"বীর বাঙ্গালী অস্ত্র ধরো
বাংলাদেশ স্বাধীন করো"
আমরা অস্ত্র ধরেছি আমাদের বাংলাদেশ স্বাধীনও করেছি । এমনকি আমরা আমাদের মাতৃভাষাকেও ছিনিয়ে নিয়ে যেতে দেইনি । আমাদের বীরত্ব অস্বীকার করার উপায় নেই । শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা সকল বীর বাঙ্গালী ভাই ও বোনদের প্রতি ।
সমগ্র পৃথিবীতে এখন যুদ্ধ চলছে । করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ । আর এই যুদ্ধেও আমরা দেখাচ্ছি আমাদের বীরত্ব আর সাথে সাথে প্রমান করছি আমরা কতটা মূর্খ । পৃথিবীর বাঘা বাঘা দেশ যেখানে হিমশিম খেয়ে যাচ্ছে হেরে যাচ্ছে করোনা নামের এই শত্রুর কাছে সেখানে আমরা ইতোমধ্যেই এর লীলাখেলা জেনে ও দেখেও এতোটাই বীরত্ব দেখাচ্ছি যে মরতেও আমাদের ভয় নেই । ক্ষুদ্র এক অণুজীবের ভয়ে কাপুরুষের মত ঘরে মুখ লুকিয়ে থাকা আমাদের সাজে নাকি ?
প্রায় একমাস হলো ঘরবন্দী সবাই, এই মাস কোন রকম চলছে কিন্তু আগামী মাস থেকে কিভাবে চলবে কোন ঠিক ঠিকানা নেই, তাঁর উপর রোজা ও ঈদ, কত মানুষ খেতে পারছেনা, কত মানুষ আপনজনদের থেকে দূরে আটকা পরে আছে । শুধু অপেক্ষা কবে থামবে এই যুদ্ধ কবে স্বাধীন হবো । করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু, করোনার কারনে সৃষ্ট সমস্যা, সমস্ত কিছুর ভয়ানক রুপ কোন কিছুইতো আর অজানা নেই আমাদের তারপরেও কেন এতো অবহেলা ? কেউ যদি একটা রাইফেল নিয়ে এসে দাড়িয়ে থাকে বাড়ির সামনে বের হলেই গুলি করবে তাঁকে তো ঠিক ভয় পাবো তাহলে যে করোনা অদৃশ্য শত্রু হয়েও লাখ লাখ মানুষ মেরে ফেলছে আরও বিভিন্নভাবে বিপদ ডেকে আনছে তাঁকে ভয় নেই কেন ? সে ক্ষুদ্র এক অনুজীব যাকে খালি চোখে দেখাই যায়না তাই বুঝি এতো অবহেলা ? প্রতিদিন খবর দেখি এখানে মানুষ ওখানে জনসমাগম এইটা ওইটা । কেনরে ভাই ??? আমার এসকল মানুষকে জিগ্যেস করতে ইচ্ছে করে যে এরা আসলে কি চায় ???
আরে গাধার দল যে শত্রু কে চোখে দেখা যায়না সেই শত্রুকে মোকাবেলা করা বেশী কঠিন । আরে গাধার দল সব যুদ্ধে বীরত্ব দেখিয়ে জয়লাভ করা যায়না কিছু যুদ্ধে হেরে গিয়ে হারাতে হয় আর বীরত্ব দেখাতে হয় পরে । কিন্তু মূর্খের তা বোঝার ক্ষমতা কই ।
যার বীরত্ব দেখিয়ে মরার ইচ্ছে হয় সে মরুক কিন্তু সে কি জানেনা যে এই যুদ্ধে সে মরলে তাঁর সাথে আরও দশজনকে নিয়ে মরবে ।
সে কি জানেনা, এই অবস্থায় কারও জানাযা নামাযে গিয়ে যে বাহাদুরি সে দেখালো আল্লাহ্ না করুক কাল যদি করোনা আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয় তখন যে তাঁর নিজের জানাযায় কেউ থাকবেনা ।
অবশ্য মূর্খগুলোরতো তা জানলেও বোধোদয় হবার কথা না ।
আর আমার মত সচেতন যারা তাদেরও ক্ষমতা কই কিছু করার শুধু বাসায় বন্দী হয়ে থেকে এসব মূর্খতা হজম করা । আমরা চিৎকার করে বলতে বলতে মুখে ফেনা উঠিয়ে ফেলি, যতই লিখতে লিখতে কলমের কালি ফুরিয়ে ফেলি, ঘরে থাকুন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন এদের তা বোঝার ক্ষমতা নেই কারন এরা অন্ধ এরা বধীর এরা মূর্খ । এদের মাথায় জন্ম থেকেই ব্রেইনের বদলে গোবর ভর্তি এই ভেবে ক্ষমা করে দিলাম।
তবে আপনার নির্বুদ্ধিতার কারনে আল্লাহ্ না করুন যদি আপনার পরিবারের কারও কোন ক্ষতি হয় তখন আপনি নিজেও নিজেকে ক্ষমা করবেন না এটা নিশ্চিত । এখনও সময় আছে সাবধান হোন সচেতন হোন । নিজে বাচুন পরিবারকে বাচান সমাজকে বাচান দেশকে বাচান । মনে রাখবেন দশের লাঠি একের বোঝা ।
আমাদের সম্মিলিত সচেতনতাই লাঠি হয়ে পারে এই করোনা কে হারাতে । তা না হলে সরকারের একার পক্ষে তা বোঝাই হয়ে থাকবে ।
আমাদেরকে বাঁচতে হবে আমাদের পরিবারকে বাঁচাতে হবে আমাদের দেশকে বাঁচাতে হবে । করোনা যুদ্ধে জয়ী হতে হবে আমাদের তবে বীরত্ব দেখিয়ে নয় । এটা এমন এক শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ যেখানে হেরে গিয়ে হারাতে হবে আর বীরত্ব দেখাতে হবে পরে । এই এক কথা বার বার বলতে আর ভালো লাগেনা তাও বলি আরও হাজারবার বলবো তাও যদি বোধোদয় হয় । দয়া করে ঘরে থাকুন। এই করোনার বিরুদ্ধে আমরা সবাই কিন্তু যোদ্ধা । কেউ সরাসরি যুদ্ধ করছে কেউ পেছন থেকে সাপোর্ট দিচ্ছে । আপনিও এই যুদ্ধকে আরও কঠিন না করে দিয়ে দয়া করে সাপোর্ট দিন । কিছু করা লাগবেনা আপনাকে শুধুই ঘরে বসে ধৈর্য ধরে থাকতে হবে যেন বিজয় মিছিলে আপনিও সামিল হতে পারেন ।
আমরা আসলেই বীরের জাতি । আমরা অনেকবার অস্ত্র ধরেছি আরও একবার করোনা যুদ্ধে অস্ত্র ধরি । আর এ যুদ্ধে করোনাকে হারানোর একমাত্র অস্ত্র হচ্ছে ঘরে থাকা ।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:২৬