পাতানো হোক আর সাজানো হোক আরেকটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন আমাদের দোরগোড়ায় কড়া নাড়ছে, পুতুল নির্বাচন কমিশনও তাদের নির্বাচনকালীন সকল প্রস্তুতি (নাটক) সম্পন্ন করার প্রয়াসে বাস্ত। ইনশাল্লাহ আগামী ৫ই জানুয়ারি ২০১৪ইং রোজ রবিবার ৫০০ কোটি টাকায় নির্মিত নতুন নাটকটি দেশের মাটিতে মঞ্চস্থ হবে। অতিসত্তর এই প্রহসনে অংশগ্রহনকারী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পাতানো নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সাজানো নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশের ধুম পরে যাবে। আমরা সাধারন জনগনও রাজনৈতিক দলগুলো দেখানো স্বন্পের ভেলায় ভেসে হারিয়ে যাবো, টকশো গুলো পাবে আলোচনার নতুন বিষয়বস্তু, সংবাদ মাধ্যম গুলো শুরু করবে এর ময়না তদন্ত। ধারনা করা যাচ্ছে দুই এক দিনের মধ্যে ক্ষমতাসীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তাদের নির্বাচনী ইশতেহার-২০১৩ প্রকাশ করবে। নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করে মূলত ভোটারদের আকৃষ্ট করার জন্য, ভোটারদের আনুকুল্য পাওয়ার জন্য। সত্য মিথ্যার মিশেলে, আশার বাণীতে ভরপুর এই ধরনের নির্বাচনী ইশতেহার এবারের নির্বাচনে প্রকাশের প্রয়োজন আছে বলে মনে হয়না। তারপরও নিয়ম রক্ষার্থে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তা প্রকাশ করবে এবং আমরা তা দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি!!! এবার একদিকে আমাদের ভাগ্য ভালো যে প্রধান বিরোধী দল নির্বাচনে অংশগ্রহন করছে না, করলে আরো একটি মিথ্যার ডালা আমদের সামনে উম্মোচিত হত। আমরা সেটা নিয়ে তর্কে মেতে উঠতাম।
যাই হোক রাজনৈতিক দলগুলো ভোট পাওয়ার জন্য নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করে এখন যদি আমরা সাধারন জনগন ভোট দেয়ার জন্য ভোটের ইশতেহার প্রকাশ করি তাহলে কেমন হবে? সে যেমনই হোক এই ধরণের একটা উদ্ভট চিন্তা থেকে জনগনের ভোটের ইশতেহার নামক কাল্পনিক ইশতেহার প্রকাশ করলাম।
১. সংসদীয় গনতন্ত্রকে কার্যকর করার লক্ষে জাতীয় সংসদকেই সকল সমস্যা সমাধানের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। কোন অজুহাতে অহেতুক কথায় কথায় সংসদ অধিবেশন বর্জন করা যাবে না।
২. যদি কোন সংসদ সদস্য একনাগারে ৩০ দিনের বেশি সময় কর্মদিবসে সংসদ অধিবেশনে অনুপুস্থিত থাকেন তাহলে তার সংসদ সদস্য পদ বাজেয়াপ্ত করতে হবে।
৩. সংসদ অধিবেশন চলাকালীন সময় সকল সংসদ সদস্যদের শালীনতা বজায় রেখে আচরন করতে হবে। অহেতুক বেক্তিগত বিতর্কিত বিষয় নিয়ে আলোচনা করে সংসদীয় পরিবেশ নষ্ট করা যাবে না। কেউ যদি এনেহ কর্মকান্ডে অংশগ্রহন করেন তাহলে তাকে জবাবদিহিতার সম্মুক্ষীন হতে হবে।
৪. সংসদ অধিবেশন চলাকালীন সময় ওয়াক আউটের নিয়ম পরিবর্তন করতে হবে, যতেচ্ছ ও অনিদ্ধিস্ট সময়ের জন্য ওয়াক আউট করা যাবে না।
৫. হরতাল, অবরোধ ও অসহযোগের মতো সহিংস আন্দোলনের রাজনীতি আইন করে বন্ধ করতে হবে, এই বিষয়ে কোন প্রকার অজর আপত্তি গ্রহন যোগ্য হবে না।
৬. সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ শক্ত হাতে দমন করতে হবে।
৭. সকল যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে।
৮. বিচার বিভাগের প্রকৃত স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে হবে।
৯. বিচার বহির্ভূত সকল হত্যাকাণ্ড বন্ধ করতে হবে।
১০. জনগনের নিরাপত্তা বিধানে পুলিশ ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসমূহকে রাজনীতির প্রভাবমুক্ত করে গড়ে তুলতে হবে।
১১. দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
১২. কোন বেক্তি সর্বোচ্চ ২/৩ মেয়াদ প্রধানমন্ত্রী/রাষ্ট্রপতি থাকতে পারবেন।
১৩. কোন বেক্তি সর্বোচ্চ ৪/৫ মেয়াদ সংসদ সদস্য থাকতে পারবেন।
১৪. দলের ভিতরে গনতন্ত্রের চর্চা নিশ্চিত করতে হবে।
১৫. রাজনীতিতে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নিষিদ্ধ করতে হবে। ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
১৬. নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে হবে। নির্বাচন কমিশনকে রাজনৈতিক প্রভাব মুক্ত রাখতে হবে।
১৭. নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে কার্যকর সিদ্ধান্ত গ্রহন করতে হবে এবং তা সংসদেই করতে হবে। প্রতি ৫ বছর পর পর নির্বাচন নিয়ে অরাজগতা স্বৃষ্টি করা যাবে না।
১৮. শিল্প কারখানাকে সম্পূর্ণ রূপে রাজনীতির আওতার বাইরে রাখতে হবে।