somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হোম কোয়ারেন্টাইন - সবচেয়ে লাভবান কারা ?

২৮ শে মার্চ, ২০২০ বিকাল ৪:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



৫ মাস আগে যখন গ্রাফিক্স ডিজাইন এর কাজ শিখছিলাম তখন হোম ওয়ার্ক এর অংশ হিসেবে এই ছবিটি করেছিলাম। কাজ করতে করতেই হঠাৎ আউডিয়াটা আসে মাথায় ।
ব্যক্তিগত ভাবে খাঁচায় পশু পাখি পোষা আমার কাছে খুব খারাপ লাগে কারন ওদেরও একটা আলাদা পৃথিবী আছে । মানুষের মত ওদেরও ওদের জায়গায়ই থাকার কথা । কিন্তু আমরা মানুষ আমাদের নিজেদের মনোরঞ্জন আর শখ পূরণ করার জন্য অথবা কিছু অর্থ উপার্জন করার জন্য ওদেরকে খাঁচায় বন্দী করি । ওদের খাঁচার ভেতরে যত ভালো ভালো খাবার আর যতকিছু দেইনা কেন ওরা কি তাতে খুশী হয় ? ওরা কি ওখানে ভালো থাকে ? থাকেনা ।

আমাদের মানুষকে যদি এমন খাঁচায় বন্দী করে অনেক ভালো ভালো কাপড়, খাবার, আরও অনেক কিছু দেওয়া হয়, কোন কাজ করা লাগবেনা অথচ ৫ টি মৌলিক চাহিদার সব পেয়ে যাচ্ছি ওই একটি খাঁচার ভেতরেই, তারপরেও কি থাকতে পারবো আমরা ? অসম্ভব । আমাদের যেমন লাগবে ওদেরও তেমনই লাগে খাঁচার ভেতরে । তাই আমরা মানুষরা যেন পশু পাখিদের প্রতি নির্মম না হই এই বিষয়গুলো মাথায় রেখেই ছবিটা বানানো ।

কাল হঠাৎ এই ছবিটির কথা মনে পরে আর অবাক হই খুব। ৫ মাস আগের করা এই ছবি আজ বাস্তব। আমরা মানুষরাই খাঁচায় বন্দী হয়ে গেলাম আর পশুপাখিরা মুক্ত । কি অসহায় আমরা এখন, ছাঁদে গিয়ে, বারান্দায় গিয়ে, কিংবা জানালার গ্রিল দিয়ে বাইরে দেখছি অথচ বাইরে যেতে পারছিনা । কখনো কি ভেবেছিলাম মানুষ হয়ে জন্মে ক্ষমতার দাপটে অসহায় পশু পাখিদের খাঁচায় বন্দী করা আমরা নিজেরাই একদিন খাঁচায় বন্দী হয় যাবো ।

যাদের বাসায় এখন খাঁচায় পাখি, একুরিয়ামে মাছ আছে কিংবা অন্য কোন পশু পাখি আছে বন্দী, আপনার আর আপনার বাসার সেই বন্দীর সাথে কিন্তু এখন আর কোন পার্থক্য নেই । আপনি তাঁর চোখে চোখ রাখতে পারছেন তো ? নাকি এখনও অনুধাবন হয়নি কিছু ?

একটি ভিডিও দেখলাম কক্সবাজার সমুদ্র তে ডলফিন ঘুরে বেড়াচ্ছে । কি নিশ্চিন্ত ওরা এখন । আমরা নিষ্ঠুর মানুষরা যে খাঁচায় বন্দী । আর কিছুদিন আমরা বন্দী থাকলে হয়তো দেশ বিদেশের ছোট বড় বন জঙ্গলের পশু পাখিরাও বাইরে চলে আসবে আমাদেরকে সমবেদনা জানাতে অথবা উপহাস করতে।
এ পৃথিবীটা শুধুমাত্র মানুষের বসবাসের জন্য নয়। আমরা পৃথিবীকে নিজেদের বসবাসের যোগ্য করেছি কিন্তু পৃথিবীর অন্যান্য জীবের জন্য করেছি অযোগ্য । পশু পাখিরা আমাদের সাথে কথা বলতে পারেনা কিন্তু আল্লাহ তো দেখেন তাঁদের কষ্ট তিনি শোনেন সবার কথাই ।
তাই বুঝি সময়ের এই পরিনতি।
থাকি না হয় কয়দিন বন্দী হয়ে আর ওরা বাঁচুক, উপভোগ করুক জীবনকে । হেসে খেলে বেড়াক । আনন্দময় হোক ওদের পৃথিবীও ।

হোম কোয়ারেন্টাইনে্র সময়ে সবাই সময় কাটানোর জন্য অনেক কিছু করছি, সময় পেয়ে অনেকে নতুন কিছু শিখছি, নামাজ রোজা আর আল্লাহকে স্মরণ করার মাধ্যমে নিজেকে শুদ্ধ করছি তবে কিছু সময় যেন আমরা ভাবিও ।
মৃত্যু অবধারিত, সেটা করোনাতে হোক আর যেভাবে হোক তবে সব কিছুর পেছনে আল্লাহ্‌র এর একটি উদ্দেশ্য থাকে । আমাদের তাঁর উদ্দেশ্য বোঝার দরকার নেই আমরা শুধু অনুধাবন করার চেষ্টা করি নিজেদের ভুলগুলো আর অন্যায়গুলো এবং ক্ষমা চাই আল্লাহর কাছে । ইনশাআল্লাহ্‌ তিনি সব ঠিক করে দিবেন।
তবে আমি নিশ্চিত, একসময় যখন আল্লাহ্‌র রহমতে সব ঠিক হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ্‌, তখন আমরা এখনকার সব ভুলে যাবো আবার হয়ে যাবো দস্যু। তাই যদি হয় তাহলে আমরা যেন আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে প্রস্তুত করে যাই আবার বহু বছর পরে এমন কোন মহামারীর জন্য।

এবার আসি পোষ্ট এর শিরোনামের কথায় তা না হলে আবার শিরোনামের সাথে অপ্রাসঙ্গিক লেখার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়ে যেতে পারি :D যেটা বলছিলাম
হোম কোয়ারেন্টাইন - সবচেয়ে লাভবান কারা
এইযে বাইরের সব কাজকর্ম বাদ দিয়ে ঠায় ঘরের ভেতরে বসে আছে সবাই, অনেকে পরিপূর্ণ অবসর সময় কাটাচ্ছেন আবার অনেকে বাসায় বসেই অফিসের কাজ কর্ম করছেন তবে এসবের মধ্যেই যারা আছেন লেখক সমাজ, ব্লগ কিংবা অন্যান্য মাধ্যমে লেখালেখি করেন তাদের জন্য মোক্ষম সময় সুযোগ লুফে নেওয়ার :#) ব্যস্ততাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে এই সুযোগে এই অবসর সময় টুকুকে কাজে লাগিয়ে নিজের লেখার জগতটাকে আরও প্রসিদ্ধ করি । অন্যান্য কাজের পাশাপাশি এই সময়গুলোতে বেশী বেশী পড়ি আর লিখি ।

প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও অনেক লেখক অনেক লেখা হারিয়ে যায় শুধুমাত্র জীবন জীবিকা নিয়ে ব্যস্ত থাকার কারনে । কারন লেখার জন্য প্রয়োজন সময় যেটা আসলে হয়ে উঠেনা অনেকের । তাই হোম কোয়ারেন্টাইন এর এই সময়গুলোতে আমরা লিখি, আমাদের ড্রাফট এ অনাদরে পরে থাকা লেখাগুলোকে পূর্ণতা দেই, প্রসিদ্ধ করি আমাদের সামু পারা কে ভালো ভালো লেখা দিয়ে।

এখন আগেরমত ব্লগে আসা হয়না, গত কয়েকদিনও আসিনি তেমন তাই বলতে পারবোনা সুযোগ আমরা লুফে নিয়েছি কিনা যদিও আমি নিজেও লিখছিনা কারন এই অবস্থায় আসলে মনে শঙ্কা নিয়ে লেখায় মন বসেনা তবে হোম কোয়ারেন্টাইন এ না থাকলে আজকের লেখাটিও যে লিখতাম না এটাও সত্যি। হয়তো আজকের পর থেকে আরও কিছু লেখা লিখতেও পারি ।
যে কোন সময় মৃত্যু আসতে পারে এই জেনেও আমরা জীবনকে নিয়েই থাকি । তাঁই আল্লাহ কে স্মরণ করি সবসময় । বিপদ মুক্তির জন্য দোয়া ও ক্ষমা চাই আর পাশে পাশে চালিয়ে যাই জীবনের আয়োজন, চালিয়ে যাই লেখা ।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মার্চ, ২০২০ বিকাল ৪:২০
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×