রাত ভোর হলেই আরেকটি দুর্বিসহ অবরোধের যাত্রা শুরু হবে। এতো দিন ছিল নির্দিস্ট দিনের জন্য, আগামীকাল শুরু হচ্ছে অনির্দিস্ট কালের জন্য অবরোধ উৎসব। আমাদের দেশে নতুন বছরের প্রথম দিনটিকে শুভ সূচনার বারতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। একটি মিথ আছে যে বছরের প্রথম দিনটি ভালো কাটলে সারা বছর ভালো কাটবে। এই মিথ শুধু আমাদের দেশেই নয় সারা পৃথিবীতেই প্রচলিত। কিন্তু আজ আমরা এমন একটি সময়ে দাঁড়িয়ে নতুন বছরকে বরন করছি যখন নতুন বছরের প্রথম দিনটি হবে অবরোধময়। হয়তবা কয়েকটি লাশও পড়বে এই দিনে। গত দুই দিন ছিল সংবিধান রক্ষার অবরোধ, কাল থেকে শুরু হবে গনতন্ত্র রক্ষার অবরোধ। নেপোলিয়ন বোনাপোর্ট নাকি এই উপমহাদেশে এসে এই উপমহাদেশের মানুষের চারিত্রিক অবস্থা দেখে বলেছিলেন "আহ কি সেলুকাস, বিচিত্র এই দেশ"।
ভাগ্য ভালো তিনি এখন আমাদের দেশের আসেননি, আসলে হয়তোবা আমাদের অবস্থা দেখে বোবাই হয়ে যেতেন। কবি শামসুর রাহমান তার একটা কবিতায় বলেছিলেন "উদ্ভট উটের পিঠে চলেছে স্বদেশ", আজ যদি উনি বেচে থাকতেন তাহলে তার এই বিখ্যাত কবিতাটি তিনি নিজে থেকে তুলে নিতেন কারন এখন আর আমরা উদ্ভট উটও না!!!
সবাইকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা, আসুন সবাই মিলে দোয়া করি আল্লাহ যেন আমাদের দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের নেতাদের উপর রহমত বর্ষণ করেন, তাদের মধ্যে যেন শুভ বুদ্ধির উদয় হয়
পরিশেষে রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর দুইটি কবিতার কয়েকটি পংক্তি নতুন বছরের শুভেচ্ছা স্বরূপ...
আজো আমি বাতাসে লাশের গন্ধ পাই
আজো আমি মাটিতে মৃত্যূর নগ্ননৃত্য দেখি,
ধর্ষিতার কাতর চিৎকার শুনি আজো আমি তন্দ্রার ভেতরে…
এ দেশ কি ভুলে গেছে সেই দু:স্বপ্নের রাত, সেই রক্তাক্ত সময় ?
বাতাসে লাশের গন্ধ ভাসে
মাটিতে লেগে আছে রক্তের দাগ।
এই রক্তমাখা মটির ললাট ছুঁয়ে একদিন যারা বুক বেঁধেছিলো।
জীর্ণ জীবনের পুঁজে তারা খুঁজে নেয় নিষিদ্ধ আধাঁর,
আজ তারা আলোহীন খাঁচা ভালোবেসে জেগে থাকে রাত্রির গুহায়।
এ যেন নষ্ট জন্মের লজ্জায় আরষ্ট কুমারী জননী,
স্বাধীনতা – একি হবে নষ্ট জন্ম ?
একি তবে পিতাহীন জননীর লজ্জার ফসল ?
জাতির পতাকা খামচে ধরেছে আজ পুরোনো শকুন।
=======================
তাঁর চোখ বাঁধা হলো।
বুটের প্রথম লাথি রক্তাক্ত করলো তার মুখ।
থ্যাতলানো ঠোঁটজোড়া লালা-রক্তে একাকার হলো,
জিভ নাড়তেই দুটো ভাঙা দাঁত ঝরে পড়লো কংক্রিটে।
মা…..মাগো….. চেঁচিয়ে উঠলো সে।
পাঁচশো পঞ্চান্ন মার্কা আধ-খাওয়া একটা সিগারেট
প্রথমে স্পর্শ করলো তার বুক।
পোড়া মাংসের উৎকট গন্ধ ছড়িয়ে পড়লো ঘরের বাতাসে।
জ্বলন্ত সিগারেটের স্পর্শ
তার দেহে টসটসে আঙুরের মতো ফোস্কা তুলতে লাগলো।
দ্বিতীয় লাথিতে ধনুকের মতো বাঁকা হয়ে গেলো দেহ,
এবার সে চিৎকার করতে পারলো না।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ২:৫৬