আমার সহকর্মী জানালেন, একটু ভোলাগঞ্জ যেতে হবে, সেখাবে আমাদের একটি সাইট আছে সেই সাইটের জন্য কি রড কিনে দিতে হবে। যেহেতু আমি একজন এ্যাকাউন্ট অফিসার, ক্যাসের একটা বিষয়ে যে এখানে রয়েই গেল, রড যে কেহ কিনতে পারবে কিন্তু টাকার ঝুকিটা কে বহন করবে। তাই বাধ্য হয়ে যেতে হলো।
বাসা থেকে আম্বরখানা যেয়ে নাস্তা সেরে নিলাম, হায়রে কি খেলাম তাতেই ১০০ টাকা শেষ হয়ে গেল তার মধ্যে চা বাদ পড়ে গেল। একজন ইঞ্জিনিয়ার আমার সাথে চালছেন। তিনি বেশ মজার মানুষ যদিও আমি তার চাইতে বয়সে একটু বেশী, তবে তিনি বেশ হাস্য উজ্জল টাইপের মানুষ সদাই হাসেন, ভালই লাগলো, আমি তাকে বললাম যে চলুন ঐ সিএনজিতে দুইজন লোক লাগবে, আমরা ওখানে উঠে পরি, তিনি একটা হাসি দিয়া আমাকে বললেন। আংকেল সামনে গেলে মাথায় চোট পাবেন, পরে একটা বিপদেই পরবো। তার চাইতে কয়েক মিনিট পরেই যাই, তাই ভাল, বুঝতে পারলাম না।
একটা সিএনজিতে উঠে বেশ সময় বসে থাকতে হলো। চারজন হলো কিন্তু পাঁচ জন আর হলো না। শেষে রাগ করে বললাম, হে ভাই তুমি আমাদের কে নিয়াই চল, একজনের ভাড়া আমরাই দিয়া দিব। কারন উপায় নাই কেহই সমনে বসতে চায়না।
সিএনজি চলতে আরম্ভ করলো ১ ঘন্টা চলার পর বুঝতে পারলাম কেন লোক সমনে উঠতে চাচ্ছে না। কতবার যে সিএনজি থেকে পড়ে যাবার উপক্রম হয়েছিল তাহা বোঝাতে পারবো না। সিলেট থেকে ভোলাগঞ্জ পর্যন্ত যেথে যেতে কমপক্ষে ২০/৩০ টি পাথরের ট্রাক এবরো থেবোড় ভাবে পড়ে থাকতে দেখেছি।
মাটির রাস্তা অনেক ভাল, কিন্তু এটা হলো পাকা রাস্তা এর বেহাল অবস্থা হবার পিছনে কি করন তা তো বলাই হলো না। বাংলাদেশের যে সমস্ত বৃহৎ অট্টালিকা তৈরি হচ্ছে, তার পাথর গুলো এই ভোলাগঞ্জ থেকেই সাপলাই হয়। এক একটি ট্রাকে ৪০/৫০ টন পাথর বোঝাই করে ১০ চাকার গাড়িগুলো পাড়ি জমায় এই পথ দিয়া। আসলে এত ভাড়ী যানবাহন ভর সহন ক্ষমতা কি আমাদের রাস্তাগুলোর আছে? মোটেই নাই তবে, তাহলে জানুন, কি ভাবে কি হয়।
অর্থ মন্ত্রী মরহুম জনাব সাইফুর রহমান তৈরি করেছিলেন এই রাস্তাগুলোকে ঠিক এই ট্রাকের ভর বহন ক্ষমতা মাথায় রেখেই কিন্তু আমরা তাকে ঠিক সেই ভাবে রাখি নি , তাকে আমরা এতই অত্যাচার করেছি যে তার বুকে বিরাট বিরাট মরন ফাঁদ তৈরি হয়েছে। যদি এই ভাবে আর কিছু দিন চলতে থাকলে, এই বিশাল অর্থনৈতিক উৎসের পথ হয় তো বাংলার অভিষাপ হয়ে দাড়াবে। মনে হয় এটা দেখার আর কেউ অবশিষ্ট রইল না।
এর পার্শ্ব দিয়ে গড়ে উঠেছে, হাজারো পাথর ভাংগার করখানা সেখানে কাজ করছে, বাংলার হত দরিত্র হাজারো মানুষ যাদের মাথা গুজার কোন ঠাই নাই, জুটে না একবেলা খাবার, শিশু সন্তাকে পাথরের উপরে শুয়ে রেখে, তার মা মাথায় করে ৫০/৬০ কেজি পাথর নিয়ে ঢালছে মেশিনের মধ্যে সে কষ্ট্ নিজে চোখে দেখলে বোঝা যাবে না। যারাই পাথরের তৈরি ইমারতে মহাসুখে বসবাস করে তাদেকে যদি একবার একজুড়ি পাথর মাথায় তুলে দেয়া যেত তবে বোঝা যেত, এই পাথর বহন কতই না কষ্টের, আমার কাছে সে বেদনা আজও গুমড়ে উঠে, তপ্ত পাথরের উপরের সন্তানের কান্ন, আর মায়ের ঘামে ভিজা কপল, হায়রে বাংলাদেশ তুমি কি স্বাথীনতা দিয়েছ এই বাঙগালীকে, কতটুকু শান্তি দিতে পেরেছ এই দেশের মানুষকে, আজ এই হৃদয়ের মঝে রক্তক্ষরণ হছে, তোমার কথা ভেবে। আমার সেই মুক্তিযুদ্ধ, এই জীবন যুদ্ধের কাছে ম্লান হয়ে গেল। কিছুই বেদনার বোঝা হৃদয়ে নিয়ে পৌছলাম সেই সম্ভাবনা ময় এলাকা ভোলাগঞ্জ। কন্তিু কই সেই আমাদের সম্পদ সবই তো ভারত নিয়ে গেছে। ওটা তো ভারত।
জিজ্ঞাসা করলাম একজন বৃদ্ধাকে ভাই আমাদের সিমানা কতদুর সে দেখালো তাতে আমি বেশী খুশি হতে পারলাম না, যতদুর বুঝলাম সমস্ত পাহাড় গুলো ভারতের সিমান্তে, আমি দাড়িয়ে আছি একটি ব্রিজে, তার পাশ্বেই বিজিবি (বিডিআর) ক্যাম্প, তাতে বুঝতে আমার বাকি থাকলো না যে ঐযে সুন্দর সুন্দর পাহাড় দেখা যাচ্ছে ওগুলো আমাদের না। আমরা সুদুই দুর থেকে ওর সুন্দয্য দেখতেই পারবো তার কাছেও্র যাওয়ার ক্ষমতা নেই এই আমি বাঙগালীর।
এই পৃথিবী খুবই সুন্দর, এখানের মানুষ গুলো আরও বেশী সুন্দর, তবে এই সুন্দরকে সুন্দর বলাটাই আমাদের উচিৎ। কি ঠিক বলছিতো? আপনারা হয়তো অভাক হয়ে আমার এই লেখা পড়বেন। আর আমাকে অনেক মন্তব্য করবেন। এতে আমার কোন ক্ষতি বা কিছুই মনে করার নাই। আপনী যাই ভাবুন না কেন সেটা আপনার ব্যাপার তবে আমি পরিস্কার ভাষায় আপনাকে জানাতে চাই. আমি আপনার ভালটুকুই গ্রাহন করবো কিন্তু খারাপগুলো নয়।
কি কিছু বুঝতে পারছেন?
আপনার মনের গভিরে আমি বিচরন করবো এটাই স্বাভাবিক, কি তাই না?
আপনার ভালটুকু আমাকে জানাবে, এটাই সবাই চায় ।
কিন্তু কিছু লোক আছে তার ব্যতিক্রম তারা মনের অজান্তে তাদের খারাপ দিক গুলো আমাদের মাঝে তুলে, ধরে, আসলে সে তুলে ধরতে চায় না, কিন্তু তার অজান্তে সেটা বেড়িয়ে আসে্ আর এটাই মানুষের চারিত্রিক বৈশিষ্ট, কি তাই না?
অপনী যে, এই দেশটাকে ভালবাসে কি বাসেন না সেটা আমি অস্বীকার করছি না বা তা নিয়ে আমি তর্ক ও করছি না, তবে একবার আসুন না এই ভোলাগঞ্জে, কেমন আছেন সেই পাথর ভাঙগার মানুষগুলো যেই ৩/৪ পাথর দিয়ে এই এতবড় অট্টালিকা তৈরি করেছি। আপনার আরাম আয়েশের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
রড় কিনে দিয়ে সাইটে পৌছাইয়া দিয়া, দুপুরের খাবার খাইয়ে, আবার সেই একই কায়দায় সিএনজি চেপে ফিরছিলাম, আর ভাবছিলাম, হায়রে অভাগা বাংলাদেশ তোর বুকে কি একটু শান্তি খুজে পাবো না। মাঝে মাঝে সাইনবোর্ডে দেখা যাচ্ছে সাইফুর রহমানের নাম। একজন ড্রাইভার কে সাইফুর রহমান সম্পর্কে, বেশ ভালই মন্তব্য করলো, তারা তো গর্ব করে, সকল অর্থ মন্ত্রিই তাদের দেশের, সে কি গর্ব .........................
.............................চলবে।।।।।।।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




