দুঃস্বপ্নের চোখে চোখ রেখে শুধোই, ভালবাসা কি ভুল ছিল ?
হা হা করে হেসে উঠে বলে, ছিল, ছিল । ভুল অঙ্কই করিস কেবল ! বুঝিস নাতো কিছু । মাথা নেড়ে স্বগতোক্তি করে , এ খুকিটা কিচ্ছু বোঝে না মা, এ যে ভারী ছেলে মানুষ ! হা হা হা ...।
সে হাসিতে নীল বিস্ময়ে বোধ পাথর হয় কেবল । বুকের ভেতরের লোনা জলে থর থর কাঁপন ওঠে । ওরা ঢেউ হতে চায় । আমি বলি, আহা, রোস না বাপু । অত ব্যস্ত হলে কি চলে ? কোন একদিন এক সমুদ্দুর হাওয়া এনে দেব, সেইদিন প্লাবন হয়ে আছড়ে পড়িস দুচোখ বেয়ে; কেবল আজ নয় ।
মনকে খুশি করতে তাই প্রাণপণে মনের ভেতর হাতড়ে চলি । খুঁজে ফিরি লুকোনো সেই স্বপ্নটাকে । না পেয়ে তাকিয়ে দেখি অজান্তে সেটা হাত গলে পড়ে গেছে কখন । পায়ের কাছটায় লুটিয়ে আছে, ভেঙ্গে খান খান । সাদা কালো বালিতে মিশেছে ভাঙ্গা স্বপ্নের রঙিন মিহি গুঁড়ো । আলো পড়ে থেকে থেকেই ঝিকিয়ে উঠে জানান দিয়ে যাচ্ছে । আহ্, সে আলো যে বড্ড চোখে লাগে । সূর্য টাকে আজ নেবাও না একটুখানি ।
ধু ধু প্রান্তরের বুক চিরে চলা সেই মেঠো পথ বেয়ে আবার পথ হাঁটি আমি । সার দেয়া বাবলা গাছের ছায়ায় হাঁটু মুড়ে বসে যাই ধুলো মেখে । আকন্দ ফুলের ওপর প্রজাপতির তির তিরে ডানা, কাঠ বেড়ালের ছোটাছুটি কিংবা হুটটিটির প্রলম্বিত টিই ই টিই ই কেবল আমাদের সমান্তরালে ওদের আশ্চর্য জীবনের কথা গুন গুন করে বলতে থাকে । আনমনে শুধোই, তোদের জীবনেও কেউ কি সুখ হারায় ?
ওখানে খয়েরি বিকেল শেষে ঘুঘুর নরম পালকের মত ছায়া ঘনায় চুপে । আঁধার বেয়ে মুছে যায় পথের রেখা । মুঠো ভরে ফুঁ দিয়ে ওড়াই জোনাকি । প্রান্তর ভরে যায় নীলচে আলোর কণায় । জোনাক মন কেবল নীল হয় শুধু, পথ পায়না খুঁজে । তরাসে কেঁপে উঠতেই দুঃস্বপ্ন এসে অভয় দেয় । বলে, ভয় কি ? এই তো আমি আছি । এস, আমার হাত ধর ।
আমি অবলীলায় দুঃস্বপ্নের হাত ধরি । তার বাড়ান ছড়ান কর ছুঁয়ে প্রহর গুনি । সেই ধুলো পথে আবার পথ হাঁটি আমি । সাথে থাকে অতলান্তিক সেই শূন্যতা ।