somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক সমাধান! অথবা মিথ্যার বেসাতি

০২ রা মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৫:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মনটা এমনিতেই খুব খারাপ ছিল। পরিষ্কার হতে পারছিলাম না সাম্প্রতিক পিলখানায় ঘটে যাওয়া 'বিড়িয়ার বিদ্রোহ'র বেশ কিছু বিষয়। বন্ধুবান্ধব, পরিচিতজন, ওয়াকেবহালদের মনোভাব বুঝার চেষ্টা করছিলাম।-- কার কাছে বিষয়টা কিভাবে ধরা দিচ্ছে। ব্লগেও বিস্তর লেখালিখি হয়েছে, হচ্ছে। বোধগম্যভাবেই প্রথম দুইদিনের সাথে বিস্তর ফারাক তৈরি হয়েছে দৃষ্টিঙ্গি ও সমর্থনের মাপকাঠিতে।

স্বাভাবিকভাবেই মতামত তৈরি ও উৎপাদনের নানান কলকব্জাগুলো নিজেগো স্বার্থ মোতাবেক পুরাদস্তুর নিয়োজিত হইছে। সরকার, বিরোধী দল গৃহীত কর্মপন্থা নিয়ে বিতর্ক করেছে। আমার তাতেও কথা বলার বিশেষ একটা আগ্রহ জন্মায় নাই। আমি একটু ধাতস্ত হইয়া সবকিছু ঠাণ্ডা মাথায় যোগবিয়োগ কইরা দেখবার তরিকায় অগ্রসর হইতে চাইতে ছিলাম। একটু অপেক্ষায় আমার আগ্রহ ছিল। তাই মৌনতাও ছিল।

কিন্তু গতকাল মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সংসদে দেওয়া ভাষণে আমি হতবাক, শংকিত ও বেদনায় আক্রান্ত। এটা কি বললেন তিনি! সত্যিই তাই? তাহলে কি করলেন এই কয়টা দিন খামোখা?

আমার মনে হয়েছিল তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ার চাইতে ধীরেসুস্থে বুঝেশুনে সবদিক বিবেচনা করে তিনি এই চরম সংকটকালিন সময়ে সংযমের সহিত তার নিজস্ব মেধা ও বিবেচনাবোধ অনুসরন করেছিলেন বা করার জন্য আন্তরিক ছিলেন। আমার ধারণা ছিল তিনি বেশকিছু গুরত্বপূর্ণ তথ্য সময় মতো পাননি বা তাকে দেওয়া হয়নি। আমি প্রতারিত।

কাল তিনি যখন সংসদে নিজেই বললেন যে বিড়িয়ার হেডকোয়ার্টারে গোলাগুলির পর তিনি ডিজি শাকিলের সাথে নিজে কথা বলেছেন, সঙ্গে সঙ্গে জানতেন যে কি হচ্ছে, অফিসারদের বাচানোর আর্জি কানে এসে পৌঁছেছিল এবং তার পর তিনি সবিস্তারে যে ফিরিস্তি দিলেন তাতে আমার অন্তরাত্মা কেঁপে উঠেছে, চক্ষু ছানাবাড়া।

প্রথম কথা হলো যখন প্রধানমন্ত্রী ফোনে ডিজির সাথে কথা বলছিলেন তখনই তো তিনি সরাসরি তৎক্ষণাত লাউড স্পিকারে সেখানে অবস্থানরত বিদ্রোহকারিদের ঘোষণা দিতে পারতেন, কথা বলতে পারতেন। মনে রাখা দরকার ডিজিটাল বাংলাদেশের শ্লোগান দেওয়া পিএম ডিজিটাল কথোপকথনের জ্ঞান বা নজির অনেক আগেই দলীয় কর্মীদের সাথে কথাবলে তৈরি করেছিলেন। তিনি সাথে সাথে বলতে পারতেন যে আপনারা কারো কোনো ক্ষতি করবেন না, আমি আপনাদের দাবি দাওয়া মানছি বা কথা বলার জন্য সরাসরি আসছি( বঙ্গবন্ধু '৭২তে তাই করেছিলেন)। মাত্র ১০ থেকে সর্বেচ্চ ৩০ মিনিট লাগত। তা হলেই তাকে রাজনৈতিক সমাধান বলা যেত; বলা যায়। তিনি কিন্তু নিজের মুখেই বলেছেন যে তিনি তখন তাঁর মিলিটারি সেক্রেটারিকে সেনাপ্রধানকে ফোন করে তার পর সেনাবাহিনী আনতে কতক্ষণ লাগবে তাই জানতে চেয়ে ছিলেন এবং দুই ঘন্টা সময় লাগবে জানার পর সেটাই নির্দেশ দিয়েছিলেন। কি আশ্চর্য, অথচ তিনি বা আওয়ামীলীগের দাবি পুরা উল্টা যে তারা বিষয়টির নাকি 'রাজনৈতিক' সমাধানের দিকে মনোযোগি থেকেছেন। পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে তিনি সে দুই ঘন্ট সময় কোনো রাজনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণ করেন নাই। পরেও কি করেছিলেন? আমরা লক্ষ্য করবো কখন তার প্রতিনিধিদল সেখানে প্রবেশ করেছিল। তিন দফায় তাঁদের আসাযাওয়ার অর্জনটা কি?

এবার আসি দ্বিতীয় প্রসঙ্গে। সামরিক প্রস্তুতি ও উদ্ধার অভিযানটা আদপে কেমন ছিল? প্রধানমন্ত্রী রেডিও টেলিভিশন বাদ দিয়ে একটা লিফলেট বিতরণের প্রদক্ষেপ নেওয়ার কথা সবার আগে চিন্তা করলেন কেন? হায় লিফলেট! আমার মাথায় ঢুকছে না। তাঁকে এই বুদ্ধি কে দিয়েছে? তিনি কি নিজেই এমন একটা আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন? নাকি অন্য কোনো আশ্রয়ে তখনই অসহায়।

তো, সেনাবাহিনী যে গেল তারা কোথায় গেল, কতদূর, কতটুকু এরিয়া পর্যন্ত তাদের পাঠানো হলো? আমরা শুনলাম, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের শুনালেন যে বিড়িয়ারের পাঁচ নাম্বার গেট খোলা ছিল, সেখান দিয়ে করা বের হয়েছে বা ঢুকেছে তিনি জানেন। কি অদ্ভুত, সেনাবাহিনী পাঠালেন তিনি আর গেট খোলা থাকে এবং তা দিয়ে চক্রান্তকারিরা দেদারসে কাজ চালিয়ে যায় কিন্তু নিরাপত্তা বাহিনী কিছুই করে না বা সেখানে থাকে না এটা কেমন কথা? তিনি বললেন যে গোটা পিলখানা প্রায় ১০ কিমি বড় এরিয়া, এটার জন্য নাকি পালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়েছে। তাইকি? ১০ কিমি অঞ্চল এলাকা ঘিরতে কত সময় লাগার কথা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী? আপনি যখন সেনা তলব করেছিলে তাদের কে কি শুধু রাইফেলস স্কয়ার গেটেই দাঁড়িয়ে থাকতে বলেছিলেন নাকি পুরো অপারেশনের প্রস্তুতি নিয়ে আসতে বলেছিলেন?

আমার বুঝে এও আসে না আপনার সেনাপতি মইন সাহেব কি করলেন। তিনিও কি আপনার মতো অপরিপক্ক। ব্লাক আউট হবে বা অরক্ষিত জায়গা দিয়ে যে কেউ পালিয়ে যাবে তা তিনিও বুঝতে পারেন নাই। সত্যি তিনি আপনার অনুগত, তার সমতুল্য সামরিক অফিসার বাংলাদেশে আর পাওয়া যাবে না।

আসলে আপনাদের আয়োজ বা প্রস্তুতিটা কি ছিল?? কাদের নির্দেশে আবাসিক ঘরবাড়ি খালি করতে বলা হয়েছিল তা কেউ বলতে পারে না। আপনাদের দুইজনের কেউ তা দেন নি সেটা আমরা জেনেছি। তা হলে তা কে কেন করলো একটু বলে আমাদেরকে গিট্টু খুলতে সহায়তা দিন। আমরা জানে বাচার কথা না হয় পরে চিন্তা করবো....
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৫:১৭
৯টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×