করি তিনিও এ গল্পটি পড়েছিলেন।

কারনটা সবাই বুঝতেই পারছেন ! সে আমলে 'দ্যা এনসিয়েন্ট মেরিনার' ই ছিল ইংলিশ টেক্সট বুকের ফাস্ট স্টোরী।

২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×