somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সচেতন নাগরিকদের জন্যে একটি সতর্কবার্তা .....................

০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমাদের উপজেলাটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম উপজেলা রংপুরের মিঠাপুকুর। এখানকার একটি প্রত্যন্ত গ্রামে একটি খৃষ্টান গীর্জা রয়েছে। আগে কখনো সেখানে যাওয়া হয় নি। একদিন দু’জন বন্ধুসহ গীর্জা দেখার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়লাম। গীর্জাটি ছিল উপজেলা থেকে প্রায় প্রায় ১০ কি.মি দূরে। গীর্জাটি বিশাল এলাকা নিয়ে অবস্থান করছে যার চারদিকে রয়েছে বাউন্ডারী ওয়াল। আমরা গীর্জার ভিতরে ঢুকলাম। প্রথমেই একজন সিষ্টারের সঙ্গে দেখা হয়ে গেল। তিনি আমাদের দেখেই বললেন, কি ভায়া! গীর্জা দেখতে আসছো? দেখা হলে একবার অফিসে আসো একসঙ্গে কফি খাওয়া যাবে! সিষ্টারের এমন অমায়িক ব্যবহারে আমি মুগ্ধ! কারণ প্রথম দেখাতেই এতোটা আপন করে কেউ কথা বলতে পারে তা হয়তো জীবনের প্রথমবার দেখলাম! এরপর আরও ভিতরে গিয়ে দেখলাম, একটি সুসজ্জিত ক্লিনিক এবং একটি স্কুল রয়েছে। ক্লিনিকে নিজস্ব ডাক্তার দিয়ে বিনামূল্যে চিকিৎসা দেয়া হয় আর স্কুলে সকল ধর্মালম্বিদের শিশুদের জন্য ক্লাস এইট পর্যন্ত বিনা বেতনে দুপুরে খাবারসহ পড়াশুনার ব্যবস্থা রয়েছে।

গার্জার আশেপাশের এলাকাটি প্রায় পুরোটাই সুবিধা বঞ্চিত মানুষদের বসবাস। সেখানে আজও অধিকাংশ ঘরেই বিদ্যুতের আলো পৌছায় নি। সেখানকার অধিবাসীদের অধিকাংশরাই সাওতাল ছিল কিন্তু পরবর্তিতে তারা খৃষ্টান হয়ে গেছে। লোকমুখে শোনা যায় টাকা এবং সুযোগ সুবিধার লোভ দেখিয়ে সাওতালদের খৃষ্টান বানানো হয়েছে। মুসলিমদের মাঝেও কতক পরিবারকে তারা টার্গেট করেছিল। কিন্তু সাধারণ মানুষের বাধার মুখে তারা সেদিকে আর পা বাড়ায় নি। এটাতো লোকমুখের কথা, কিন্তু তথ্যনুসন্ধান করলে আরও ভয়ানক কিছু তথ্য পাওয়া যাবে।

কিছুদিন আগে La Conqute Du monde Musulman নামে একটি বই হাতে পাই। যার সম্পাদনা করেছিলেন এ লি সাটিলিয়ার। মূলত বইটি লেখা হয়েছে ১৯০৬ সালে কায়রোতে,১৯১০ সালে ইংল্যান্ডের এডিনবার্গে এবং ১৯১১ সালে ভারতের লাক্ষনৌতে অনুষ্ঠিত খৃষ্টান মিশনারী সম্মেলনে খৃষ্টান পাদ্রীে এবং খৃষ্টান নেতাদের বক্তব্য নিয়ে লেখা হয়েছে। বইটির ভূমিকায় সাটিলিয়ার এর উদ্দেশ্য এবং অন্তনিহিত মর্মকথা ব্যক্ত করেছেন। আমি সেই ভুমিকার কথাগুলো সবার শেষে দিব কিন্তু প্রথমেই খৃষ্টান পাদ্রী এবং খৃষ্টান নেতাদের কিছু বক্তব্য আপনাদের উদ্দেশ্য তুলে ধরছি।

La Conqute Du monde Musulman বইয়ের ৩৩ তম পৃষ্ঠায় পাদ্রী যুয়াইমের বলেছেন,“ঈশ্বর আমাদের কাজের কেন্দ্রস্থল হিসাবে মিসরকে বেছে নেয়ার ‍সুযোগ করে দিয়েছেন। অতএব গোটা ইসলামী দুনিয়াকে খৃষ্টান বানানোর জন্য, এই স্থানে অতি দ্রুত একটি খৃষ্টান একটি খৃষ্টান শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কায়েম করা প্রয়োজন।” প্রত্যেক গীর্জার ভিতরে স্কুল থাকার কারণটা বুঝলেন তো?

এরপর উল্লেখিত গ্রন্থের ৩৬ পৃঃ পাওয়া যায়,“ এরপর সম্মেলনে মেডিক্যাল টিম প্রেরনের প্রসংগ উত্থাপিত হল। মি. হারবার উঠে দাড়িয়ে বলেন, মেডিক্যাল টিমের আকার আরো বর্ধিত করা প্রয়োজন। কেননা এদের মাধ্যমে মুসলিম জনসাধারনের সাথে সহজেই সম্পর্কে স্থাপন করা যায়। এজন্য অন্যন্য মিশনারী সংস্থার তুলনায় তারা ডাক্তারদের দ্বারা সহজেই প্রভাবিত হয়”। গীর্জা মিশনের ভিতরে ক্লিনিক স্থাপনের অন্তঃনিহিত উদ্দেশ্যটাও দিনের মতো পরিষ্কার হয়ে গেল। মি. হারবার মিশনারী ডাক্তারদের দায়িত্ব সম্পর্কে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেন,“ মিশনারী সংস্থার ডাক্তারদের কখনো এবং কোন অবস্থায়ই এ কথা ভুললে চলবে না যে, সর্ব প্রথম তারা মিশনারী অতঃপর তারা ডাক্তার”

La Conqute Du monde Musulman বই এর ৪৮ পৃঃ পাদ্রী যুয়াইম মিশনারীদের লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য ব্যক্ত করেন। অতঃএর সেই কাজে সফলতা পেতে দৃঢ় প্রত্যয় এবং ধৈর্য ধারণ করতে বলেছেন। তিনি বলেছেন,“ এই মিশনারীদের প্রচেষ্ঠার ফল এই হওয়া উচিত যে, মুসলিম যুবক ও যুবতীরা খৃষ্টান হয়ে যাবে। এর দ্বিতীয় ফল এই হওয়া উচিত যে, মুসলমানদের সব শ্রেণীর মধ্যে মিশনারী ধ্যান ধারণা গ্রহণ করার প্রবনতা দেখা যাবে। মুসলমানদের ভিতর নিজেদের কর্মতঃপরতার দুর্বল প্রভাব লক্ষ্য করে মিশনারীদের নিরাশ হওয়া উচিত হবে না। কেননা মুসলমানদের মধ্যে পাশ্চাত্য চিন্তার প্রভাব এবং নারী স্বাধীনতানর ঝোঁক উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে”

আর এই পাশ্চাত্য চিন্তাধারায় মুসলমানদের প্রভাবিত করতে সারা বিশ্বের ন্যায় খৃষ্টানরা এই বাংলাদেশেও তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে বসেছে। সেই লক্ষ্যে তারা নটর ডেম, সেন্ট জোসেফ, হলি ক্রসের মত স্কুল এন্ড কলেজ গুলো খুলে বসে আছে। যেখানে মুসলমিদের ধর্মহীন শিক্ষা ব্যবস্থায় পড়তে অনুপ্রাণিত কিংবা প্রভাবিত করা হচ্ছে। এগুলো নিছক আমার কথা নয়। এগুলো খৃষ্টান পাদ্রীরা নিজেরাই ব্যক্ত করেছেন। পাদ্রী হোয়াইট ব্রুষ্ট বলেন,“পাশ্চাত্য শিক্ষা ব্যবস্থা মুসলমানদের খৃষ্টবাদের কাছাকাছিনিয়ে যাবে”। সেই সাথে La Conqute Du monde Musulman বইটির ৬০ ও ৭২ পৃঃ বলা হয়েছে, “ স্কুল ও কলেজগুলো হচ্ছে মিশনারীদের উদ্দেশ্য পূর্ন করার সর্বোত্তম হাতিয়ার। স্থানীয় মুসলমানরা যতদিন খৃষ্টান মিশনারী সংস্থাগুলোর প্রতি বীতশ্রদ্ধ থাকবে ততদিন তাদের শিক্ষার জন্য ধর্মহীন শিক্ষা প্রতিষ্টান গড়ে তোলা খৃষ্টান সরকারদের কর্তব্য”

আর এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সরাসরি উদ্দেশ্য ব্যক্ত করতে গিয়ে পাদ্রী যুয়াইম ৪৬ পৃঃ বলেছেন,“ মুসলমানদের খৃৃষ্টান বানানোর কাজটি স্বয়ং তাদের মধ্যকার এই সংস্কারবাদীদের দ্বারাই করা উচিত। তাহলে তারা নিজেদের হাতেই নিজেদের শিকড় কেটে ফেলতে থাকবে”। অনেকটা কাটা দিয়ে কাটা তোলার মত অবস্থা!

এবার আসি সম্পাদক সাটিলিয়ারের বক্তব্যে! বইটির ভূমিকায় সাটিলিয়ার বলেন,“আমরা ১৯১০ সালে ইসলামী রাজনীতি নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে লিখেছিলাম, ফ্রান্সের উচিত আরব এবং মুসলিম দেশসমূহে কাজ করার যে কোন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করার পূর্বে তার কাজের ভিত্তি বুদ্ধিবৃত্তিক প্রশিক্ষনের নীতিমালা প্রনয়ন করা। এতে কাজের ক্ষেত্র প্রশস্ত হবে এবং সুদূর প্রসারী ফল লাভ করা সম্ভব হবে। এই উদ্দেশ্য লাভের জন্য আমাদেরকে শুধুমাত্র মিশনারীদের পরিচালিত তৎপরতার উপর নির্ভর করা উচিত নয়। কেননা আমাদের অসংখ্য উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য অর্জনের জন্য পাদ্রীদের সীমিত তৎপরতা যথেষ্ঠ নয়। এই উদ্দেশ্য কেবল ফ্রান্সের বিশ্ববিদ্যালয় সমূহে দেয়া শিক্ষার মাধ্যমেই অর্জন করা যেতে পারে। কেননা এই শিক্ষা পদ্ধতি ইচ্ছা মক্তির উপর ভিত্তিশীল বুদ্ধিবৃত্তি উপায় উপকরনের সাহায্যে কাজ করা হয়েছে। আমি আশা করি এই শিক্ষা পদ্ধতি বাস্তবে কার্যকর হয়ে ফরাসী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষাকে ইসলামের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে পারবে”।

বুঝতে পারছেন, এগুলো আমার বানানো কোন কথা নয়! যা লিখেছি তার অধিকাংশই খৃষ্টান পাদ্রী এবং নেতাদের বক্তব্য থেকে। ঠিক এই বুদ্ধিবৃত্তিক পরিকল্পনা নিয়ে মিশনারী সংস্থাগুলো পার্বত্য অঞ্চলের দিকে হাত বাড়িয়েছে। সেখানে তারা সাওতালদের মিশনারী শিক্ষার আওতায় এনে পার্বত্য অঞ্চলকে নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। তাই আমাদের উচিত চোখ কান খোলা রেখে এইসব পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের মোকাবেলা করা।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:২২
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×