মৃণাল বসুচৌধুরী ও আবু হাসান শাহরিয়ার। আবহমান বাঙলা কবিতার দুই সার্বভৌম অধ্যায়। একজন ভারতের পশ্চিমবঙ্গে থাকেন। অন্যজন বাংলাদেশে। একজন কবিতাকে বলেন মায়াপৃথিবীর স্বর। অন্যজন একার সন্ন্যাস। প্রথমজন কবিতা ছাড়াও শ্রুতি কাব্যান্দোলনের জন্য খ্যাতিমান। দ্বিতীয়জন গুণবিচারী সম্পাদক ও সত্যভাষী গদ্যকার হিসেবেও সুপরিচিত। একজনের বয়স পঁয়ষট্টি ছুঁইছুঁই। অন্যজন পা দিয়েছেন পঞ্চাশে। দুই কবির সাক্ষাৎ-পরিচয় ভ্রমণে। সোমেশ্বরী তীরবর্তী সুসঙ্গ দুর্গাপুরে তারা দুই দিন দুই রাত্রি একসঙ্গে ছিলেন। ঐ ভ্রমণই নৈঃশব্দ্যের ডাকঘর এর বীজতলা।
অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্তের কল্লোল যুগ বা প্রতিভা বসুর জীবনের জলছবির সঙ্গে স্বভাবগত মিল আছে এ বইয়ের। অমিলও কম নয়। নৈঃশব্দ্যের ডাকঘর এ কালাতিরিক্ত প্রসঙ্গাবলি তুলনামূলকভাবে বেশি। সাহিত্যের_ বিশেষত কবিতার_ গুণবিচারী পর্যবেক্ষণও আছে। বইটি সম্পর্কে মৃণাল বসুচৌধুরী তার আঁতুড়কথনে বলেছেন_ আমাদের এ যৌথরচনাকে ঠিক কোন অভিধায় ভূষিত করা হবে জানি না; তবে এ কথা নির্দ্বিধায় বলতে পারি, বাঙালির সভ্যতা ও সংস্কৃতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত যে সাহিত্য ও কবিতার ইতিহাস, যাকে অতিক্রম করে যে সৃষ্টি সমকালের বেড়াজাল থেকে মুক্তি চায়, সেই সৃষ্টি ও সৃষ্টিশীলতার দিকেই চোখ ছিল আমাদের। আমাদের ভাববিনিময়ের মুগ্ধ স্রোতস্বিনীতে ভাসতে-ভাসতে দশদিগন্ত খেকে কাছাকাছি এসেছে রঙিন উষ্ণীষ; কখনো বা খড়কুটো; সবকিছু নিয়েই আমাদের এ পত্রযান, নির্লিপ্ত ভ্রমণ। এবং আবু হাসান শাহরিয়ারের আঁতুড়কথনে আছে_ অভিজ্ঞতার আয়নায় কবি ও কবিতার মুখচ্ছবি ধরতে চেয়েছি আমরা। সাহিত্যের অন্যান্য শাখার অনেক মুনি ঋষির মুখও এসেছে। মুখের পাশে মুখোশও। বট ও বনসাই, শস্য ও কীট, গালিভার ও বামন, কবি ও ভাঁড়_ অনেক চরিত্রের সমাবেশ ঘটেছে বইটিতে। এ বিবেচনায় নৈঃশব্দ্যের ডাকঘর একটি প্রতিউপন্যাস। মাধ্যম চিঠি। আবার, যেহেতু কবিতা, ছোটগল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ_ কোনও বর্গেই পড়ে না, প্রচল ধারণায় এ বইয়ের সুরাহা নেই। নিছক পত্রসাহিত্যও একে বলা যাবে না। এই ব্যত্যয় নৈঃশব্দ্যের ডাকঘর এর চারিত্র্য। সস্তা বাজারসাহিত্য উজিয়ে একটি চিরকালের বই নৈঃশব্দ্যের ডাকঘর। চিরকালের পাঠকের জন্য।
প্রকাশক : ভাষাচিত্র
পাওয়া যাচ্ছে : ঢাকার আজিজ মার্কেটের বইপত্র, বিদিত, ভাষাচিত্র, বাংলার মুখ, বাংলাবাজার-এর সাহিত্য বিকাশ, চট্টগ্রামের বিশদবাঙলা, নন্দন, শৈলী প্রকাশন, ময়মনসিংহের আজাদ অঙ্গন-সহ দেশের অভিজাত বই এর দোকানে।
সস্তা বাজারসাহিত্য উজিয়ে একটি চিরকালের বই...
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
৫টি মন্তব্য ৪টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
দ্যা এডামেন্ট আনকম্প্রোমাইজিং লিডার : বেগম খালেদা জিয়া
১৯৪৫ সালে জন্ম নেয়া এই ভদ্রমহিলা অন্য দশজন নারীর মতই সংসার নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, বিয়ে করেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম সুশাসক শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কে! ১৯৭১সালে এ... ...বাকিটুকু পড়ুন
ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন্যায়ের বিচার হবে একদিন।

ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন
আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন
মিশন: কাঁসার থালা–বাটি
বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন
আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।