অপার সম্ভাবনাময় দেশের নাম বাংলাদেশ।সম্ভাবনা প্রস্ফুটিত হতে দেখিনি তেমন। যেকয়টা শিল্প নিজেদের প্রচেষ্টায় মাথাতুলে দাড়িঁয়েছে তাদের অন্যতম হলো পোট্রি শিল্প। বলা হয়ে থাকে এতে ২০,০০০ কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগ আছে। পোট্রি ব্যবসায়ের সাথে দেশের হাজার হাজার শিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত, অশিক্ষিত ব্যক্তি জড়িত। আমাদের দেশের মানুষ স্বভাব জনিত কারনেই স্বপ্ন দেখতে ভালবাসে। পোট্রি ব্যবসায়ের মাধ্যমে ভাগ্য উন্নয়নে ব্যস্ত মানুষের সংখ্যা কোন অংশে কম নয়। শুরুর দিকে এই ব্যবসাকে প্রথম পেশা হিসেবে বেছে নেয়ার লোকের সংখ্যা তেমন বেশি ছিল না, তখন তারা চাকুরি বা অন্য কোন ব্যবসা করাটাকেই বেশি পছন্দ করতেন। পাশাপাশি পোট্রির ব্যবসা করতেন কিছু মুনাফার আশায়। তবে একটি পর্যায়ে এই পোট্রি ব্যবসা হয়ে দাড়ায় অনেকের প্রধান উপজীবীকা। এর পেছনে কারনও ছিল, কম সময়ে বেশি মাংস এবং সবচেয়ে বেশি ডিম পাওয়া যায় অর্থাৎ ব্যবসায়িক চক্র ছোট হওয়াতে পুজিঁকে বারবার খাটানো যায়। মূলত আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট হেনরি ওয়ালেশের সময় পোল্ট্রি প্রজনন এর নতুন দিগন্তের সূচনা হয়। সময় ছিল ১৯৪০। তখন এক গবেষণায় দেখা যায় যে, দুটি ভিন্নরকমের বিশেষ ধরনের বৈশিষ্ট্যের অধিকারী মোরগ-মুরগীর প্রজননের ফলে যে নতুন জাতের জন্ম হয় তার উৎপাদন ক্ষমতা আগের প্রজন্মের চেয়ে অনেক বেশী। তারই ধারাবাহিকতায় পৃথিবীর বহুদেশ নিজেদের ভাগ্য ফিরিয়েছে। থাইল্যান্ড, চীন, ফ্রান্স সহ অনেক দূর চলে গেছে। এই শিল্পে যে বিলিয়ন, ট্রিলিয়ন টাকার ব্যবসা হতে পারে তার ধারনা খুব কম মানুষেই রাখে। বর্তমানে প্রায় ছোট বড় সব মিলিয়ে একলক্ষ পোট্রি ফার্ম আছে। যেখান থেকে দৈনিক ১২.৫ মিলিয়ন ডিম উৎপাদিত হচ্ছে। আর দৈনিক এক হাজার টন মাংস সরবরাহ করা হচ্ছে। বর্তমানে শহর এবং গ্রাম মিলিয়ে প্রতিদিন ডিমের চাহিদা প্রায় বার মিলিয়ন। আর মাংসের চাহিদা রয়েছে ৫১০ থেকে ৫২০ টন। যার মোট বর্তমান বাজার মূল্য দৈনিক প্রায় বিশ কোটি টাকার মত। এই চাহিদা এবং দাম দুটোই নির্ভর করে সময়ের চাহিদা ও যোগানের উপর। ফার্মগুলোকে উৎপাদনের জায়গার উপর ভিত্তি করে মোটামুটিভাবে পাচঁ ভাগে ভাগ করা যায়। ভূমিহীন, প্রান্তিক, ছোট, মাঝারি এবং বড় আকারের ফার্ম । সাধারণত .০১ একর থেকে .৫ একর পর্যন্ত জায়গার ফার্মকে প্রান্তিক আর ৫ একর এর উপরের ফার্মকে বড় আকারের ফার্ম ধরা হয়। আর ভোক্তা বরাবরই দুই ধরনের। গ্রামীণ আর শহর ভিত্তিক। এদের বাইরেও রয়ে যায় নানা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, যারা পোট্রি শিল্পের উৎপাদনকে তাদের কাচাঁমাল হিসেবে ব্যবহার করে। বিভিন্ন বেকারি, কনফেকশনারিগুলোতে ডিমের ব্যবহার এককথায় ভয়াবহ। ভয়াবহ বলার কারণ হচ্ছে ডিমের ব্যবহার ছাড়া এগুলো একেবারেই অচল। হোটেল, রেস্টুরেন্ট বা ফাস্ট ফুডগুলোতে ডিম মাংস দুটোই সমান তালে চলে। ফাস্টফুডের বেশ কিছু উrপাদিত উপকরণ ফার্মের মুরগী ছাড়া কখনই সম্ভব না। পোট্রি শিল্প আমাদের দেশের জন্য অনেক বড় এক সম্ভাবনাময় শিল্প, এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই।
আজ আমাদের দেশের এত বড় একটি শিল্প প্রায় ধ্বংসের মুখে পতিত হচ্ছে শুধু মাত্র যত্ন আর কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের অভাবে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পিছনে যে সব প্রতিশ্রুতি কাজ করেছে অর্থাr "দিন বদলের অঙ্গীকার নামার" মধ্যে অন্যতম ছিল দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রনের প্রতিশ্রুতি। এই দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রনে সরকারের বিভিন্ন ইতিবাচক পদক্ষেপ থাকলেও তা এখন পর্যন্ত সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আসেনি। এর মানে নিশ্চই এই না যে নিজের দেশের ক্ষতি করে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রন করতে হবে। বেশকিছুদিন আগে সরকার বেসরকারিভাবে ভারত থেকে ডিম আমদানি করার ব্যপারে যে সিদ্ধান্ত নেয় তা কোন অবস্থাতে সুখকর নয়। ভারত বরাবরই অর্থনৈতিক পরাশক্তি। ডাম্পিং করে বিদেশের বাজার দখলে ভারত অতুলনীয়। আজ হয়ত কম দামে দিবে, কিন্তু কাল ঠিকই ওদের অনেক বেশি দাম দিতে হবে। কিছুদিন আগে বাংলাদেশ পোট্রি খামার রক্ষা জাতীয় সংগ্রাম পরিষদ সরকারের সাথে দেখা করে ভারত থেকে ডিম আমদানি না করে পোট্রি ফিডের দাম কমানোর অনুরোধ করেন। বর্তমানে খামারিদের ক্ষেত্র বিশেষে ৪৫ টাকা করে ব্রয়লার আর ৫৫ টাকা করে লেয়ারের একদিনের বাচ্চা কিনতে হচ্ছে। যেখানে এর দাম কিছু দিন আগেও ছিল যথাক্রমে ২৫টাকা আর ৩৫ টাকা। এই ক্ষেত্রে হ্যাচারি মালিকদের একতরফা দুষলেও আসলে মধ্যস্বত্বভোগীরা এখানে দাম বাড়ার প্রতিযোগিতায় বেশি লিপ্ত বলেই মনে হয়। হ্যাচারি মালিকেরা গত বার্ডফ্লু দুরারোগ্য কারণে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে চাইলেও কি তা সম্ভব? মানুষ প্রয়োজনে ডিম, মাংস খাওয়া ছেড়ে দেয় কিন্তু কোন মুরগীকে কি আপনি ডিম না দিতে বলতে পারেন বা মাংস না বাড়াতে? তাছাড়া ব্রয়লার আর লেয়ারের খাদ্যের দামও উপরের দিকে। টিসিবির (ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ) মতে বর্তমানে বাজারে ডিমের ডজন প্রতি ৮৪ টাকা থেকে ৯০ টাকা। হয়ত ভারতীয় ডিম বাজারে আসলে এই ডিমের দাম নেমে আসবে ডজন প্রতি ৬৫ থেকে ৭০টাকায়! ভোক্তার পেট ঠিকই ভরবে কিন্তু আসলে কি তাই হবে, আমাদের দেশীয় উৎপাদকেরা যে মাঠে মারা যাবে? রোযাতে বেকারীগুলোতে ডিমের চাহিদা কম থাকায় হয়ত যে দাম দেখা যাচ্ছে, রমযান মাস শেষ হলে ডিমের চাহিদা অনেক অংশে বৃদ্ধি পাবে, আর অর্থনীতির নিয়মে চাহিদার সাথে সাথে দামও বাড়বে। হয়ত তখনেই ভারতীয় ডিমে বাজার সয়লাব হবে, ডিমের দামের উর্দ্ধগতির লাগাম ধরার জন্য। আসলেকি আমার এই ধারনাটা ঠিক? আমি চাইনা আমার এই ধারণা কখনই ঠিক হোক! বাংলাদেশে বহু পণ্যের দাম বেড়েছে যেমন ৫ টাকার নুডুলস ১৪ টাকা, ৩৮ টাকার সোয়াবিন ১২০ টাকা, ৩০ টাকার ডাল ৯০ টাকা, ২০ টাকার টমেটো ৭০ টাকা। তাহলে ২.৫০ টাকার ডিম ৬.৫০ বা ৭.০০ টাকা মানবেন না কেন? এটা একান্ত নিজেদের বলে! আমদানি হলে অজুহাত দেয়া যেত তাই না? আমারা যারা পোট্রির সাথে সরাসরি জড়িত নই হয়তো অনেকেই জানিনা, কিভাবে এই ডিম বাজারে আসে। প্রতিটি লেয়ারের একটি চক্র থাকে। এই চক্র গড়ে ২০০ থেকে ২১০ দিনের। এর মধ্যে প্রতি লেয়ার ১৮০টির মত ডিম দেয়। বর্তমান বাজারের প্রেক্ষিতে, এই ২০০ দিনে যে পরিমাণ শ্রম দিতে হয় তা ঐ ১৮০ডিমে উঠে আসার কথা না। ১৫ টাকার ফিড ২৯ টাকা, ১০০ টাকার মেডিসিন ২৭০ টাকা, ২০০০ টাকার কর্মচারী ৪৫০০ টাকা, ৯% সুদ ১৮% , তাহলে কি ভাবে দাম কমানো যায় পাঠক আপনারাই ভেবে বলুন। পোট্রির জন্য আমরা যেসব লোনের কথা বলি, আসলে বাস্তবে ওগুলোর তেমন কোন অস্তিত্ব নেই। পোট্রির জন্য কেউ লোন নিয়ে গাড়ি বাড়ি কিনলে বা বিয়ের খরচ চালালে কিইবা করার আছে! বাংলাদেশে কয়টি ব্যাংক আছে যারা পোট্রির নামে লোন দিয়ে থাকে! এই ক্ষেত্রে হাতের দশ আঙ্গুল গুনতে কষ্ট হবে! মাঝে মাঝে মনে সন্দেহ জাগে, পোট্রির মত বিশাল সম্ভাবনাময় এই শিল্পকে দমিয়ে রাখার জন্য এই শিল্প পরিচালনা করার উপাদান গুলোকে কেউ নিয়ন্ত্রণ করছে নাতো? তা না হলে পোট্রির ভেকসিন বা মেডিসেনের দাম কেন ৪০০ থেকে ৫০০ ভাগ বারবে, অথবা পোট্রি খাদ্যের দাম কেন কোন কারণ ছাড়াই সবসময় উর্দ্ধগতির দিকে? এইসব ব্যপারগুলোকে অস্থিতিশীল রাখলে কারা লাভবান হবে? পোট্রির খাদ্যের প্রধান উপাদান গম আর ভুট্টার দাম অর্ধেকে নেমে আসার পরেও কেন পোট্রি ফিডের মূল্য আগের মতই থাকল? নানা প্রশ্ন মনে উঁকি ঝুঁকি দেয়। পুঁজিবাদ এমন এক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা যা মুনাফার প্রয়োজনে দুর্দশা তৈরীতে দ্বিধা করে না আবার সেই দুর্দশাকে পুঁজি করে মুনাফা অর্জনের সামান্যতম সুযোগটিকেও হাতছাড়া করে না। বার্ড ফ্লুর ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। বার্ড ফ্লু পোল্ট্রির রোগ হলেও পোল্ট্রির সংস্পর্শে আসা মানুষের মাঝেও তা ছড়াতে থাকে। শুধু তাই নয়, ঐ এইচ৫এন১ ধরনের ফ্লু দ্রুত মিউটেশানের মাধ্যমে শুধু মুরগী থেকে মানুষে নয়, মানুষ থেকে মানুষে ছড়িয়ে পড়তে সক্ষম এমন জীবাণুতে পরিণত হবে এমন আশংকাও বাড়ছে। ২০০৫ সালের মাঝে প্রায় ২০০ মানুষের মাঝে বার্ড ফ্লুর লক্ষণ দেখা যাওয়ায় ডাব্লিউএইচও(ওয়ার্ড হেল্থ ওরগানাইজেশন) যখন উক্ত আশংকাটি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করে, তখনই শুরু হয় আরেক খেলা। সুইডিশ ঔষধ কোম্পানী "রোচ" বাজারে নিয়ে আসে তামিনফ্লু ট্যাবলেট যার পেটেন্ট মালিক হলো আমেরিকা ভিত্তিক ঔষধ কোম্পানী "জিলেড সাইন্স", "রোচ" এর কাছ থেকে উৎপাদন এবং বিতরণের লাইসেন্স প্রাপ্ত একমাত্র কোম্পানী। ডাব্লিউএইচও এর ঘোষণার পর তামিনফ্লু এর বিক্রি ৪০০% বেড়ে যায়, জিলেড এর প্যাটেন্ট আয় বাড়ে ১৬৬%। আমেরিকা সরকারীভাবে ১.৪ বিলিয়ন ডলার মূল্যের তামিনফ্লু এর অর্ডার দেয় যা শুধু "রোচ" বা "জিলেড" এর জন্য দারুণ উপহার নয়, সেই সাথে আমেরিকার তৎকালীন পররাষ্ট্র সচিব ডোনাল্ড রামস্ ফেল্ডের জন্যও দারুণ সুখবর বয়ে আনে যেহেতু রামস্ ফেল্ড "জিলেড" এর অন্যতম শেয়ার হোল্ডার। এই অংশটুকু ব্লগ থেকে নেয়া। এতে বুঝা যায় কি ধরনের অপব্যবসার হাত পরেছে এই শিল্পের উপর।
বার্ড ফ্লুর কথা আমরা সবাই কম বেশি জানি, যেটা ছিল বাংলাদেশের পোট্রি শিল্পের জন্য সবচেয়ে বড় ধাক্কা। বিশ্ব ব্যাংক এর এক প্রকাশনার মতে, বাংলাদেশে প্রথম এই ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রাদুর্ভাব ঘটে ২০০৭ সালের মার্চ মাসে এবং তা বিদ্যমান ছিল ঐবছরের জুলাই পর্যন্ত। তা আবার সেপ্টেম্বর ২০০৭ থেকে মে ২০০৮ পর্যন্ত চলতে থাকে।তৃতীয় দফা এর তান্ডব চলে ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। ২০০৭-০৮ এ এই এভিয়ান ফ্লু এর কারনে বাংলাদেশের পোট্রি শিল্পের প্রায় ১৫০ বিলিয়ন টাকার সমান ক্ষতি হয়। তখন প্রায় ১,৫৩৬,৫৪২টি হাঁস-মুরগী নিধন করা হয়েছিল। এই ভাইরাসের কারণে খামারীদের হাজার হাজার ডিম নষ্ট করে ফেলতে হয়েছিল। ক্ষুদ্র খামারীরাই এর ফলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যারা এমনিতেই বিভিন্ন এনজিওর দেয়া ক্ষুদ্র ঋণের দায়ে জর্জরিত। সরকারী ভাবে যে ক্ষতিপূরণ ছিল তা অল্প কয়েকটি খামার পেয়েছে তাও তা অপর্যাপ্ত ছিল, সরকারী সাহায্য সহায়তা আসলে কোন আমলেই পর্যাপ্ত না। যেমন লেয়ার প্রতি ক্ষতিপূরণ হিসাবে দেয়া হয়েছিল ৭০ টাকা করে অথচ খামারীর লেয়ার প্রতি খরচ হয়েছে ২৬৫ টাকার মত। এই সময়ে কমবেশি সব পোট্রি হ্যাচারীর flock গুলোকে পুনর্গঠিত করতে হয়েছে। ব্রয়লার বা লেয়ারের parent, Grand parent, pure line আরও কত কি আছে, এদের control house এ পালতে হয়। তাদের parents গুলোকে মাংসের দামে বিক্রি করে দিতে হয়েছে, যা বিশাল ক্ষতির সন্মুখীন করে। এর মধ্যে ব্যাংক তার টাকার জন্য তাড়া করতে থাকে। কিন্তু এসবের কিছুই মানুষ জানে না। পোট্রির যেসব মেডিসিন বাজারে পাওয়া যায়, তার অনেকগুলোর দাম শতকরা ৪০০ থেকে ৫০০ ভাগ দাম বেশি হয়ে যায়। এই ফ্লুয়ের কারনে। অথচ আমাদের দেশে এইসব মেডিসিন গুলোর মান যাচাই করার জন্য কোন মানসম্যত ল্যাব নেই। সব মিলিয়ে এই শিল্পের সবাই ক্ষত বিক্ষত হয়ে যায়। এই অপূরনীয় ক্ষতির আঘাত সারার আগেই ভারত থেকে ডিম আমদানির সিদ্ধান্ত পোট্রি মালিকদের কাছে গোদের উপর বিষ ফোড়াঁর মত। কিছুদিন আগে সাভারের একটি পোট্রি ফার্মে বার্ড ফ্লুতে আক্রান্ত ২৩০০ মুরগী চিহ্নিত করা হয়। গত ২১ জুলাই ২০০৯, চট্টগ্রামের একটি ফার্মের ৯৬৯ টির মধ্যে ৫০ টি মুরগী মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কর্তৃপক্ষ এর নমুনা ওআইই(ওয়ার্ল্ড ওরগান্যাইজেশন ফর এনিমেল) এ পাঠায়। ওআইইয়ের রির্পোটে এই মৃত্যুর কারণ হিসেবে বলা হয় এইচপিএআই যা এইচ৫এন১ এর সাব-টাইপ। পরবর্তীতে বাকী গুলোকেও নিধন করা হয়। অদূর ভবিষৎএ হয়ত এই এইচ৫এন১ ভাইরাসকে আরও ভায়্ঙ্কর রূপে দেখা যাবে।
আমাদের দেশের চাকুরির বাজারের অবস্থা তেমন একটা ভাল না, আর সবাই একদিকে ঝুঁকে যাওয়াতে বেশ কঠিন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় পেশার ধরন পরিবর্তন খুব জরুরি। হয়ত তাই অনেক শিক্ষিত মেধাবীরা এই পোট্রির সাথে নিজেদের জড়াচ্ছে, মেধাবীরা যখন কোন কাজে হাত লাগান তখন ঐ কাজ থেকে ভাল কিছু সবসময়ই প্রতাশিত। আর এই সাফল্য সম্ভব যখন এতে উrসাহব্যঞ্জক কিছু থাকে। ভারত থেকে ডিম আমদানি করলে ডিমের খুচরা মূল্য হয়ত কিছুটা কমবে। কিন্তু চূড়ান্ত ফলাফল কি আশানুরূপ হবে? আর দাম কমলেও এই দাম কত দিনইবা আর কম থাকবে? একটা পর্যায়ে ঠিকই বর্তমান মূল্যে ফিরে আসবে, ততদিনে হয়ত আমাদের দেশের পোট্রি শিল্প মৃত্যুর দোরগোড়ায় চলে যাবে। দেশের এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে দেশীয় শিল্পকে রক্ষা করা সরকারের জন্য এক কথায় ফরজ। ভারত দেশের পোট্রি বাজারে ডুকতে পারলে হয়ত মুচকি হাসি হাসবে, আর এই "হাসি" আমাদের পোট্রি শিল্পের জন্য কান্নার কারণ হয়ে দাড়াবে। বাংলাদেশের সরকার মানে বাংলাদেশের জনগনের সরকার, যাদের অবশ্যই জনগনের মঙ্গলের কথা চিন্তা করা উচিত। পোট্রি মালিকদেরকে যেন আর রাস্তায় নেমে রাস্তা অবরোধের মত কাজ আর না করতে হয়, পোট্রিতে প্রতি ডিম উৎপাদন খরচ পরে ৫.৫টাকার মত, সরকারের এখন ভাবা উচিত কিভাবে এই উৎপাদন খরচ কমানো যায়। দেশের বৃহত্তর স্বার্থে আশাকরি কোন রকম আত্নঘাতী সিদ্ধান্ত না নিয়ে, সরকার তার সিদ্ধান্তের পরিবর্তন করবেন। বাংলাদেশের একমাত্র নিজস্ব পণ্য বলতে কিছুই নেই। আর যা অল্প কিছু আছে সেগুলোও কি ধ্বংস করে ফেলতে হবে? ভবিষ্যৎটা যেন এমন না হয়, যে সময়ে BMW এর মত ডিম, মাংস, দুধ সবই আসবে ভারত বা অন্যকোন দেশ থেকে! একটু সুনজর দিলে আমরা এই শিল্পে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারি। প্রয়োজন শুধু নীতিমালা আর তার প্রয়োগের।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



